ক্রিকেটে অনার্স পড়ুন বিকেএসপিতে
এইচএসসি ও সমমান পাস করে অনার্সে ভর্তি হওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন। কিন্তু মনটা পড়ে থাকে ক্রিকেট মাঠে। ইশ্ লেখাপড়ার সঙ্গে যদি ক্রিকেট ক্যারিয়ারটাও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারতাম! আপনার জন্য শুভ সংবাদ দিচ্ছে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি) https://bkspds.gov.bd/ ।
ক্রিকেটে অনার্স বা স্নাতক পড়ার ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে দেশের একমাত্র ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। গতবারের মতো এবার ক্রিকেটের সঙ্গে সাঁতার ও অ্যাথলেটিকসেও থাকছে অনার্স পড়ার সুযোগ। আবেদনের শেষ তারিখ ২৩ জুন, ২০২৪। ভর্তি পরীক্ষার নিয়মকানুন জানতে লিংকে ঢুঁ মারতে পারেন।
গত বছর থেকে প্রথমবারের মতো ক্রিকেট, অ্যাথলেটিকস ও সাঁতারে অনার্স বা স্নাতক চালু করেছে বিকেএসপি। প্রথম বছর সাঁতার ও অ্যাথলেটিকসে প্রত্যাশিত মানসম্মত ছাত্রছাত্রী পাওয়া যায়নি বিধায় এই দুটি খেলায় কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়নি। শুধু ক্রিকেটে ২৪ জন শিক্ষার্থীকে ভর্তি করানো হয়েছে বলে জানান বিকেএসপি কলেজের শিক্ষক। তাঁদের মধ্যে অর্ধেকই বিকেএসপি থেকে এইচএসসি পাস করা শিক্ষার্থী।
তাঁদের একজন ২০২০ সালে অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য শাহিন আলম। দীর্ঘদেহী এই পেসার গতকাল সোমবার প্রথম আলোকে বলছিলেন, ‘এখানে ভর্তি হওয়ায় পড়াশোনার সঙ্গে খেলাটাও ঠিকমতো চালিয়ে যেতে পারছি। অন্য কোথাও ভর্তি হলে ভালোমতো প্রাকটিস করতে পারতাম না। এখানে ভর্তি হওয়ায় প্রাকটিস করা নিয়ে আর কোনো চিন্তা নেই। কলেজের শিক্ষকদের সঙ্গে মাঠে কোচেরাও অনেক সহযোগিতা করেছেন আমাদের।’
সাম্প্রতিক সময়ে দেশের কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ফিজিক্যাল স্পোর্টস অ্যান্ড এডুকেশন’ এ স্নাতক ও স্নাতকোত্তর চালু আছে। কিন্তু সুনির্দিষ্টভাবে কোনো খেলার ওপর চার বছর মেয়াদি পড়াশোনার ব্যবস্থা আছে একমাত্র বিকেএসপিতেই। উচ্চশিক্ষার প্রতি আগ্রহী ক্রীড়াবিদদের জন্য যা এক সুবর্ণ সুযোগ।
আন্তর্জাতিক মানের খেলোয়াড় তৈরির সঙ্গে আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ক্রীড়াশিক্ষার ওপরও জোর দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। ২০২০ সালে সংশোধিত বিকেএসপি আইনে স্নাতকোত্তর পর্যন্ত চালু করতে পারবে তারা। বর্তমান অবস্থান থেকে বিকেএসপির অনার্স শিক্ষাব্যবস্থাকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন বিকেএসপি কলেজের প্রিন্সিপাল লেফটেনেন্ট কর্নেল মোহাম্মদ ইমরান হাসান। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বাস্তবিক ও ভবিষ্যৎ চাকরির বাজার মাথায় রেখে শিক্ষার পরিধিটা বাড়াতে চান তিনি। মোহাম্মদ ইমরান হাসান বলেন, ‘কিছু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিজিক্যাল স্পোর্টস অ্যান্ড এডুকেশন সাবেজেক্ট আছে। আমরাও ভবিষ্যতে সে পথে অনুসরণ করতে চাই। শিক্ষার্থীদের যুগোপযগী করে গড়ে তোলার জন্য আমরা এই সাবজেক্টটি ওপেন করতে চাই। এ ব্যাপারে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলমান রয়েছে।’
সাধারণত এইচএসসি পাস করে বিকেএসপি থেকে বের হয়ে যান খেলোয়াড়েরা। বাহিরে গিয়ে অন্যত্রে স্নাতকে পড়তে গিয়ে খেলাধুলার মূল স্রোত থেকে হারিয়ে যেতে দেখা গিয়েছে অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড়কে। বিশেষ করে অ্যাথলেটিকস, শুটিং, সাঁতারের মতো একক গেমের খেলোয়াড়দের জন্য বাহিরে অনুশীলনের জন্য তেমন সুযোগ নেই বললেই চলে। ফলে কলি থেকে পরিপূর্ণভাবে ফুল হয়ে ফোটার আগেই ঝরে গিয়েছে কৈশোরে সুরভী ছড়ানো অনেক প্রতিভা। ভবিষ্যৎ প্রতিভাবানদের সুরক্ষিত রাখতেই বিকেএসপির এমন উদ্যোগ। এ ছাড়া আগামী শতাব্দীর ক্রীড়াঙ্গনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দক্ষ ক্রীড়া জনবল তৈরি করা ছাড়া বিকল্প কোনো রাস্তাও নেই।
সিলেবাসের বিষয়বস্তু
নিয়মিত শিক্ষার্থীদের মতো নিজ নিজ খেলার অনুশীলন তো থাকছেই। বিকেএসপি ক্রীড়া কলেজ কর্তৃক প্রণীত সিলেবাসে জোর দেওয়া হচ্ছে ক্রীড়াবিজ্ঞানের ওপর। পাশাপাশি থাকছে ক্রীড়া ব্যবস্থাপনা ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক নির্ধারিত সর্বজনীন স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাসও। শেষ বর্ষে গিয়ে পড়তে হবে ক্রীড়া সাংবাদিকতার ওপর নির্দিষ্ট কোর্সও।
ভর্তি পরীক্ষার তারিখ
* ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে সাভারের বিকেএসপিতে ২৭ জুন সকাল ৯টায়। ভর্তি ফরম অনলাইনে পূরণ করে প্রিন্ট কপি পরীক্ষার দিন সঙ্গে আনতে হবে।
* আবেদনকারীকে স্বাস্থ্য ও ক্রীড়ামেধা যাচাই পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট খেলার প্রয়োজনীয় পোশাক ও সরঞ্জাম সঙ্গে আনতে হবে। পরীক্ষার ফলাফল আগামী ৪ জুলাই বিকেএসপির ওয়েবসাইট ও এই ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।
* ভর্তিসংক্রান্ত বিস্তারিত নিয়ম কলেজ চলাকালে (সকাল ৯টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত) বিকেএসপি, জিরানী, সাভারের কলেজ শাখা থেকে জানা যাবে।
* ভর্তি পরীক্ষার নিয়মকানুন জানতে লিংকে ঢুঁ মারতে পারেন