এইচএসসিতে চট্টগ্রামে এবার পাসের হার ৭০.৩২
এবারের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষায় চট্টগ্রাম বোর্ডে পাসের ৭০ দশমিক ৩২। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১০ হাজার ২৬৯ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ছাত্র ৪ হাজার ৫১০, ছাত্রী ৫ হাজার ৭৫৯। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় নগরের ষোলোশহর এলাকায় অবস্থিত মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের মিলনায়তনে এ ফলাফল প্রকাশ করেন বোর্ড চেয়ারম্যান রেজাউল করিম।
ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, এবার মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ১ লাখ ৬ হাজার ২৯৮ জন। এর মধ্যে উপস্থিত পরীক্ষার্থী ১ লাখ ৫ হাজার ৪১৬। পাস করেছেন ৭৪ হাজার ১২৫ জন। উপস্থিত ছাত্রীর সংখ্যা ৫৭ হাজার ৩৩৩, ছাত্র ৪৮ হাজার ৮৩। ছাত্রীর পাসের হার ৭২ দশমিক ৪৯, ছাত্র পাসের হার ৬৭ দশমিক ৭২। এক বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছেন ১৭ হাজার ৬৯৭ জন।
এবারের এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষা শুরু হয় গত ৩০ জুন। সাতটি পরীক্ষার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। এতে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। এরপর প্রথমে ১১ আগস্ট ও পরে ১১ সেপ্টেম্বর থেকে স্থগিত পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তবে আগস্টে সচিবালয়ের ভেতরে ঢুকে পরীক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করলে স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিল করতে বাধ্য হয় শিক্ষা বিভাগ। পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যেসব বিষয়ের পরীক্ষা হয়েছে, সেগুলোর উত্তরপত্র মূল্যায়ন করে এইচএসসির ফলাফল প্রকাশ করা হবে। আর যেসব বিষয়ের পরীক্ষা বাতিল হয়েছে, সেগুলোর ফলাফল প্রকাশ করা হবে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে বিষয় ম্যাপিং করে।
বোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিষয় ম্যাপিংয়ের জন্য একটি নীতিমালা রয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় একজন পরীক্ষার্থী এসএসসিতে একটি বিষয়ে যত নম্বর পেয়েছিলেন, এইচএসসিতে সেই বিষয় থাকলে তাতে এসএসসিতে প্রাপ্ত পুরো নম্বর বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। আর এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় বিষয়ে ভিন্নতা থাকলে ম্যাপিংয়ের নীতিমালা অনুযায়ী নম্বর বিবেচনা করে ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে।
জিপিএ-৫ বাড়লেও পাসের হার কমেছে
গতবার এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন ৬ হাজার ৩৩৯ জন। এ বছর ৫ হাজার ৯৩০ জন বেশি শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছেন। তবে পাসের হার কিছুটা কমে গেছে। যেমন গত বছর পাসের হার ছিল ৭৪ দশমিক ৪৫, এবার ৭০ দশমিক ৩২।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এ এম এম মুজিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সব বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়া গেলে ভালো হতো। কিন্তু সেটি হয়নি। ম্যাপিং করার কারণে জিপিএ-৫ বাড়লেও পাসের হারে প্রভাব পড়েছে।
এবার ২৮২টি কলেজের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নেন। পরীক্ষার কেন্দ্র ছিল ১১৫টি। চট্টগ্রাম জেলা, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও কক্সবাজার জেলার শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীন পরীক্ষা দেন।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এ এম এম মুজিবুর রহমান জানান, এবার বিজ্ঞান বিভাগে পাসের হার ৯১ দশমিক ৩৩, মানবিকে ৫৭ দশমিক ১১, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৭৩ দশমিক ৫২। চট্টগ্রাম নগরের পাসের হার ৮৪ দশমিক ২২। নগর বাদে চট্টগ্রাম জেলায় পাসের হার ৬৩ দশমিক ৬২। অন্যদিকে কক্সবাজার জেলায় পাসের হার ৬৩ দশমিক ১৯।
প্রতিবারের মতো এবারও ফলাফলে পিছিয়ে রয়েছে তিন পার্বত্য জেলা। রাঙামাটিতে এ বছর পাসের হার ৬০ দশমিক ৩২। খাগড়াছড়িতে সবচেয়ে কম, ৫৯ দশমিক ৬৩। অন্যদিকে বান্দরবানে পাসের হার ৫৯ দশমিক ৯০।