ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবিতে সমাবেশ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবিতে ক্যাম্পাসে সমাবেশ করেছেন বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর একদল নেতা-কর্মী। সেখানে তাঁরা বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ছাত্রলীগ মিলে ভিন্নমতকে দমন করছে। শিক্ষার্থীদের অধিকারগুলো ভূলুণ্ঠিত করা হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে অবিলম্বে ডাকসু নির্বাচন প্রয়োজন।
আজ বুধবার বিকেলে বৃষ্টির মধ্যেই টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ সমাবেশ হয়। বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর উদ্যোগে গঠিত ‘ডাকসু আন্দোলন’ নামে একটি প্ল্যাটফর্মের ব্যানারে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
সমাবেশে বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর নেতা ও ফিন্যান্স বিভাগের ছাত্র জাবির আহমেদ বলেন, ‘ডাকসু শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে ভূমিকা রাখতে পারে। আমরা ক্যাম্পাসে গণতন্ত্র চাই। প্রতিবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ক্যাম্পাসগুলো ক্ষমতাসীনদের হাতে চলে যায়। তাই ডাকসু নির্বাচন প্রয়োজন। আমরা আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগেই ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবি জানাই।’
ছাত্র ইউনিয়নের নেত্রী ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী অর্ণি আনজুম বলেন, ডাকসু নির্বাচন দিলে সব সমস্যা হয়তো দূর হবে না, কিন্তু অধিকাংশ সমস্যাই দূর হবে। গত ডাকসু নির্বাচন তারা (ছাত্রলীগ) নিজেদের প্রয়োজনে করেছিল। তারপরও এর মাধ্যমে এক বছরেই অনেক পরিবর্তন হয়েছিল। অবিলম্বে পরবর্তী ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে।
বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর নেতা ও ইংলিশ ফর স্পিকার্স অব আদার ল্যাঙ্গুয়েজেস বিভাগের ছাত্র সামি আবদুল্লাহ বলেন, ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই, মুক্তচিন্তার পরিবেশ নেই। ভিন্নমত দমনের জন্য প্রশাসন ও ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের গলা চেপে ধরে বসে আছে। প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাবে শিক্ষার্থীরা তাঁদের অধিকারগুলো পাচ্ছেন না। প্রশাসন ক্ষমতাসীনদের দালালি করছে। এ পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে ক্যাম্পাসে গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে অবিলম্বে ডাকসু নির্বাচন আয়োজন করা প্রয়োজন।
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে আইন বিভাগের ছাত্র জাহিদুল ইসলাম, প্রাচ্যকলা বিভাগের সাজিদুল ইসলাম, উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের নিনাদ খান প্রমুখ বক্তব্য দেন।
দীর্ঘ ২৮ বছর অচল থাকার পর ২০১৯ সালে নির্বাচনের মাধ্যমে সচল হয় ডাকসু ও ১৮টি হল সংসদ। সেই নির্বাচনের সাড়ে চার বছর ইতিমধ্যে পার হয়েছে। ডাকসু ও হল সংসদের সর্বশেষ কমিটির মেয়াদ শেষ হয় ২০২০ সালে। করোনা পরিস্থিতির কারণে ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল ও ক্যাম্পাস। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর ২০২১ সালের ৫ অক্টোবর থেকে হল ও ক্যাম্পাস খুলে দেওয়া হয়। এরপর দুই বছর পেরোলেও ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের কোনো উদ্যোগ নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।