শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘বুলিং-র‌্যাগিং’ নীতিমালা বাস্তবায়নের নির্দেশ

হাইকোর্টফাইল ছবি

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘বুলিং’ (কটূক্তি, হেনস্তা বা অপমান করা) ও ‘র‍্যাগিং’ (হুমকি, গালাগাল, নিপীড়ন) রোধে করা নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। এক রিটের শুনানি শেষে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল বুধবার এ-সংক্রান্ত রুল নিষ্পত্তি করে এ রায় দেন।

‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বুলিং ও র‌্যাগিং প্রতিরোধসংক্রান্ত নীতিমালা-২০২৩’ প্রজ্ঞাপন আকারে একই বছরের ২ মে প্রকাশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ২০২৩ সালের ২৯ জুন তা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়।

নীতিমালায় মৌখিক, শারীরিক, সামাজিক, সাইবার ও যৌনসংক্রান্ত বুলিং ও র‌্যাগিংয়ের সংজ্ঞা রয়েছে। এই নীতিমালায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বুলিং ও র‍্যাগিং প্রতিরোধে এক বা একাধিক কমিটি গঠন ও গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে বলা হয়েছে।

এর আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে র‍্যাগিং-বিরোধী কমিটি এবং র‍্যাগিং পর্যবেক্ষণে স্কোয়াড গঠনের নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি ওই রিট করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে একই বছরের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন।

রুলে শিক্ষার্থীদের জীবন ও মর্যাদা রক্ষায় র‌্যাগিং কার্যক্রম রোধে নীতিমালা প্রণয়নে বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। র‍্যাগিং থেকে শিক্ষার্থীদের জীবন ও মর্যাদা রক্ষায় কার্যকর পদ্ধতি প্রবর্তনের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা-ও রুলে জানতে চাওয়া হয়। শুনানি নিয়ে রুল নিষ্পত্তি করে গতকাল রায় দেওয়া হয়।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী ইশরাত হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আইনুন নাহার সিদ্দিকা।

পরে ইশরাত হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘র‌্যাগিং কার্যক্রম রোধে নীতিমালা প্রণয়নে নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়েছিল। ইতিমধ্যে গত বছর শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বুলিং ও র‌্যাগিং প্রতিরোধসংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করে। এই নীতিমালা সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাস্তবায়ন করতে শিক্ষাসচিবকে নির্দেশ দিয়ে হাইকোর্ট এ-সংক্রান্ত রুল নিষ্পত্তি করে রায় দিয়েছেন।’

নীতিমালা অনুসারে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষক, কর্মচারী, শিক্ষার্থী প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে র‌্যাগিং ও বুলিংয়ে জড়িত থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে প্রচলিত আইন/বিধি অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটি বা পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি বা সদস্যরা বুলিং ও র‌্যাগিংয়ে সংশ্লিষ্টতা থাকলে তাঁদের বিরুদ্ধেও আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ফৌজদারি আইন অনুসারে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।