সাত কলেজ : উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বক্তব্য
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজ বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠককে উদ্ধৃত করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ‘সরকারি সাত কলেজ দেখভালের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেই পুরোপুরি আলাদা একটি প্রশাসনিক ব্যবস্থা থাকবে, যেখানে আলাদা রেজিস্ট্রারসহ অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকবেন। তবে এ কলেজগুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তই থাকবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রকৃতপক্ষে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে উপদেষ্টা পরিষদের এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবগত হয়েছে। এ প্রস্তাব বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের ইতিপূর্বে কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি। বিষয়টি জানার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টাসহ সরকারের বিভিন্ন উচ্চমহলে আলাপ করেছে। সরকারও বিষয়টির জনগুরুত্ব বিবেচনা করে আন্তরিকতার সঙ্গে সাড়া দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীসহ প্রধান অংশীজনদের নিয়ে মন্ত্রণালয় পর্যায়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে (সম্ভাব্য তারিখ আগামীকাল রোববার) এ বিষয়ে একটি জরুরি বৈঠক আয়োজনের ব্যাপারে সরকার সম্মত হয়েছে।
উল্লেখ্য, সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে আসছিলেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সরকারি সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবি করে আসছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মনে করে, সরকারি সাত কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনদের নিয়ে এ বিষয়ে আরও আলাপ-আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই এ ব্যাপারে একটি টেকসই ও শান্তিপূর্ণ সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব।
এ দিকে ইউএনবির খবরে বলা হয়েছে, সরকারি সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ৭২ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কিছু শিক্ষার্থী। এ সময়ের মধ্যে দাবি মানা না হলে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন ও প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেওয়াসহ কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা। সরকারি সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিল ও ছাত্রীদের জন্য নতুন হল নির্মাণের দাবিতে গতকাল শুক্রবার বিকেলে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে শিক্ষার্থীরা এ হুঁশিয়ারি দেন।
সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা রায়হান ফেরদৌস বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা অধিভুক্তি প্রত্যাহার চান। রায়হান ফেরদৌস বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩ শতাংশ শিক্ষার্থী নারী হলেও তাঁদের মাত্র পাঁচটি আবাসিক হল রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত আবাসন ব্যবস্থা না থাকার পরও কীভাবে সাত কলেজের জন্য নতুন প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ করা হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ সমাবেশের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টা ও উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছে।