উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন
ফারজানা মুবাশ্বিরা প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্ন দেখেছেন খুব ছোটবেলায়। এখন পড়ছেন
মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মাইনিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষে।
সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে বেড়ে ওঠা ফারজানা ছোটবেলা থেকেই যুক্ত ছিলেন নানা কার্যক্রমে। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে পড়াশোনার পাশাপাশি লক্ষ্য ঠিক করলেন, উদ্যোক্তা হবেন। শুরুটা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা—হাল্ট প্রাইজ দিয়ে৷ হাল্ট প্রাইজে নিজ ক্যাম্পাসে চ্যাম্পিয়ন হন ফারজানা ও তাঁর দল ম্যাভরিকস। তাঁদের প্রকল্পের নাম ছিল লাইস্টার। টিম ম্যাভরিকস চ্যাম্পিয়ন হয়ে লাইস্টারকে নিয়ে পাড়ি জমান মালয়েশিয়ায়। যেখানে আয়োজিত হয় হাল্ট প্রাইজের আঞ্চলিক রাউন্ড।
লাইস্টার হলো বায়োগ্যাস প্রযুক্তি ব্যবহার করে ময়লা থেকে রান্নার জ্বালানি তৈরির একটি প্রকল্প। হাল্ট প্রাইজ প্রতিযোগিতায় আঞ্চলিক পর্ব থেকেই ফিরতে হয়েছিল, তবে নিজেদের ভুলত্রুটিগুলো শুধরে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন ফারজানারা। তারপর একে একে আইইইই আয়োজিত আইএইচটিপিসি, বুয়েট আয়োজিত পাইওনিয়ার্স ৩.০, এটুআই আয়োজিত উইমেন ইনোভেশন ক্যাম্প ও গো গ্রিন ইন দ্য সিটির মতো জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় লাইস্টার জিতে নেন একাধিক পুরস্কার।
লাইস্টার নিয়ে সবচেয়ে বড় অর্জনটি ছিল ব্র্যাক আয়োজিত আরবান ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ জয়। এই প্রতিযোগিতায় লাইস্টার জিতে নেন ৫ লাখ টাকা অনুদান। সিঙ্গাপুর ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন আয়োজিত ইয়ুথ সোশ্যাল এন্ট্রাপ্রেনার প্রতিযোগিতায় ফাইনালে পৌঁছেছিল টিম ম্যাভরিকস। এ ছাড়া কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত এএবি ওয়ার্ল্ড এশিয়ান কেস কম্পিটিশনে একমাত্র বাংলাদেশি দল হিসেবে ম্যাভরিকসের পাঠানো কেস স্টাডি সিলভার মেডেল ছাড়াও জিতে নেয় ১ হাজার মার্কিন ডলার (প্রায় ৮৫ হাজার টাকা)।
নিজের প্রকল্প নিয়ে দেশ–বিদেশে প্রশংসিত হওয়া ফারজানা বলেন, ‘যেকোনো স্টার্টআপের শুরুতে ফান্ড পাওয়া যায় না, অপেক্ষা করতে হয় অনেকটা সময়। আর এই অপেক্ষাটা করতে পারেন না বলেই অনেকে উদ্যোক্তা হওয়ার চেষ্টা ছেড়ে দেন। আমাদের প্রকল্প নিয়ে আমাদের স্বপ্ন অনেক বড়। তাকে বড় করার। শুধু অর্থ বা লাভ নয়, আমার কাজের মাধ্যমে সমাজের উন্নয়নের পাশাপাশি দেশের নাম আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই।’