ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে নির্বাচিত তাওহিদ হৃদয়-মোরসালিন-জিকো–ঋতুপর্ণাসহ ৪৯ খেলোয়াড়
খেলোয়াড় কোটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে (স্নাতক প্রথম বর্ষ) ভর্তি হওয়ার জন্য প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়েছেন ৪৯ জন খেলোয়াড়। তাঁদের মধ্যে আছেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার মো. তাওহীদ হৃদয়, নারী দলের ক্রিকেটার নাহিদা আক্তার, জাতীয় দলের ফুটবলার শেখ মোরসালিন ও নারী ফুটবলার ঋতুপর্না চাকমাসহ আরও অনেকে। নতুন নীতিমালার আওতায় ভর্তি পরীক্ষা ছাড়াই তাঁরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।
খেলোয়াড়েরা সবাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটের মাধ্যমে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। গতকাল রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়েছে।
আজ সোমবার থেকে আগামী বুধবারের মধ্যে অফিস চলাকালে উপস্থিত হয়ে নির্ধারিত ফি দিয়ে বিষয় পছন্দ ফরম কলা অনুষদের ডিন কার্যালয় থেকে সংগ্রহ পূর্বক তা পূরণ করে জমা দিতে বলা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে খেলাধুলার মানোন্নয়ন, মানসম্মত খেলোয়াড় তৈরি এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য দক্ষ ক্রীড়াবিদ তৈরির লক্ষ্যে গত জুলাইয়ে নতুন নীতিমালায় খেলোয়াড় কোটায় আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে শিক্ষার্থী ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, খেলোয়াড় কোটায় প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন ফুটবলার আনিছুর রহমান জিকো, শেখ মোরসালিন, মো. মেরাজ হোসেন, ঋতুপর্না চাকমা ও রেহেনা আক্তার। জাতীয় দলের ক্রিকেটার মো. তাওহীদ হৃদয় ছাড়াও ক্রিকেটারদের মধ্যে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছেন আরিফুল ইসলাম, প্রান্তিক নওরোজ নাবিল, শাহরিয়ার সাকিব, মাহফিজুল ইসলাম, সাকিব শাহরিয়ার, আশরাফুল ইসলাম সিয়াম, নাহিদা আক্তার, দিপা খাতুন, রিয়া আক্তার শিখা, মিষ্টি রানী সাহা ও হালিমাতুল সাদিয়া।
অ্যাথলেটিকস খেলোয়াড়দের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন মো. খালিদ মুহিবুল্লাহ, নুসরাত জাহান রুনা, নেহা রানী অধিকারী ও জুয়ায়রীয়া অধিকারী। সাঁতার থেকে সুযোগ পেয়েছেন শ্রাবন্তী আক্তার। রোল বল থেকে সুযোগ পেয়েছেন ইসরাত জাহান রুমা। খো খো খেলোয়াড়দের মধ্যে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছেন মোছা. লামিয়া আক্তার লিমা ও মোছা. রাশিদা আক্তার। আর্চারি থেকে সুযোগ পেয়েছেন দিয়া সিদ্দিকী, হিমু বাছাড় ও প্রদীপ্ত চাকমা। উশু থেকে সুযোগ পেয়েছেন মো. আবদুল্লাহ আল সাদিক। ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়দের মধ্যে সুযোগ পেয়েছেন খন্দকার আবদুস সোয়াদ, ফারজানা সুলতানা ঐশী ও গৌরব সিংহ। বক্সিং খেলোয়াড় আফরা খন্দকার, বাস্কেটবল খেলোয়াড় অনিরুদ্ধ তালুকদার বর্ণও পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ।
ভলিবল খেলোয়াড়দের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন মো. রিফাত হোসেন, আলী আল মুরাম্মার রাকেশ সৈকত, মোসা. টুম্পা আক্তার ও তানভীর হোসেন তন্ময়। শ্যুটিং খেলোয়াড় মনিকা আহমেদ ইমা, কারাতে খেলোয়াড় জান্নাতুল ফেরদৌস সুমী, হ্যান্ডবল খেলোয়াড় নুসরাত জাহান নূপুরও পেয়েছেন ভর্তির সুযোগ। হকি খেলোয়াড়দের মধ্যে সুযোগ পেয়েছেন আলামিন মিয়া, আমিরুল ইসলাম, মো. আবেদ উদ্দিন, এম এম মেহরাব হাসান সামিন ও মো. রাকিবুল হাসান। জুডো খেলোয়াড় মো. সামসুদ্দোহা সৌরভ ও তায়কোয়ানডো খেলোয়াড় ফয়সাল আহমেদও নির্বাচিত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে খেলাধুলার মানোন্নয়ন, মানসম্মত খেলোয়াড় তৈরি এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য দক্ষ ক্রীড়াবিদ তৈরির লক্ষ্যে গত জুলাইয়ে নতুন নীতিমালায় খেলোয়াড় কোটায় আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে শিক্ষার্থী ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তখন কর্তৃপক্ষ বলেছিল, একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে প্রার্থীদের সরাসরি মৌখিক ও ব্যবহারিক পরীক্ষার মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে ভর্তির সুপারিশ করা হবে। ভর্তি-ইচ্ছুক প্রার্থীদের জাতীয় দলের বর্তমান খেলোয়াড় হতে হবে। এ ছাড়া প্রার্থীদের গত তিন বছরের মধ্যে জাতীয় দল, জাতীয় ‘এ’ দল এবং বয়সভিত্তিক অনূর্ধ্ব ২৩, ২০, ১৯, ১৭ কিংবা ১৬ দলের সদস্য হয়ে জাতীয় বা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন হতে হবে। অ্যাথলেটিকস, ব্যাডমিন্টন, টেবিল টেনিস, সাঁতার, টেনিস, দাবা, ক্যারমসহ বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় জাতীয় র্যাঙ্কিং অনুযায়ী ১ থেকে ৫-এর মধ্যে থাকা প্রার্থীরাও ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। আবেদনের শেষ তারিখে ভর্তি-ইচ্ছুক প্রার্থীদের বয়স অনূর্ধ্ব ২৩ বছর হতে হবে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংশ্লিষ্ট ইউনিটভিত্তিক ভর্তির ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে।
ডিন কার্যালয়গুলোর মাধ্যমে খেলোয়াড় কোটায় ভর্তি নেওয়া হয়েছে বলে প্রথম আলোকে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) ও ক্রীড়া কমিটির চেয়ারম্যান মুহাম্মদ সামাদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের পরিচালক শাহজাহান আলী সাংবাদিকদের বলেছেন, কলা অনুষদে খেলোয়াড় কোটায় আবেদন বেশি পড়েছে। দেড় শতাধিক আবেদনের মধ্যে প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার ও যাচাই-বাছাইয়ের পর তালিকা প্রকাশ করা হচ্ছে। যাঁরা আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন, সিনিয়র-জুনিয়র জাতীয় দলে রয়েছেন এবং একই সঙ্গে এসএসসি-এইচএসসিতে একটি নির্দিষ্ট ফলাফল আছে, তাঁরাই কেবল সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন।