এমবিবিএসে ভর্তিতে থাকছে না জেলা কোটা, সিদ্ধান্ত হয়েছে মুক্তিযোদ্ধার কোটা নিয়েও
মেডিকেল কলেজগুলোতে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা আগামী বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি এবং ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষা ৮ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে। এমবিবিএস ও ডেন্টাল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় পাস নম্বর ৪০।
সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি থাকা দ্বিতীয়বার ভর্তি–ইচ্ছুকদের ১০ নম্বর কাটা হবে। এ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় জেলা কোটা বাতিল করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নির্ধারিত সময়ে আসন পূরণ করা না গেলে সেসব আসনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভর্তির সুযোগ পাবেন। ২৪ ডিসেম্বর স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত ভর্তি পরীক্ষাসংক্রান্ত এক সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়েছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম প্রধান প্রথম আলোকে বলেন, ২৪ ডিসেম্বরের সভায় সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দিতে চাইলে ১০ নম্বর কাটা যাবে। এ শিক্ষাবর্ষে জেলা কোটাও থাকছে না। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় শিক্ষার্থী না পাওয়া গেলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা সেসব আসনে ভর্তির সুযোগ পাবেন।
সভা সূত্রে জানা গেছে, অনেকেই মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দেন। পরবর্তীকালে ভালো কোথাও ভর্তির সুযোগ পেলে পূর্বের আসনটি ফাঁকা হয়ে যায়। সরকারের অর্থ এতে অপচয় হয়। এ বিষয়ে কঠরতার জন্য মেডিকেল ও ডেন্টালে ভর্তি থাকা দ্বিতীয়বার ভর্তি–ইচ্ছুকদের ১৫ নম্বর কাটা নিয়ে আলোচনা হয়। পরে সবার পরামর্শে ১০ নম্বর কাটার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় নিরুৎসাহিত করতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি নেই, এমন শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয়বার ভর্তি–ইচ্ছুকদের জন্য আগের মতো ৫ নম্বর কাটার সিদ্ধান্ত বহাল আছে।
জানা গেছে, মেডিকেলের মোট আসনের ২০ শতাংশ বরাদ্দ থাকে জেলা কোটায় আবেদন করা শিক্ষার্থীদের জন্য। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে এ সুযোগ পাচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা।
২৪ ডিসেম্বর সভা শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘এমবিবিএস ও বিডিএস ভর্তি পরীক্ষায় ন্যূনতম নম্বর (পাস নম্বর) গতবারের মতো এবারও ৪০ রাখা হয়েছে। মাইগ্রেশনের সময় আমরা তিনবার দিচ্ছি। বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তির জন্য সব কলেজকে উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। অর্থাৎ শিক্ষার্থীরা সব কলেজে চয়েজ একবারে দিতে পারবেন, সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতেও একই নিয়ম বহাল।’ পরীক্ষা অনুষ্ঠানের সময় উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা ২০২৪ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি এবং ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষা ৮ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে দুই পরীক্ষা।
ব্রিফিংয়ে এবারের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় মোট আসনসংখ্যা উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সরকারি মেডিকেলের জন্য মোট আসন রয়েছে ৫ হাজার ৩৮০টি, এর মধ্যে এ বছরই ১ হাজার ৩০টি আসন বাড়ানো হয়েছে। বেসরকারি মেডিকেলের জন্য আসন রয়েছে ৬ হাজার ৩৪৮টি এবং আর্মি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের জন্য ৩৭৫টি আসন বরাদ্দ করা হয়েছে।
আবেদন শুরু ৪ জানুয়ারি
ভর্তি পরীক্ষার আবেদনের সময় উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এ বছর এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার জন্য বিদেশি শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন আগামী ৪ জানুয়ারি থেকেই। দেশি শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন ১০ জানুয়ারি থেকে। ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা আবেদনের সুযোগ পাবেন। ভর্তির জন্য ফি জমা নেওয়া হবে ২৪ জানুয়ারি থেকে। রোল বা আসন বরাদ্দ করা হবে ২৬ জানুয়ারি থেকে। পরীক্ষার প্রবেশপত্র বিতরণ করা হবে ৫ জানুয়ারি।
ভর্তি পরীক্ষায় অটোমেশন পদ্ধতি চালু হওয়ায় পরীক্ষা শেষে কোনো তদবির করা ছাড়াই উপযুক্ত মেধাবী প্রার্থীরা এ বছর সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সহজে ভর্তির সুযোগ পাবেন বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব জাহাঙ্গীর আলম, স্বাস্থ্যশিক্ষা বিভাগের সচিব আজিজুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ বি এম খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্যশিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক অধ্যাপক টিটু মিয়া, প্রাইভেট মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মুবিন খান, বিএমআরসি প্রতিনিধি অধ্যাপক শহীদুল্লাহ, সিলেট ওসমানী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এনায়েত হোসেন, বিএমআরসি প্রতিনিধি, প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ, হাসপাতালের প্রতিনিধিসহ উভয় মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।