ফিলিস্তিনের শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি মওকুফ করল তুরস্ক-মালয়েশিয়া
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়িয়েছে কয়েকটি দেশ। তাদের মধ্য অন্যতম দুটি দেশ হলো তুরস্ক ও মালয়েশিয়া। গাজায় যুদ্ধ বন্ধে দুই দেশের চেষ্টা অব্যাহত আছে। এবার তুরস্ক ও মালয়েশিয়ায় অধ্যয়নরত ফিলিস্তিনের গাজার শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি মওকুফ করার ঘোষণা দিয়েছে দেশ দুটির সরকার। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলার কারণে তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর অংশ হিসেবে টিউশন ফি মওকুফ করা হয়েছে।
আনাদোলু এজেন্সির খবরে বলা হয়েছে, গাজা থেকে আগত ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি মওকুফ করে একটি আদেশ জারি করেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। আদেশে বলা হয়েছে, তুরস্কে স্নাতক ও ডিপ্লোমা পর্যায়ে অধ্যয়নরত গাজার শিক্ষার্থীদের এই বছরের দ্বিতীয় সেমিস্টারের খরচ বহন করবে তুর্কি সরকার। দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া গাজার সব ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী এ সুবিধা পাবেন।
তুরস্কে অধ্যয়নরত অধিকাংশ ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীর খরচ তাঁদের পরিবারই দিয়ে থাকে। কিন্তু গাজায় ইসরায়েলের হামলার কারণে এখন তাঁরা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন। তাঁদের কাছে পরিবারের অর্থ পাঠাতে পারছেন না। এ জন্য তুরস্কের সরকার সেই শিক্ষার্থীদের পড়ার খরচ মওকুফ করে দিল।
মালয়েশিয়ার স্ট্রেট টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, দেশটির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ছয় শতাধিক ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীর টিউশন ফি অবিলম্বে এক বছরের জন্য মওকুফ করা হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির উচ্চশিক্ষামন্ত্রী মোহাম্মদ খালেদ নরদিন। একই সঙ্গে দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া দুই শতাধিক ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীকে এই সুবিধা দেওয়ার জন্য উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয় আলোচনা করবে বলেও জানান তিনি। এ ছাড়া তাঁদের আগামী বছরের জন্য মাসিক হারে ভাতা দেওয়ার বিষয়টিও বিবেচনা করছে সরকার।
এদিকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলায় নিহত মানুষের সংখ্যা বেড়ে ১৩ হাজারে পৌঁছেছে। গতকাল রোববার গাজা সরকারের গণমাধ্যম কার্যালয় এ তথ্য জানায়। তারা আরও জানায়, নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ৫ হাজার ৫০০ টির বেশি শিশু রয়েছে। আর নারী ৩ হাজার ৫০০ জন। গাজা সরকারের গণমাধ্যম কার্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, উপত্যকায় আহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। আহত মানুষের মধ্যে ৭৫ শতাংশের বেশি শিশু ও নারী।
গাজা সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নিখোঁজ ব্যক্তির সংখ্যা ছয় হাজার ছাড়িয়েছে। তাঁদের বেশির ভাগই ইসরায়েলি হামলায় বিধ্বস্ত ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস। ইসরায়েলের ভাষ্যমতে, হামাসের এই হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন। এ ছাড়া দুই শতাধিক ব্যক্তিকে ইসরায়েল থেকে ধরে গাজায় নিয়ে জিম্মি করে রেখেছে হামাস।