কানাডায় পড়াশোনা: ট্রাম্পের শুল্কের প্রভাব পড়বে টিউশন ফি-চাকরিসহ যেসব খাতে
কানাডার বিরুদ্ধে মার্কিন শুল্ক কার্যকর হওয়ার কথা আজ বুধবার থেকে। শুল্ক কার্যকরের সঙ্গে সঙ্গে দেশটিতে উচ্চশিক্ষার জন্য পড়তে যাওয়া আগ্রহী শিক্ষার্থী ও পড়ুয়াদের নানা আর্থিক সংকটের সম্মুখীন হতে হবে। কারণ, ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক বাস্তবায়নের পদক্ষেপে প্রয়োজনীয় পণ্য ও নানা পরিষেবার দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য টিউশন ফি, জীবনযাত্রার খরচ এবং চাকরির সুযোগের ওপর নানা প্রভাব পড়বে।
নতুনভাবে কানাডা ও মেক্সিকো থেকে পণ্য আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। কানাডিয়ান জ্বালানি পণ্যের ওপর আরও (২৫–এর সঙ্গে) অতিরিক্ত ১০ শতাংশ কর আরোপ করা হয়েছে। ফলে বিদ্যুৎ ও গরম করার মতো ইউটিলিটি পণ্যের দাম বাড়তে পারে। কানাডা শীতপ্রধান দেশ, তাই শিক্ষার্থীদের বিদ্যুৎ ও ঘর গরম করার মতো ইউটিলিটির বেশি কিনতে ও ব্যবহার করতে হবে।
শুল্ক আরোপের খাদ্যের দামও বাড়তে পারে। বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের জন্য কানাডা ও মেক্সিকো যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল। এসব শুল্ক আরোপে মুদিদোকানের বিল বাড়বে। ফলে শিক্ষার্থীদের টিকে থাকার জন্য ব্যয় বেড়ে যাবে।
কানাডায় পড়াশোনা করার পরিকল্পনা করা শিক্ষার্থীদের সম্ভাব্য ব্যয় বাড়ার বিষয়টি এখন বিবেচনায় নিতে হবে। টিউশন, বাসাভাড়া, মুদিদোকান ও নানা পণ্যের দাম বাড়ায় শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত তহবিলের উৎস সন্ধান করতে হতে পারে।
খণ্ডকালীন চাকরির বাজারেও পড়বে প্রভাব
কানাডায় বিদেশি শিক্ষার্থীরা নিজেদের খরচ বা ব্যয় পরিচালনার জন্য খণ্ডকালীন চাকরির ওপর নির্ভর করেন। মার্কিন শুল্কের প্রভাবে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো নিয়োগ কমাবে বা স্থগিত করতে পারে। কানাডিয়ান চেম্বার অব কমার্স ইতিমধ্যে সতর্ক করে দিয়েছে, এই শুল্ক আরোপ ‘চাকরি হ্রাস ও অর্থনৈতিক বিপর্যয়’ ডেকে আনতে পারে।
খুচরা পণ্য বিক্রেতা ও হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট খাতে শিক্ষার্থীরা সাধারণত কাজ খুঁজে পান। এসব খাতও কর্মী কমাবে ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন শিক্ষার্থীরা। শুল্ক ও করারোপে বাণিজ্য কার্যকলাপ হ্রাসের কারণে অর্থনীতির গতি ধীর হয়ে গেলে শিক্ষার্থীদের জন্য চাকরি পাওয়ার সুযোগ আরও হ্রাস পেতে পারে।
টিউশন ফি এবং শিক্ষার খরচ
অর্থনীতিতে নানা পরিবর্তনের প্রাতিষ্ঠানিক ব্যয় কমিয়ে আনতে কানাডীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজস্ব টিউশন ফি নির্ধারণ করবে। আমদানিতে বর্ধিত ব্যয়ের কারণে মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পাবে আর ব্যয় সমন্বয় করতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সেই অনুযায়ী টিউশন ও অন্য প্রশাসনিক ফি সমন্বয় করতে হতে পারে।
শিক্ষার্থীদের কীভাবে প্রস্তুতি নেওয়া উচিত
কানাডায় পড়াশোনা করার পরিকল্পনা করা শিক্ষার্থীদের সম্ভাব্য ব্যয় বাড়ার বিষয়টি এখন বিবেচনায় নিতে হবে। টিউশন, বাসাভাড়া, মুদিদোকান ও নানা পণ্যের দাম বাড়ায় শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত তহবিলের উৎস সন্ধান করতে হতে পারে। অথবা বিকল্প খরচ কমানোর ব্যবস্থা নিতে হতে পারে। যাঁরা খণ্ডকালীন চাকরির ওপর নির্ভরশীল, তাঁদেরও সম্ভাব্য কর্মসংস্থান চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত থাকা উচিত।
কানাডার প্রতিশোধ এবং ভবিষ্যতের দৃষ্টিভঙ্গি
আমেরিকার শুল্ক আরোপের পাল্টা হিসেবে কানাডাও ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করতে যাচ্ছে এবং এর পরিমাণ ২০ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। দেশটি বলেছে, ট্রাম্পের শুল্ক বহাল থাকলে তা আরও বাড়তে পারে।