সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ। সরকারি এই মেডিকেল কলেজের পাশাপাশি সিলেট শহরে আছে বেসরকারি আরও চারটি মেডিকেল কলেজ। মেডিকেল শিক্ষাদীক্ষায় শিখরে ওঠার সুযোগ হাতের নাগালে এনে দিতে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিও পূরণ হতে চলেছে। দেশের চতুর্থ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেটে মেডিকেল শিক্ষার প্রথম উচ্চতম বিদ্যাপীঠ ‘সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়’ ইতিমধ্যে দাপ্তরিক কাজ শুরু করেছে।
সিলেট নগরের চৌহাট্টা এলাকায় সিভিল
সার্জনের কার্যালয়ের পাশেই বিশ্ববিদ্যালয়টির অস্থায়ী কার্যালয়। সেখানে রয়েছে উপাচার্যের দপ্তর। গত বছরের নভেম্বরে উপাচার্য নিযুক্ত হন সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মোর্শেদ আহমেদ চৌধুরী।
পাশাপাশি হবিগঞ্জে শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজে এবার থেকে শিক্ষার্থী ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু রয়েছে। সুনামগঞ্জে নতুন মেডিকেল কলেজ স্থাপনে ভূমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।
সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ ছাড়াও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ রয়েছে চারটি। জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ, নর্থ
ইস্ট মেডিকেল কলেজ, সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ ও পার্কভিউ মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১০ হাজারের বেশি। এর মধ্যে বিদেশি শিক্ষার্থীও আছেন।
উচ্চতর চিকিৎসাশিক্ষা ও গবেষণার জন্য সিলেটে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। ২০১৬ সালের ২১ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিলেট আলিয়া মাদ্রাসা মাঠের সমাবেশে সিলেটে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রথম ঘোষণা দিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে ২০১৭ সালের ৩১ মে সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সিলেটে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের এ ঘোষণা দেন তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। ২০১৮ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সংসদে এ বিষয়ে বিল পাস হলে ওই বছরের নভেম্বরে সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে মোর্শেদ আহমদ চৌধুরীকে নিযুক্ত করার পর অস্থায়ী কার্যালয়ে দাপ্তরিক কাজ শুরু হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী কার্যালয় সূত্র জানায়, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জায়গা নির্ধারণে কয়েকটি স্থান নিয়ে পর্যবেক্ষণ চলছে। এর মধ্যে সিলেটের দক্ষিণ সুরমাসহ কয়েকটি সম্ভাব্য স্থান প্রস্তাব করা হয়েছে। সম্প্রতি স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সিলেট সফরকালে জায়গাটি পরিদর্শন করে গেছেন। মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কতটুকু জায়গা অধিগ্রহণ করা যাবে এবং খরচ কেমন পড়বে—এসব বিবরণসহ সম্ভাব্য জায়গার নকশা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এসব দেখে জায়গা নির্দিষ্ট করে দেবেন বলে কথা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য মোট ১০০ একর জায়গা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
অস্থায়ী কার্যালয়ে মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তি, রেজিস্ট্রেশনসহ নানা বিষয়ে কার্যক্রম প্রাথমিকভাবে চলছে। যদিও মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য পদ সৃষ্টি হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে পদ সৃষ্টির জন্য আবেদন জানানো হয়েছে। সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সহায়তায় প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়টি চিকিৎসাক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনা ও উদ্ভাবনের দ্বার উন্মোচন করবে বলে বিশ্বাস করেন চিকিৎসা–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।