উচ্চশিক্ষায় আইইউবিএটি

অভিভাবক থেকে শিক্ষার্থী— গত ৩১ বছরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের অসংখ্য মানুষের স্বপ্ন পূরণে পাশে থেকেছে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি (আইইউবিএটি)। জেনে নেওয়া যাক হাজারো স্বপ্ন পূরণের কারিগর এই বিশ্ববিদ্যালয়কে।

উচ্চমাধ্যমিকের গন্ডি পেরোতেই ভবিষ্যতের স্বপ্ন ঘিরে ধরে দেশের একদল প্রাণবন্ত তরুণ-তরুণীদের। স্বপ্ন পূরণের এই যুদ্ধের শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পরীক্ষায়। আর্থসামাজিক কিংবা পারিপার্শ্বিক সমস্যায় পিছিয়ে গেলেও স্বপ্ন পূরণের যুদ্ধে হার মানতে চান না কেউই। এমন হাজারো তরুণ-তরুণীর স্বপ্ন পূরণের পাশে থাকে দেশের প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি (আইইউবিএটি)। ১৯৯১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও আইবিএ–এর (ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট) সাবেক পরিচালক শিক্ষাবিদ ড. এম আলিমউল্যা মিয়ান প্রতিষ্ঠা করেন তার স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান।

নানা রঙের ক্যাম্পাসজীবন

ঢাকার ভেতর উত্তরায় নিজস্ব ২০ বিঘা বিশাল সবুজ ক্যাম্পাসে চলে আইইউবিএটির শিক্ষা কার্যক্রম। নয়নাভিরাম সবুজ মাঠ, উন্মুক্ত স্টাডি এরিয়া, শহীদ মিনার, গাছপালা ও পুকুরে ঘেরা এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশ। ফ্রি ওয়াইফাই, ইনডোর গেমসহ সব মিলিয়ে ‘অ্যান এনভায়রনমেন্ট ডিজাইনড ফর লার্নিং’ অর্থাৎ ‘শিক্ষার পরিকল্পনায় তৈরি পরিবেশ’ কথাটি যেন এই ক্যাম্পাসেই দেখা যায়। দেশের প্রতিটি গ্রাম থেকে অন্তত একজন দক্ষ স্নাতক গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে আইইউবিএটি। প্রতিযোগী মনোভাব ধরে রাখতে শিক্ষার্থীদের ভেতর চলে অন্তর্বিভাগ নানা আয়োজন। যেখানে শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা দিতে দল বেঁধে শিক্ষকেরাও চলে আসেন মাঠে। সম্প্রতি আমেরিকান সোসাইটি অব হিটিং, রেফ্রিজারেটিং অ্যান্ড এয়ারকন্ডিশনিং ইঞ্জিনিয়ারের (এএসএইচআরএই) আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম ইকুইপমেন্ট গ্রান্ট পেয়েছেন আইইউবিএটির যন্ত্র প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া একই বিভাগের শিক্ষার্থীরা মিলে তৈরি করেছেন সৌর শক্তিচালিত গাড়ি।

কোনো ফি ছাড়াই ঢাকার সবকটি রুটসহ গাজীপুর, সাভার ও নারায়ণগঞ্জ থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আছে পরিবহনব্যবস্থা।

এ ছাড়া বিতর্ক অনুষ্ঠান, নাচ, গান, রোবটিকস কম্পিটিশন, প্রোগ্রামিং কনটেস্ট, উদ্যোক্তা মেলা, বিজনেস কেস কম্পিটিশনসহ নানা আয়োজনের নিজেদের সেরাটা দিয়ে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় সেরাদের সারিতে অবস্থান করে নিয়েছে আইইউবিএটিয়ানরা। প্রতিটি বিভাগের অ্যালামনাইরা ছড়িয়ে আছে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন নামকরা প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ পর্যায়ে। বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরের (বিএনসিসি) প্লাটুন সবসময় সক্রিয় থাকে আইইউবিএটি এর ক্যাম্পাসে আছে সেচ্ছাসেবী সংগঠন রোটারাক্ট ক্লাব।

আইইউবিএটিতে ভর্তি কার্যক্রম

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা অনুসরণ করে শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করে আইইউবিএটি। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় আলাদাভাবে ন্যূনতম ২.৫ গ্রেড পাওয়া শিক্ষার্থীরা ভর্তি ফরম সংগ্রহ করতে পারেন। এরপর ভর্তি পরীক্ষার ধাপ পেরিয়ে শিক্ষার্থীরা পছন্দসই প্রোগ্রামে ভর্তি হতে পারেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে এখানে: iubat.edu/admission

দেশ-বিদেশের নানা মানুষ

শুধু দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা শিক্ষার্থীর দেখা মেলে এই ক্যাম্পাসে, তা কিন্তু নয়। বরং এশিয়া-আফ্রিকার ২০টির বেশি দেশের শতাধিক শিক্ষার্থীর পদচারণ রয়েছে এই ক্যাম্পাসে।

