নিজ গ্রামে পিটিআই করা নিয়ে অভিযোগ, যা বললেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী
কুড়িগ্রাম জেলায় বর্তমানে একটি প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (পিটিআই) আছে। তারপরও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের সেই নিজ জেলার রৌমারি উপজেলায় নিজের গ্রামে নতুন একটি পিটিআই স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর প্রয়োজনীতায় নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠেছে, তেমনি প্রতিমন্ত্রীর আত্মীয়-স্বজনেরা জমি বিক্রি (অধিগ্রহণ) লাভবান হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছে।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেছেন, চরাঞ্চলের শিক্ষকদের সুবিধার্থে এই পিটিআই করা হচ্ছে। আর সেখানে তার পরিবারের কোনো জমি নেই। তবে গ্রামের আত্মীয়-স্বজনের জমি আছে। কিন্তু সেখানকার জমি বাস্তবে দাম সরকারি দামের (অধিগ্রহণের হার) চেয়ে তিন গুণ বেশি। তাঁর দাবি লাভ নয়, বরং লস (লোকসান) হচ্ছে।
৮ সেপ্টেম্বর সাক্ষরতা দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন নিজ গ্রামে পিটিআই স্থাপন নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন।
কুড়িগ্রামের ওই এলাকাটি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে সময় মুক্তাঞ্চল ছিল উল্লেখ করেন প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। আশপাশের একাধিক জেলার কয়েকটি উপজেলার নাম উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘নদীভাঙন চরাঞ্চলের শিক্ষকদের জন্য এটি (পিটিআই) করা। বলা হচ্ছে আমার স্বার্থ আছে কি না। হ্যাঁ, আমার স্বার্থ আছে। আমার স্বার্থ হলো চরাঞ্চলের শিক্ষকদের কষ্ট করে যাতে কুড়িগ্রাম, ময়মনসিংহে প্রশিক্ষণ নিতে না যেতে হয়। যাতে এই মুক্তাঞ্চল (মুক্তিযুদ্ধের সময়কার মুক্তাঞ্চল) শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করতে পারি, এটি আমার স্বার্থ।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আর যা বললেন জমিজমার জন্য। এটি আমার গ্রামে। তাও সেই গ্রামে এখন বসবাস করি না। আমাদের পৈত্রিক এলাকাটির পাশে নদী। ভাঙনের কারণে আমরা শহরটিকে ধীরে ধীরে পূর্ব দিকে নিতে যাচ্ছি। নিতে গিয়ে আমার বাড়ির সামনে পড়ে গেছে সেই জায়গাটি (পিটিআইয়ের জন্য নির্ধারিত)। সেই জায়গায় আমার কোনো সম্পত্তি নেই। তবে গ্রাম সম্পর্কে আত্মীয়-স্বজনের জমিজমা সেখানে আছে। সেখানে আমি কোনো জমি কিনি নাই, এ রকম রেকর্ডও নাই। যেমন আমি মাঝেমধ্যে শুনি অনেকেই ভাই-ভাজিতা দিয়ে জমি কেনে। এ রকম রেকর্ডও সেখানে আমার নেই। এগুলো নিয়ে মানুষ নানা রকম কথাবার্তা বলতে পারে।’
প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেন, ‘আমার এখানে আরেকটি সমস্যা। জমির যে হার ( অধিগ্রহণের হার) দেওয়া হয়েছে সেখানে, বাস্তবে তার চেয়ে তিন গুণ বেশি দাম। সেখানে এক শতক জায়গার দাম পাঁচ লাখ টাকা। আমি তো লোকজনের কাছ থেকে সেই জায়গা নিতে পারছি না (পিটিআইয়ের জন্য)। আপনারা বলছেন, লাভ করব, লস হচ্ছে। সরকার যে টাকা দিতে চাচ্ছে, তার চেয়ে বাজারদর বেশি। এ জন্য সাফার করছি।’
প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য চলা পিটিআইগুলো প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন। বর্তমানে সারা দেশে ৬৭টি পিটিআই আছে।