২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

৭ বিশ্ববিদ্যালয়, ৩ মেডিকেলে নিষিদ্ধ হলো ছাত্ররাজনীতি

ছবি: প্রথম আলো

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে দেশের ৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও ৩টি মেডিকেল কলেজে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে সরকার পতনের পর গত ছয় দিনে এসব প্রতিষ্ঠানে ছাত্ররাজনীতির পাশাপাশি শিক্ষক এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজনীতিও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে সেগুলো হলো কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট), দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট), ঢাকার বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় (বুটেক্স) এবং নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি)। রাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়া তিন মেডিকেল কলেজ হলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ।

তবে দেশের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়গুলো (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়) এখনো ছাত্ররাজনীতির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ২০১৯ সাল থেকেই ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ রয়েছে।

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম গতকাল সোমবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, এ বিষয়ে এখনই কিছু বলতে চাইছেন না। সমন্বয়কেরা বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য জানাবেন।

আরও পড়ুন

৭ বিশ্ববিদ্যালয়

৮ আগস্ট বিকেলে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০তম সিন্ডিকেট সভায় সব ধরনের ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য জানান, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা হলো। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের ৪৩-এর ‘ঘ’ ধারা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য হতে পারবেন না। শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিষয়ে যেহেতু আগেই বলা হয়েছে, সেহেতু এ বিষয়ে সিন্ডিকেট সিদ্ধান্ত দেবে না।

৯ আগস্ট জরুরি সিন্ডিকেট সভায় ক্যাম্পাসে সব ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ করে বুটেক্স কর্তৃপক্ষ। পরে কর্তৃপক্ষের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের রাজনৈতিক সংগঠন এবং এর কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ততা নিষিদ্ধ করা হলো। এ আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধান অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া হবে।

একই দিন রিজেন্ট বোর্ডের জরুরি সভায় ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধ করে নোবিপ্রবি কর্তৃপক্ষ। রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েট) শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের দলীয় রাজনীতি রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় ১০ আগস্ট।

আরও পড়ুন

১১ আগস্ট হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। সেদিন বেলা দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রারের দপ্তর থেকে পাঠানো এক দাপ্তরিক আদেশে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো। একই সঙ্গে এ আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিধান অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়ার কথাও বলা হয়।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের রাজনীতি সাময়িকভাবে নিষিদ্ধের ঘোষণা দেওয়া হয় ১১ আগস্ট সন্ধ্যায়।

একই দিন কুয়েটে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের এক জরুরি সভায়।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন

৩ মেডিকেল

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) ক্যাম্পাস ও হলে সব ধরনের ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ১০ আগস্ট দুপুরে ঢামেকের একাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

পরে কলেজের অধ্যক্ষ শফিকুল আলম চৌধুরীর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাস, শহীদ ডা. ফজলে রাব্বি ছাত্রাবাস এবং ডা. আলীম চৌধুরী ছাত্রীবাসে সব ধরনের ছাত্ররাজনীতি (ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, অন্যান্য এবং নতুনভাবে গঠিত কোনো ছাত্রসংগঠন) স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ।

একই দিন জরুরি সভা শেষে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খল পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও সংশ্লিষ্ট এলাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ।

সেদিন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের বৈঠকে কলেজ ক্যাম্পাস ও হলে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারীদের মধ্যে সব ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।