২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

ঝরে পড়াদের শিক্ষায় ফেরাতে হবে

বিদ্যালয়বহির্ভূত শিশু-কিশোরদের শিক্ষার চ্যালেঞ্জ নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় কথা বলছেন গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী। পাশে ইমেরিটাস অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ও রাজা দেবাশীষ রায়। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলেছবি: প্রথম আলো

দেশে ৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী আড়াই কোটির বেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনার বাইরে। আর প্রাথমিকে যত শিক্ষার্থী ভর্তি হয়, তাদের মধ্যে প্রায় ১৪ শতাংশ শিক্ষার্থী প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করার আগেই ঝরে পড়ে। মাধ্যমিকে গিয়ে এই হার বেড়ে হয় ৩৬ শতাংশ। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাইরে থাকা ও ঝরে পড়া এই বিপুলসংখ্যক জনগোষ্ঠীকে কোনো না কোনো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় শিক্ষা দিতে হবে।

আর এ জন্য শুধু প্রকল্পভিত্তিক কার্যক্রম না নিয়ে কর্মসূচিভিত্তিক কার্যক্রম হাতে নিতে হবে। শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা বাড়াতে হবে।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে আয়োজিত ‘বিদ্যালয়বহির্ভূত শিশু-কিশোরদের শিক্ষার চ্যালেঞ্জ: সমাধান কোন পথে’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। শিক্ষা নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংস্থাগুলোর মোর্চা গণসাক্ষরতা অভিযান আয়োজিত এই মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থী, তাদের নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষাবিশেষজ্ঞরা বক্তব্য দেন।

মতবিনিময় সভায় সভাপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমাদের একটি শিক্ষানীতি আছে, কিন্তু সেটির বাস্তবায়ন নেই। শিক্ষা আইন এখনো হয়নি।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতি নাজুক হচ্ছে, তার কারণ হচ্ছে দুর্নীতি, লুটপাট ও অব্যবস্থা। এগুলো থেকে আমাদের বের হতে হবে।’

মাধ্যমিক শিক্ষা সর্বজনীন করার ওপর গুরুত্ব দেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক মনজুর আহমদ। তিনি বলেন, এ জন্য ‘প্রথম সর্বজনীন বিদ্যালয় শিক্ষা কার্যক্রম’ শুরু করা দরকার।

মতবিনিময় সভা সঞ্চালনা করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী। তিনি দেশের কোন এলাকায় কত স্কুল দরকার, সে জন্য ‘স্কুল ম্যাপিং’ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। একই সঙ্গে ঝরে পড়া রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার ওপরও জোর দেন।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ দুর্নীতি এবং বিদেশে বিপুল পরিমাণ টাকা পাচারসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন।

পঞ্চম প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচিসহ (পিইডিপি-৫) সামনে শিক্ষায় যে নীতিগত সংস্কার হতে যাচ্ছে, তাতে পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষ এবং সমতলের সুযোগবঞ্চিত মানুষের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ দেন পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমা সার্কেলের প্রধান রাজা দেবাশীষ রায়।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নুরজাহান খাতুন কেন শিক্ষার্থী ঝরে পড়ে, তা নিয়ে গবেষণা করার কথা বলেন।

মতবিনিময় সভায় মূল উপস্থাপনায় গণসাক্ষরতা অভিযানের কার্যক্রম ব্যবস্থাপক মো. আবদুর রউফ আলোচনাপত্র উপস্থাপন করেন। তিনি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য দিয়ে বলেন, ৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী প্রায় ২ কোটি ৫৭ লাখ মানুষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাইরে রয়েছে। ঝরে পড়া রোধে প্রকল্পের পরিবর্তে কর্মসূচিভিত্তিক কার্যক্রম হাতে নেওয়া, ‘মিড ডে মিল’ সর্বজনীন করা, উপবৃত্তির টাকা বাড়িয়ে শিক্ষার্থীপ্রতি ৫০০ টাকা করা, বাজেটে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানোসহ বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরেন।