সেন্ট গ্রেগরী হাই স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা আবার শুরু শনিবার, একাদশ-দ্বাদশ বন্ধই থাকছে
অতর্কিত হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় বন্ধ থাকা রাজধানীর পুরান ঢাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সেন্ট গ্রেগরী হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজে পরীক্ষা আগামী শনিবার শুরু। ওই দিন থেকে স্কুলের প্রভাতি ও দিবা শাখার পরীক্ষা সংশোধিত রুটিন অনুযায়ী চলবে, তবে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির সব শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধই থাকছে।
আজ বৃহস্পতিবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ব্রাদার প্লাসিড পিটার রিবেরুর সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। তবে স্থগিত থাকা প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে ভর্তির লটারি কবে হবে, তা বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়নি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে শনিবার থেকে সংশোধিত রুটিন অনুসারে প্রভাতি ও দিবা শাখার (মর্নিং ও ডে শিফট) বার্ষিক পরীক্ষা আবার শুরু হবে। কলেজ শাখায় একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির সব কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।
নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিশেষ নির্দেশনা
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে ২৪ নভেম্বর হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ জন্য বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অভিভাবকদের উদ্দেশে বলা হয়েছে, ‘সব মা–বাবা ও অভিভাবককে অনুরোধ করা হচ্ছে, আপনার সন্তানের নিরাপত্তার স্বার্থে দায়িত্ব নিয়ে তাকে বিদ্যালয়ে পৌঁছে দেবেন এবং পরীক্ষা শেষে সঙ্গে করে বাসায় নিয়ে যাবেন।’
অনাকাঙ্ক্ষিত উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সর্বস্তরের সবাইকে সার্বিক সহযোগিতা ও পাশে থাকার জন্য পবিত্র হলি ক্রস সংঘ ও সেন্ট গ্রেগরী পরিবারের পক্ষ থেকে সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন অধ্যক্ষ।
এর আগে গত রোববার বিকেলে পুরান ঢাকার একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হামলার প্রতিবাদে সেন্ট গ্রেগরী হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজে অতর্কিত হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়। এ ঘটনার পরই স্কুলটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি সেন্ট গ্রেগরী হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজে ২০২৫ সালের প্রথম শ্রেণিতে (বাংলা ভার্সন) ও নার্সারি (ইংরেজি ভার্সন) ভর্তির জন্য নির্ধারিত লটারি ও ভর্তির তারিখ বিশেষ কারণবশত পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত করা হয়।
সেন্ট গ্রেগরী হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষকেরা ওই দিন জানিয়েছেন, কলেজের শ্রেণিকক্ষ ও শিক্ষকদের কক্ষ ভাঙচুর করা হয়েছে। ক্যানটিনেও হামলা হয়েছে।
এর আগে একই ঘটনায় রাজধানীর কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
ভুল চিকিৎসায় অভিজিৎ হাওলাদার নামের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর অভিযোগের জেরে গত রোববার পুরান ঢাকার ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালান ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীরা। এরপর গতকাল সোমবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে হামলা ও ভাঙচুর চালানোর ঘটনা ঘটে। এ সময় কলেজটির বিভিন্ন সামগ্রী ও সরঞ্জাম নিয়ে যান হামলাকারী শিক্ষার্থীরা। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের শত শত শিক্ষার্থী গিয়ে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে হামলা চালান। এ সময় ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় জনতা এবং সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ চলেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগের দিনের হামলার জেরে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে হামলা চালানো হয়।