শিক্ষার্থীদের জন্য ৯০টি বৃত্তি

প্রতিবছর আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য প্রায় ২০ কোটি টাকার বৃত্তি দেয় আইইউবিএটি। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বা সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত মেধাবৃত্তি দেওয়া হয়। এ ছাড়া মেয়েদের উচ্চশিক্ষায় উৎসাহিত করতে ১৫ শতাংশ বিশেষ বৃত্তিসহ বিভিন্ন বিভাগে আরও ৯০টি বৃত্তি দেওয়া হয়। যেসব মেধাবী শিক্ষার্থী আর্থিক সচ্ছলতার অভাবে উচ্চশিক্ষা নিতে পারছেন না, তাঁদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা আছে আইইউবিএটিতে। এ বিষয়ে আরও জানা যাবে এখানে: iubat.edu/scholarships/

গবেষণায় নানামুখী সফলতা

আগামী দিনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষার্থীদের গবেষণায় অনুপ্রাণিত করতে আইইউবিএটির রয়েছে মিয়ান রিসার্চ ইনস্টিটিউট। যেখানে কৃষি, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি এবং ব্যবসায় প্রশাসনসহ অন্যান্য বিভাগের শিক্ষকদের সঙ্গে শিক্ষার্থীরাও বিভিন্ন গবেষণায় নিয়োজিত আছেন।

এ ছাড়া মিয়ান রিসার্চ ইনস্টিটিউট থেকে বিশ্বের বিভিন্ন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে বেশ কিছু গবেষণাপত্র। আন্তর্জাতিক পরিসরের গবেষণায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যুক্ত করতে ১৬তম সাউথ এশিয়ান ম্যানেজমেন্ট ফোরামের (এসএএমএফ) আয়োজন করা হয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। অনলাইন-অফলাইন মিলিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে ৯৬টি সারসংক্ষেপ ও ৫১টি প্রবন্ধ নিবন্ধিত হয়। এ ছাড়া শতাধিক শিক্ষাবিদ ও গবেষক এতে অংশ নেন।

চাকরির বাজারে এগিয়ে আইইউবিএটি স্নাতকধারী

প্রতিবছর বিভিন্ন দেশীয় ও বিদেশি প্রতিষ্ঠানে সরাসরি ক্যাম্পাস থেকে নিয়োগের জন্য মানবসম্পদ কর্মকর্তারা উপস্থিত হন আইইউবিএটির সবুজ প্রাঙ্গণে। নিয়মিত আয়োজন করা হয় ক্যারিয়ারবিষয়ক বিভিন্ন কর্মশালার। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নানা পেশার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সান্নিধ্যে শেখার সুযোগ হয় তাঁদের। তাই স্নাতক শেষে চাকরির বাজারে এগিয়ে থাকেন আইইউবিএটির স্নাতকধারীরা।

এক নজরে

র‌্যাঙ্কিংয়ের হিসাব-নিকাশ

৩১ বছরের পথচলায় আইইউবিএটির আছে বেশ কিছু অর্জন। প্রকৌশল বিভাগের তিনটি প্রোগ্রাম দ্য ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ারস বাংলাদেশের স্বীকৃতি পেয়েছে। এ ছাড়া ২০২১ সালের ইউআই গ্রিন মেট্রিক ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‌্যাঙ্কিংয়ে সারা বাংলাদেশে আইইউবিএটির অবস্থান দ্বিতীয়। আর বিশ্বের ৭৯টি দেশের ৯৫৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ২৯৪তম। ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটিজ উইথ রিয়েল ইমপ্যাক্ট বিশ্বের শীর্ষ ৫০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় স্থান পেয়েছে আইইউবিএটি। ডব্লিউইউআরআই র‌্যাঙ্কিয়ে ২০২১-এ নৈতিক মান বিভাগে ৪৩তম স্থান অর্জন করেছে আইইউবিএটি।

একনজরে আইইউবিএটি

বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইইউবিএটি।

বাংলাদেশে প্রথম বিবিএ প্রোগ্রাম চালু করে আইইউবিএটি।

আইইউবিএটি সর্বপ্রথম ব্যাচেলর অব ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট (বিএটিএইচএম) প্রোগ্রাম চালু করে।

বেসরকারি পর্যায়ে ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (বিএসএমই), ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন অ্যাগ্রিকালচার (বিএসএজি) ও ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন নার্সিংয়ে সর্বপ্রথম স্নাতক প্রোগ্রাম চালু করে আইইউবিএটি।

যা যা পড়ার সুযোগ আছে

আইইউবিএটিতে ব্যাচেলর পর্যায়ে বিবিএ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইকোনমিকস, অ্যাগ্রিকালচার, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট , ইংলিশ, নার্সিং এবং মাস্টার্স পর্যায়ে এমবিএ বিষয়ে পড়ানো হয়।

ভর্তি ও টিউশন ফি

খরচ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে: iubat.edu/student/tuition-and-fees/

ক্রেডিট স্থানান্তর

কমনওয়েলথ সদস্যভুক্ত যেকোনো দেশে আইইউবিএটির শিক্ষার্থীদের ক্রেডিট স্থানান্তরের ব্যবস্থা আছে।

যোগাযোগ

ঠিকানা: সেক্টর ১০, উত্তরা মডেল টাউন, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০, ফোন: ০২৫৫০৯১৮০১-৫, ০১৮৩৩৩৮৬৬৪৪, ওয়েবসাইট: iubat.edu