১৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছভিত্তিতে ভর্তি পরীক্ষা হবে যে নিয়মে
১৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা কীভাবে হবে তা ঠিক করেছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। ১০০ নম্বরের এই পরীক্ষা হবে বহু নির্বাচনী প্রশ্নে (এমসিকিউ)। উচ্চমাধ্যমিকের পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা (বাণিজ্য) বিভাগের জন্য আলাদা তিনটি পরীক্ষা হবে। বিভাগ পরিবর্তনের জন্য আগের মতো আলাদা পরীক্ষা হবে না।
অর্থাৎ একজন ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থী একটি পরীক্ষা দিয়েই যোগ্যতা অনুযায়ী ভর্তির সুযোগ পাবে। এই পরীক্ষার মাধ্যমেই নিজ বিভাগের পাশাপাশি অন্য বিভাগভুক্ত বিষয়েও ভর্তি হওয়া যাবে। সেভাবেই বিষয়ভিত্তিক আসন রাখা হবে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষাবিষয়ক কার্যক্রমের যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্বে থাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মীজানুর রহমান প্রথম আলোকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
আজ শনিবার ১৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের এক সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়। তবে ভর্তি পরীক্ষা কবে হবে সেটি নির্ভর করছে করোনা পরিস্থিতির ওপর। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলে তিনদিনে তিনটি পরীক্ষা। সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষাকেন্দ্র থাকবে। শিক্ষার্থীরা তাদের সুবিধামতো পরীক্ষাকেন্দ্র পছন্দ করতে পারবেন।
যোগ্যতা ও নম্বরবন্টন
অধ্যাপক মীজানুর রহমান বলেন, ২০১৯ এবং ২০২০ সালে যারা এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করবেন তারাই ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবেন। ১০০ নম্বরের এই পরীক্ষার প্রশ্ন হবে এমসিকিউ পদ্ধতিতে। তিনটি বিভাগের জন্য তিনটি পরীক্ষা হবে। এর মধ্যে মানবিক বিভাগের পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় ন্যূনতম মোট জিপিএ-৬ থাকতে হবে। তবে যেকোনো পরীক্ষায় জিপিএ-৩ এর কম হলে চলবে না। বাণিজ্যে বিভাগের জন্য ওই দুই পরীক্ষায় ন্যূনতম জিপিএ-৬ দশমিক ৫ থাকতে হবে। এখানেও কোনো পরীক্ষায় জিপিএ-৩ এর নিচে থাকলে চলবে না। আর বিজ্ঞানে দুই পরীক্ষায় ন্যূনতম মোট জিপিএ-৭ থাকতে হবে। এখানেও কোনো পরীক্ষায় জিপিএ-তিনের নিচে থাকলে আবেদন করা যাবে না।
অধ্যাপক মীজান বলেন, মানবিক বিভাগের পরীক্ষা হবে বাংলা, ইংরেজি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ের ওপর। এর মধ্যে বাংলায় ৪০, ইংরেজিতে ৩৫ এবং আইসিটিতে ২৫ নম্বরের পরীক্ষা হবে। ব্যবসায় শিক্ষায় (বাণিজ্য) হিসাববিজ্ঞান (২৫ নম্বর), ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা (২৫ নম্বর), ভাষা ( ২৫ নম্বরের মধ্যে বাংলায় ১৩ ও ইংরেজিতে ১২ নম্বর) এবং আইসিটি (২৫ নম্বর) বিষয়ে পরীক্ষা হবে। আর বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের ভাষা ( ২০ নম্বরের মধ্যে বাংলায় ১০ ও ইংরেজিতে ১০ নম্বর), রসায়ন (২০ নম্বর), পদার্থ (২০ নম্বর) এবং আইসিটি, গণিত ও জীববিজ্ঞান বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হবে। এর মধ্যে আইসিটি, গণিত ও জীববিজ্ঞানের মধ্যে যেকোনো দুটি বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হবে। যার প্রতিটির নম্বর হবে ২০ করে।
শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয়বার ( ২০১৯ ও ২০২০) পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাবেন। তবে দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দেওয়া শিক্ষার্থীদের কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নেবে সেটি সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় ঠিক করবেঅধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, উপাচার্য,শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
সাতটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পর ১ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও উপাচার্যদের এক সভায় এবার আরও ১৯টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সরাসরি ভর্তি পরীক্ষা হবে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে।
এ বছর নতুন করে যে ১৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ ভিত্তিতে ভর্তির সিদ্ধান্ত হয়েছে সেগুলো হলো ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয়বার ( ২০১৯ ও ২০২০) পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাবেন। তবে দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দেওয়া শিক্ষার্থীদের কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নেবে সেটি সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় ঠিক করবে।