মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ফল বাতিলের রিট পর্যবেক্ষণসহ খারিজ
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ফল বাতিল করে নতুন মেধাতালিকায় ভর্তি চেয়ে রিটটি পর্যবেক্ষণসহ খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালত বলেছেন, পর্যবেক্ষণসহ রিটটি খারিজ করা হচ্ছে। কোনো পরীক্ষার্থীর ফলাফল বিষয়ে অভিযোগ থাকলে তা স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে আবেদন করবেন। ৭ দিনের মধ্য কর্তৃপক্ষকে কারণসহ বিষয়টি নিস্পতি করে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীকে জানাতে হবে। এ ছাড়াও তথ্য গোপন করে কোনো প্রার্থী ভর্তি প্রক্রিয়ার অংশ নিয়ে থাকলে এবং তা চিহ্নিত হলে তাদের ভর্তি তাৎক্ষণিক বাতিল হবে।
এর আগে গত ১৯ মে ৩২৪ জন শিক্ষার্থী ওই রিট করেন। রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মেহেদী হাসান চৌধুরী ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার। শুনানির পর আজ আদেশের জন্য দিন ধার্য ছিল।
২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল ত্রুটিপূর্ণ দাবি করে তা সংশোধন সাপেক্ষে নতুন মেধাতালিকা প্রণয়নের মাধ্যমে মেডিকেল কলেজগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য গত ১১ মে দুই সচিবসহ পাঁচ কর্মকর্তা বরাবরে ২৪৮ জন পরীক্ষার্থীর পক্ষে আইনি নোটিশ পাঠান আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির। গত বুধবার (১৯ মে) তিনি প্রথম আলোকে বলেন, নোটিশের জবাব না পেয়ে আদালতের অনুমতি নিয়ে ৩২৪ পরীক্ষার্থীর পক্ষে রিটটি করা হয়। সেই রিটের শুনানি হয় গত সপ্তাহে।
এর আগে গত ৪ এপ্রিল ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। জাতীয় মেধার ভিত্তিতে সরকারি ৩৭টি মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য ৪ হাজার ৩৫০ জন ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীকে নির্বাচিত করা হয়। পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ৪৮ হাজার ৯৭৫ জন উত্তীর্ণ হন, যা মোট পরীক্ষার্থীর ৩৯.৮৬ শতাংশ।
আইনি নোটিশে তিন দিনের সময় দিয়ে প্রকাশিত মেধাতালিকার ভিত্তিতে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত রাখতে এবং ত্রুটিপূর্ণ মেধাতালিকা বাতিল করে পুনঃ নিরীক্ষার মাধ্যমে নতুন মেধাতালিকা প্রণয়ন করতে অনুরোধ করা হয়েছে। স্বাস্থ্যসচিব, শিক্ষাসচিব, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও পরিচালক এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে ওই নোটিশ পাঠানো হয়।
নোটিশের জবাব পাননি জানিয়ে ১৯ মে আইনজীবী হুমায়ন কবির প্রথম আলোকে বলেন, ভর্তি পরীক্ষায় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত পাঠ্যপুস্তক অনুযায়ী অন্তত দুটি নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের উত্তরপত্রে দুটি করে সঠিক উত্তর ছিল।
পাশাপাশি অন্তত তিনটি নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের কোনো সঠিক উত্তর ছিল না। প্রকাশিত ওই পরীক্ষা ফলাফলে অসংখ্য ভুল এবং বড় ধরনের অসংগতি পাওয়া গেছে। এসব ত্রুটি ও অসংগতি রেখে মেধাতালিকা প্রণয়ন করার ফলে অনেক যোগ্য ও মেধাবী পরীক্ষার্থী মেডিকেল কলেজগুলোতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন—এসব তুলে ধরে রিটটি করা হয়।