মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা কি বিজ্ঞান পড়বে না: শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি পড়ানোর বিরোধিতাকারী ও জঙ্গিবাদের প্রশ্রয়দাতারা মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের ভিক্ষুক বানাতে চায়। প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা কি বিজ্ঞান প্রযুক্তি পড়বে না? শুধু কি নামাজ পড়াবে আর নিজে একটি করে মাদ্রাসা তৈরি করবে?’
রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সোমবার স্বাধীনতা মাদ্রাসা শিক্ষক পরিষদ আয়োজিত শিক্ষক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী। শিক্ষামন্ত্রীর দপ্তর থেকে পাঠানো একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
দীপু মনি বলেন, ‘পাশের দেশের ছবি দিয়ে, ফটোশপ করে বলা হলো, এটা আমাদের বাচ্চাদের পড়ানো হচ্ছে, যে বই দেশেই পড়ানো হয় না। একেবারে কদর্য ভাষায় মিথ্যাচার। মিথ্যাচার কি ইসলাম সমর্থন করে? সমর্থন করে না। শিক্ষকদের, মন্ত্রীকে কদর্য ভাষায় আক্রমণ, হুমকি দেওয়া, এর কোনোটাই কি ইসলাম সমর্থন করে?’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘ভুল থাকলে সংশোধন করব। যেখানে ভুল পেয়েছি, সেখানে সংশোধন করেছি। আরও ভুল থাকলে সংশোধন করব। কমিটিও গঠন করা হয়েছে, কমিটি দেখবে। ২৬টি বই করোনা পরিস্থিতির মধ্যে তৈরি করা সহজ কাজ নয়।’
শিক্ষকদের উদ্দেশে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘যারা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিখতে দেবে না, তারা তো দেখি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বেশি ব্যবহার করে। ফেসবুকে মিথ্যাচার তারাই তো বেশি করে। তাহলে প্রযুক্তি ইসলামবিরোধী কাজ করার জন্য? মিথ্যাচার করার জন্য? তারা কি ইসলামের সেবক?’
দীপু মনি বলেন, ‘মানুষ একসময় হেঁটে, উটের পিঠে চড়ে হজ করতে যেত। এখন তো আমরা বিমানে যাই। তাহলে কি বিমানে যাওয়া বন্ধ করে দেব? মোবাইল ব্যবহার বন্ধ করে দেব? পদ্মা সেতু ও মেট্রোরেলে উঠব না? আমার মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ডাক্তার হবে না? ইঞ্জিনিয়ার, বৈমানিক হবে না? শুধু কি মসজিদে নামাজ পড়াবে? না হলে নিজে আরেকটা মাদ্রাসা খুলবে?’
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যে জ্ঞান তা হঠাৎ করে এসে পড়েছে, নাকি শিখতে হয়েছে? আল্লাহ প্রত্যেককে একটি (মস্তিষ্ক) সুপার কম্পিউটার দিয়েছেন, সেটি কাজে লাগাতে হবে না? তিনি বলেন, ‘এটা যে ব্যবহার করব না, এই কথা যারা বলে, তাদের চেয়ে বড় ইসলামের শত্রু আর হতে পারে না।’
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হাবিবুর রহমান, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান কায়সার আহমেদ, স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলম, স্বাধীনতা মাদ্রাসা শিক্ষক পরিষদের সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো. তেলাওয়াত হোসেন খান প্রমুখ।