জাতীয়করণের দিন থেকে সুবিধা পাবেন স্কুল-কলেজ শিক্ষক-কর্মচারীরা
সাম্প্রতিক সময়ে সরকারি হওয়া দেশের বেসরকারি স্কুল ও কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি সরকারি হতে দেরি হলেও যেদিন থেকে প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের গেজেট হয়েছে সেদিন থেকেই তাঁরা সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাবেন। এমনকি ওই গেজেট জারির সময়ে যেসব শিক্ষক-কর্মচারীর বয়স ৫৯ বছরের মধ্যে ছিল (অবসরের বয়স) তাঁরা পরে অবসরে গেলেও এই সুবিধা পাবেন।
সরকারের নতুন এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
আজ বুধবার শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সঙ্গে সাংবাদিকদের ভার্চুয়াল মতবিনিময় সভায় সচিব বলেন, এ বিষয়ে ইতিমধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। তারাও এ বিষয়ে একমত। এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আরেকটি প্রস্তাবও দু-এক দিনের মধ্যে পাঠানো হবে। এর কয়েক দিন আগে তিনি প্রথম আলোকে বলেছিলেন, প্রক্রিয়ার দেরির কারণে শিক্ষক-কর্মচারীরা বঞ্চিত হতে পারেন না।
বিদ্যমান নিয়ম হলো, শিক্ষক-কর্মচারীরা যখন সরকারি হবেন (আত্তীকরণ), তখন থেকে সরকারি সুবিধা কার্যকর হবে। কিন্তু চাকরি সরকারি হতে দেরি হওয়ায় শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) সূত্রমতে, দেশের যেসব উপজেলায় কোনো সরকারি কলেজ ছিল না, সেগুলোতে একটি করে বেসরকারি কলেজকে জাতীয়করণ বা সরকারি করা হয়েছে। বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে ২০১৮ সালের ১২ আগস্ট দেশের ২৭১টি বেসরকারি কলেজকে সরকারি করে প্রজ্ঞাপন জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর আগে-পরে আরও ৩২টি কলেজ জাতীয়করণ হয়। মোট ৩০৩টি কলেজ জাতীয়করণ করা হয়। অনুরূপভাবে তিন শতাধিক বেসরকারি স্কুলকে জাতীয়করণ করা হয়েছে।
কিন্তু শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি জাতীয়করণ হতে দেরি দেরি হচ্ছে। এর মধ্যে জাতীয়করণের দুই বছর পেরিয়ে গেলেও কলেজগুলোর শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি সরকারি করতে পারেনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কারণ যাচাই-বাছাইয়ের কাজ দেরি হচ্ছে। এ কারণে অনেক শিক্ষককে অবসরে যেতে হচ্ছে সরকারি সুবিধা ছাড়াই।
সরকারি হওয়া কলেজগুলোর শিক্ষকদের সংগঠন সরকারি কলেজশিক্ষক সমিতির তথ্য অনুযায়ী, এই কলেজগুলো সরকারি হওয়ার পর গত দুই বছরে ১ হাজার ২৬৭ জন শিক্ষক-কর্মচারী অবসরে গেছেন। এ ছাড়া আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত আরও ৬৭ জন শিক্ষক ও ৩৮ জন কর্মচারী অবসরে যাবেন। এমন অবস্থায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন এই সিদ্ধান্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য বাড়তি সুবিধা দেবে।
আবার শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি সরকারি না হওয়ায় কলেজ সরকারি হলেও শিক্ষার্থীরা উপকার পাচ্ছে না। আগের মতোই টিউশন ফি দিতে হচ্ছে।