অবশেষে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেলেন বিউটি বেগম
দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে গাইবান্ধা সদর উপজেলার বিউটি বেগমকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। গত ১০ ডিসেম্বর তাঁকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন (বিউটি বেগমের নিয়োগ তথ্য) বিষয়ে আজ সোমবার সর্বোচ্চ আদালতে হাজির হয়ে ওই তথ্য জানান প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক মো. আবু হেনা মোস্তফা কামালসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা। শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ভার্চ্যুয়াল আপিল বিভাগ আদালত অবমাননার আবেদন নিষ্পত্তি করে আদেশ দেন।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার বিউটি বেগম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিয়োগ পরীক্ষায় ২০০৮ সালে প্রথম হন। তবে তিনি নিয়োগবঞ্চিত হন। দ্বিতীয় স্থান অধিকারী নাজমা সুলতানাকে নিয়োগ দেওয়া হয়। নিয়োগবঞ্চিত বিউটি বেগম এ নিয়ে গাইবান্ধার সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন। আদালত বিউটি বেগমকে নিয়োগ দিতে নির্দেশ দেন। এর বিরুদ্ধে জজ আদালতে গিয়ে বিফল হন নাজমা সুলতানা।
এরপর তিনি হাইকোর্টে আবেদন করেন। উচ্চ আদালত নাজমাকে শূন্যপদে নিয়োগ দিতে নির্দেশ দেন। এর বিরুদ্ধে আপিল করেন বিউটি বেগম। শুনানি শেষে আপিল বিভাগ ২০১৭ সালের ৩ আগস্ট জ্যেষ্ঠতা দিয়ে ১৫ দিনের মধ্যে বিউটি বেগমকে নিয়োগ দিতে নির্দেশ দেন। এই রায় বাস্তবায়ন না হওয়ায় আদালত অবমাননার আবেদন করেন বিউটি।
বিউটি বেগমের নিয়োগ বিষয়ে আদালতের রায় বাস্তবায়ন না হওয়ার প্রেক্ষাপটে ৭ ডিসেম্বর আপিল বিভাগ ব্যাখ্যা জানাতে সাবেক মহাপরিচালক মো. আবু হেনা মোস্তফা কামালসহ ৫ কর্মকর্তাকে ১৪ ডিসেম্বর আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন। এ অনুসারে আজ ৫ কর্মকর্তা আদালতে হাজির হন। অপর ৪ কর্মকর্তা হলেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. রমজান আলী, গাইবান্ধা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম, গাইবান্ধা সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবদুস সালাম ও সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুমুল ইসলাম। এ ছাড়া প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব গোলাম মো. হাসিবুল আলম আদালত উপস্থিত ছিলেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। বিউটি বেগমের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ বি এম আলতাফ হোসেন। সাবেক মহাপরিচালকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী শেখ শফিক মাহমুদ।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার বিউটি বেগম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিয়োগ পরীক্ষায় ২০০৮ সালে প্রথম হন। তবে তিনি নিয়োগবঞ্চিত হন।
প্রায় এক যুগ ধরে আইনি লড়াইয়ের পর বিউটি নিয়োগ পেয়েছেন বলে জানান তাঁর আইনজীবী আলতাফ হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ২০১৭ সালের ৩ আগস্ট আপিল বিভাগ বিউটি বেগমকে জ্যেষ্ঠতা দিয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে গাইবান্ধার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। এ সত্ত্বেও নিয়োগ না পাওয়ায় বিউটি আদালত অবমাননার আবেদন করেন। আদালতের আদেশ বাস্তবায়নে বিলম্ব হওয়ায় ৫ কর্মকর্তা নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন। ২০১৭ সালের ৩ আগস্ট থেকে বিউটি বেগমের নিয়োগ কার্যকর হবে উল্লেখ করে আপিল বিভাগ অবমাননার আবেদনটি নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন।