বেসরকারি শিক্ষকদের আচরণবিধির খসড়া প্রকাশ, অংশীজনদের মতামত ৩০ জুনের মধ্যে

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ফাইল ছবি

বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের আচরণ, শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালা-২০২৪–এর খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে। খসড়া নীতিমালার ওপর অংশীজনদের মতামত চাওয়া হয়েছে। ৩০ জুনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের এ মতামত পাঠাতে হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

একাডেমিক ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রে

বিজ্ঞপ্তিতে ধর্তব্য আচরণের একাডেমিক ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নে কোনো ধরনের পক্ষপাতিত্ব করা এবং পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনে পরীক্ষার্থী বা সংশ্লিষ্ট অন্য কাউকে সহযোগিতা করা যাবে না, করলে শাস্তির আওতায় পড়তে হবে।

ধর্তব্য আচরণের প্রশাসনিক ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে রাজনৈতিক বা অন্য কোনো বহিঃপ্রভাব আনয়ন বা আনয়নে সহায়তা করা, যা প্রতিষ্ঠানের স্বার্থহানিকর বিবেচিত হয়; রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম ও প্রতিষ্ঠান–সংশ্লিষ্ট কার্যাদি ব্যতীত অন্য কোনো কাজে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের সম্পৃক্ত করা; সরকার কর্তৃক লিখিতভাবে প্রদত্ত কোনো দায়িত্ব পালনে, অবহেলা বা অনীহা প্রকাশ করা; কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতি ব্যতীত প্রতিষ্ঠানে বা শ্রেণিকক্ষে বা অর্পিত দায়িত্বে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকা; বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন সহকর্মী বা শিক্ষার্থীদের প্রতি অসম্মানজনক কথা বলা বা ইঙ্গিত প্রকাশ করা; সহকর্মী বা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা; সরকারের কোনো কর্তৃপক্ষ কর্তৃক জারিকৃত কোনো আইন, বিধিমালা, নীতিমালা, নির্দেশিকা, অফিস আদেশ, প্রজ্ঞাপন ইত্যাদি লঙ্ঘন এবং নিজ দায়িত্ব পালনে অবহেলা করলে শাস্তির আওতায় পড়তে হবে।

আরও পড়ুন

আর্থিক ক্ষেত্রে

আর্থিক ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, সরকারের লিখিত অনুমতি ব্যতীত কোনো ধরনের চাঁদা বা তহবিল সংগ্রহে যুক্ত হওয়া; প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত কোনো ব্যক্তিকে অর্থ ধার দেওয়া বা অর্থ ধার গ্রহণ অথবা তাঁর কাছে নিজেকে আর্থিকভাবে দায়বদ্ধ করা; প্রতিষ্ঠানের স্থাবর–অস্থাবর সম্পত্তি আত্মসাৎ বা আত্মসাতে সহযোগিতা করা; ফটকা কারবারে যুক্ত হওয়া; প্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নীতিমালার বিধান অমান্য করা; তিনি প্রকাশ্য আয়ের সঙ্গে সংগতিবিহীন জীবনযাপন করা; প্রতিষ্ঠানের অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের দুর্নীতি বা অনিয়ম করা; উপহার বা অর্থ গ্রহণ করে কাউকে অন্যায্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়া বা কারও প্রতি পক্ষপাতিত্ব করলে শাস্তি পেতে হবে।

