চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি, আবেদন ফি কমানো, অযৌক্তিক কোটা বাতিলসহ ৯ দাবি না মানলে ‘শাটডাউন’

প্রথম আলো ফাইল ছবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষ স্নাতক শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা আগামী ১ মার্চ থেকে শুরু হচ্ছে। ইতিমধ্যে আবেদনও শুরু হয়েছে। এবার ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফি ও কোটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। শিক্ষার্থীরাও আবেদন ফি কমানো, অযৌক্তিক কোটা বাতিলসহ ৯ দাবিতে কয়েক দফা আন্দোলন করেছেন। দাবি মানা না হলে ক্যাম্পাস ‘শাটডাউনের’ হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তাঁরা।

গত বছরের মতো এ বছরও ৪৮টি বিভাগ ও ৬টি ইনস্টিটিউটে শিক্ষার্থী ভর্তি নেওয়া হচ্ছে। তবে আসনের সংখ্যার পরিবর্তন এসেছে। গত বছর ৪ হাজার ৯২৬টি আসনের বিপরীতে আবেদন নেওয়া হলেও এবার ৩০০ আসন কমে মোট ৪ হাজার ৬৯৬টি আসনের বিপরীতে আবেদন নেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে সাধারণ আসন ৪ হাজার ১১টি আর বাকি ৬৮৫ আসন কোটার জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে। অন্যদিকে গত বছর কোটা ছিল ৭৩৭টি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ আল আমিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগে শ্রেণিকক্ষে ৮০টি আসন থাকলেও ভর্তি করানো হতো ১২০ জন। এর ফলে অনেক সময় শিক্ষার্থীরা বসার জায়গা পেতেন না। এসব দিক বিবেচনায় এবার আসন কমানো হয়েছে।

আরও পড়ুন

১০ ধরনের কোটা

এবার ভর্তি পরীক্ষায় ১০ ধরনের কোটা রাখা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২১২টি আসন রাখা হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা কোটায়। শুধু মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানেরা এ কোটা পাবেন। দ্বিতীয় ১৬৬টি আসন রাখা হয়েছে ওয়ার্ড কোটায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সন্তানেরা এই কোটা পাবেন। এটি পৌষ্য কোটা নামেও পরিচিত। তৃতীয় ১১১টি আসন রাখা হয়েছে বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য। অন্যদিকে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী শিক্ষার্থীদের জন্য ৯৪টি, অনগ্রসর ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী শিক্ষার্থীদের ৬টি, অ-উপজাতি কোটা (পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত বাঙালি) ৫১টি, শারীরিক প্রতিবন্ধী কোটা ২০টি, বিকেএসপি কোটা ১১টি, পেশাদার খেলোয়াড় কোটা ৫টি ও দলিত জনগোষ্ঠী কোটা ৯টি।

অযৌক্তিক কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবির বিন জাবেদ প্রথম আলোকে বলেন, দাবিদাওয়ার বিষয়ে আজ প্রশাসন তাঁদের সঙ্গে কথা বলবে। যদি তাঁদের দাবি মানা না হয় তাহলে কঠোর আন্দোলনে যাবেন তাঁরা।

আরও পড়ুন

কোন অনুষদে কত আসন, কত কোটা

ভর্তি পরীক্ষার কোটা বণ্টন অনুষদভিত্তিক করা হয়। বর্তমানে সবচেয়ে বেশি কোটা রয়েছে কলা ও মানববিদ্যা অনুষদে। ১৫টি বিভাগ ও ইনস্টিটিউট মিলিয়ে এই অনুষদে মোট সাধারণ আসন ১ হাজার ২৪১টি। বিপরীতে ১৮৭টি আসন কোটার জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

অন্যদিকে বিজ্ঞান অনুষদে ১টি ইনস্টিটিউট ও ৫টি বিভাগ মিলিয়ে মোট আসন রয়েছে ৫৭২টি। এর মধ্যে সাধারণ আসন ৪৮৫টি আর কোটায় ৮৭টি। জীববিজ্ঞান অনুষদের ৯টি বিভাগ মিলিয়ে মোট আসন ৫৩৬টি। এর মধ্যে সাধারণ আসন ৪৪৫ আর বাকি ৯১টি আসন কোটার জন্য বরাদ্দ। প্রকৌশল অনুষদের মোট আসন ১৪০টি। এর মধ্যে ১২০টি সাধারণ আর ২০টি কোটার জন্য বরাদ্দ। মেরিন সায়েন্সস অ্যান্ড ফিশারিজ অনুষদের মোট আসন ১২২টি। এর মধ্যে সাধারণ ৯৫ আর ২৭টি কোটার জন্য বরাদ্দ।

আরও পড়ুন

আবার ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ৬টি বিভাগের মোট সাধারণ আসন রয়েছে ৬৪০টি। এ অনুষদে ৯২টি আসন কোটার জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে। সমাজবিজ্ঞান অনুষদে ৯টি বিভাগ মিলিয়ে মোট আসন রয়েছে ৮৫৮টি। এর মধ্যে সাধারণ আসন ৭৩০ আর বাকি ১২৮টি আসন কোটার জন্য। আইন অনুষদের মোট আসন ১২৯টি, এর মধ্যে সাধারণ আসন ১১০ আর বাকি ১৯টি আসন কোটার জন্য বরাদ্দ।

অন্যদিকে ২টি বিভাগ নিয়ে গঠিত শিক্ষা অনুষদের আসন রয়েছে ১৭৯টি। এর মধ্যে সাধারণ আসন ১৪৫ আর বাকি ৩৪টি আসন কোটার জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

আরও পড়ুন