২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

সফটওয়্যারে একদিনে সব স্কুলে ভর্তিতে লটারি

ছবি: সাজিদ হোসেন

করোনাভাইরাসের কারণে আসন্ন শিক্ষাবর্ষে বিদ্যালয়গুলোতে সব শ্রেণিতেই লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে আরও দুই সপ্তাহ আগে। এখন ১৫ ডিসেম্বর থেকে ঢাকা মহানগরীর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির জন্য আবেদনপত্র বিতরণ করতে চায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।

বিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থী বাছাই করতে ৩০ ডিসেম্বর লটারির প্রস্তাব করা হয়েছে। লটারির কাজটি হবে সফটওয়্যার ব্যবহার করে অনলাইনে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এমন প্রস্তাব দিয়েছে মাউশি। মাউশির কর্মকর্তারা বলছেন, মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলেই সবাইকে সময়সহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয় জানিয়ে দেওয়া হবে। তখন বেসরকারি বিদ্যালয়গুলোও কীভাবে নিজস্ব ব্যবস্থায় আবেদনপত্র বিতরণ ও লটারির কাজটি করবে, তা-ও জানিয়ে দেওয়া হবে। একই সঙ্গে ঢাকার বাইরের সরকারি বিদ্যালয়গুলোর বিষয়েও দিকনির্দেশনা দেওয়া হবে।

তাঁদের বিদ্যালয়ে এবার প্রথম, দ্বিতীয় এবং ষষ্ঠ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। অন্যান্য শ্রেণিতে আসন শূন্য নেই। তবে ভর্তির আবেদনের বিষয়ে এখনো কোনো লিখিত নির্দেশনা পাননি। তাঁরা নির্দেশনার অপেক্ষায় আছেন।
আবু সাঈদ ভূঁইয়া, প্রধান শিক্ষক, গবর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুল

জানতে চাইলে মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ গোলাম ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, খুব শিগগির আবেদনপত্র বিতরণ শুরু করা হবে।

ঢাকা মহানগরীতে ৩৯টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৩টি শাখা রয়েছে। ঢাকার এই বিদ্যালয়গুলোতে প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত আসন আছে সাড়ে ১১ হাজারের মতো। এর সঙ্গে জাতীয়করণ হওয়া আরও দুটি বিদ্যালয়ও যুক্ত হচ্ছে। এগুলোতে মাউশির অধীন কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনায় ভর্তির কাজটি হয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাউশির সিদ্ধান্ত হলো, এবারও বিদ্যালয়গুলোকে তিনটি গুচ্ছ বা ভাগ (এ, বি এবং সি) করে ভর্তির কাজটি করা হবে। এবার একজন শিক্ষার্থী একটি গুচ্ছের পাঁচটি বিদ্যালয়ে ভর্তির পছন্দক্রম দিতে পারবে। এখান থেকে লটারির মাধ্যমে একটি বিদ্যালয় নির্বাচন করা হবে। এত দিন একজন ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থী একটি গুচ্ছের একটি বিদ্যালয়কে বেছে নিতে পারত।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাউশির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা আজ বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা মহানগরীর সব কটি সরকারি বিদ্যালয়ের ভর্তির আবেদন অনলাইনে করতে হবে। টেলিটক এই কাজটি করে দেবে। সফটওয়্যার ব্যবহার করে অনলাইনেই লটারির কাজটি হবে, এতে সময় কম লাগবে। তাই ৩০ ডিসেম্বর এক দিনেই সব কটি বিদ্যালয়ের লটারির প্রস্তাব করা হয়েছে। এরপর নির্বাচিত বিদ্যালয়ে ভর্তি হবে শিক্ষার্থীরা। ঢাকার বাইরের সরকারি বিদ্যালয়গুলোতেও অনলাইনে আবেদন গ্রহণ করা হবে।

বিদ্যালয়গুলোর প্রস্তুতি চলছে

কোন কোন শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে, সে বিষয়ে বিদ্যালয়গুলো প্রাথমিক প্রস্তুতি নিয়েছে রেখেছে। রাজধানীর গবর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আবু সাঈদ ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের বিদ্যালয়ে এবার প্রথম, দ্বিতীয় এবং ষষ্ঠ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। অন্যান্য শ্রেণিতে আসন শূন্য নেই। তবে ভর্তির আবেদনের বিষয়ে এখনো কোনো লিখিত নির্দেশনা পাননি। তাঁরা নির্দেশনার অপেক্ষায় আছেন।

তেজগাঁও সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেবেকা সুলতানা জানালেন, তাঁরা মূলত তৃতীয়, ষষ্ঠ ও নবম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করবেন। এ ছাড়া অন্যান্য শ্রেণিতে আসন শূন্য থাকলে সেগুলোতে ভর্তি করা হবে। এই হিসাবটি এখন করা হচ্ছে।

১৫ ডিসেম্বর থেকে ঢাকা মহানগরীর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির জন্য আবেদনপত্র বিতরণ করতে চায় মাউশি। বিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থী বাছাই করতে ৩০ ডিসেম্বর লটারির প্রস্তাব করা হয়েছে। লটারির কাজটি হবে সফটওয়্যার ব্যবহার করে অনলাইনে।

গত ২৫ নভেম্বর শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি জানিয়েছিলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে আসন্ন শিক্ষাবর্ষে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন বিদ্যালয়গুলোতে প্রথম শ্রেণির মতো সব শ্রেণিতেই লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। এ ছাড়া ঢাকা মহানগরীর বিদ্যালয়গুলোতে অর্ধেক শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের আশপাশের এলাকায় বসবাসরত (ক্যাচমেন্ট এরিয়া) শিক্ষার্থীদের। এত দিন ঢাকা মহানগরীর বিদ্যালয়গুলোতে ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেত আশপাশের এলাকা থেকে।

এত দিন সারা দেশের স্কুলগুলোয় প্রথম শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হলেও দ্বিতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করা হতো লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে। আর নবম শ্রেণিতে ভর্তি করা হয় জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষার ফলের (জিপিএ) ভিত্তিতে। কিন্তু করোনার কারণে এ বছর জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা হচ্ছে না। তাই নবম শ্রেণিতেও জেএসসি ও জেডিসির ফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ নেই।