আরও পড়ুন

সামাজিক ক্ষেত্রে

সামাজিক ক্ষেত্রের ঘরে বলা হয়েছে, যৌতুক দেওয়া বা নেওয়া বা যৌতুক দেওয়া বা নেওয়ায় প্ররোচিত করা; অথবা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, কন্যা বা বরের পিতা-মাতা বা অভিভাবকের কাছে যৌতুক দাবি করা; অভ্যাসগত ঋণগ্রস্ত হওয়া; এমন কোনো কার্যে সম্পৃক্ত হওয়া, যা পদমর্যাদার জন্য সম্মানহানিকর; কোনো উপদলীয় ধর্মীয় মতবাদ প্রচার, এরূপ বিতর্কে অংশগ্রহণ বা অনুরূপ মতবাদের পক্ষপাতিত্ব করা; মহিলা সহকর্মী বা ছাত্রী বা শিশুদের প্রতি এমন কোনো ভাষা ব্যবহার বা আচরণ করা, যা অনুচিত, শিষ্টাচারবর্জিত ও মর্যাদার জন্য হানিকর; আদালতের কোনো রায় বা সরকারের কোনো নীতি বা সিদ্ধান্তের প্রতি প্রকাশ্য সমালোচনা করা; গণমাধ্যম বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের দলসহ সরকারের নীতি বা সিদ্ধান্তের সমালোচনা করা, সরকার বা জনগোষ্ঠীর কোনো অংশের বিরুদ্ধে অসন্তুষ্টি সৃষ্টি, ভুল–বোঝাবুঝি বা বিদ্বেষ সৃষ্টি বা এই উদ্দেশ্যে কাউকে প্ররোচিত করলে শাস্তির আওতায় আসবেন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা।

আরও পড়ুন
শিক্ষকতা
প্রতীকী ছবি

নীতিমালার অন্যান্য ঘরে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তির বিষয়ে কোনো আদালত বা দুর্নীতি দমন কমিশনে অন্য কোনো কার্যধারা চলমান থাকলে, এই বিধিমালার আওতায় ব্যবস্থা নিতে কোনো বাধা থাকবে না। কোনো শিক্ষক কর্মচারী দেনার দায়ে কারাগারে আটক থাকলে অথবা কোনো ফৌজদারি মামলায় গ্রেপ্তার হলে বা তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গৃহীত হলে, পরিচালনা কমিটিকে সংশ্লিষ্ট বোর্ডের অনুমোদনক্রমে উক্তরূপ আটক, গ্রেপ্তার বা অভিযোগপত্র গ্রহণের দিন থেকে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করতে হবে। কোনো ব্যক্তি কোনো আদালতে ১০ হাজার টাকা জরিমানা বা এক বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে এবং আপিলের সময়সীমা অতিক্রান্ত হলে, আদালতের রায়ের বিষয়টি সঠিকভাবে নিশ্চিত হওয়া সাপেক্ষে দণ্ডিত ব্যক্তিকে সরাসরি প্রতিষ্ঠান থেকে বরখাস্ত করতে হবে। অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে, এমন কোনো ব্যক্তি কর্তৃক উক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালনের ফলে যদি পরিচালনা কমিটির কাছে প্রতীয়মান হয়, এতে তদন্ত কার্যক্রম প্রভাবিত হতে পারে, তবে তাঁকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা যাবে। এ সময় তিনি মূল বেতনের অর্ধহারে খোরপোশ ভাতা পাবেন এবং অন্যান্য ভাতাদি পূর্ণহারে পাবেন। তবে সাময়িক বরখাস্তের সময়কাল কোনোক্রমে ৬০ কার্যদিবসের অধিক হবে না। এই বিধিমালার আওতায় কোনো কার্যক্রম শুরু হলে, তা আবশ্যিকভাবে ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে। এ সময়সীমা অতিক্রম করলে সব কার্যধারা বাতিল বলে গণ্য হবে।

আরও পড়ুন

এই বিধিমালার কোনো ধারা লঙ্ঘিত হলে বর্ণিত ইন্টারমেডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন অর্ডিন্যান্স, ১৯৬১ ও মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড (সংশ্লিষ্ট) (মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি) প্রবিধানমালা, ২০২৪ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ছাড়া কোনো অভিযোগ পেলে আঞ্চলিক পরিচালক বা আঞ্চলিক উপপরিচালক বা জেলা শিক্ষা অফিসার তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন (সংশ্লিষ্ট) শিক্ষা বোর্ডে প্রেরণ করবেন। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক (সংশ্লিষ্ট) শিক্ষা বোর্ড ইন্টারমেডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন অর্ডিন্যান্স, ১৯৬১ ও মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড (সংশ্লিষ্ট) (মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি) প্রবিধানমালা, ২০২৪ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন