সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের প্রতি শিক্ষা উপদেষ্টার ৬ নির্দেশনা
দেশের সরকারি-বেসরকারি সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের ছয়টি নির্দেশনা দিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। গত বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) শিক্ষা উপদেষ্টা স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত বিভিন্ন ঘটনা এবং শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের বিষয়ে চিঠিতে কথা বলেন শিক্ষা উপদেষ্টা।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে নানাবিধ ঘটনার প্রেক্ষাপটে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ কর্মসূচি এবং কিছু ক্ষেত্রে দলবদ্ধ বিশৃঙ্খলার (মব জাস্টিস) মতো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। এর ফলে শিক্ষাকার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে, অপর দিকে শিক্ষার পরিবেশ বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ পরিস্থিতি সামগ্রিকভাবে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ন করার পাশাপাশি সামাজিক অস্থিরতার কারণ হতে পারে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিবেশ সুষ্ঠু রাখা এবং শিক্ষার মান অক্ষুণ্ন রাখার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ অপরিহার্য।
১. সচেতনতামূলক কার্যক্রম
শিক্ষার্থীদের মধ্যে শান্তি ও শৃঙ্খলার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নিয়মিত কর্মশালা, সেমিনার ও আলোচনার আয়োজন। এর পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রম (এক্সট্রা কারিকুলার), যেমন বিতর্ক প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খেলাধুলা প্রতিযোগিতা ইত্যাদির ব্যবস্থা গ্রহণ। শিক্ষার্থীদের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে উৎসাহ প্রদান, রাজনৈতিক ইস্যুতে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি থেকে তাঁদের বিরত রাখা এবং দলবদ্ধ বিশৃঙ্খলার (মব জাস্টিস) মতো কর্মকাণ্ডের ঝুঁকি ও পরিণতি সম্পর্কে অবহিতকরণ।
২. নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার
ক্যাম্পাসে নিরাপত্তাব্যবস্থা শক্তিশালী করার জন্য পর্যাপ্তসংখ্যক নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন। ক্যাম্পাসের প্রবেশ ও প্রস্থান পয়েন্টগুলোতে কার্যকর মনিটরিং–ব্যবস্থা চালুকরণ।
৩. ঘটনা প্রতিরোধ ও সমাধান
সংঘর্ষ এড়াতে সব পক্ষের সঙ্গে সময়োপযোগী আলোচনা চালিয়ে যাওয়া। সহিংসতা বা আইনবিরুদ্ধ আচরণের ক্ষেত্রে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ বজায় রাখা।
৪. আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ
অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার ক্ষেত্রে বিদ্যমান আইন অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণে উদ্যোগ গ্রহণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কমিটিতে প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত প্রদান
৫. শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখা
শিক্ষার পরিবেশ যাতে বিঘ্নিত না হয়, তা নিশ্চিত করার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ। ক্লাস পুনর্নির্ধারণের মতো কার্যকর পন্থা প্রয়োগ।
৬. নিয়মিত মনিটরিং ও প্রতিবেদন
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি সম্পর্কে নিয়মিত প্রতিবেদন তৈরি এবং তা প্রয়োজনে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসিতে প্রেরণ। সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে গৃহীত পদক্ষেপগুলোর অগ্রগতি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা।