‘চোরের ভিটা’ ও ‘চরকাউয়ার’ মতো থাকা প্রাথমিক স্কুলের নাম বদলাবে
চরকাউয়া, চোরের ভিটার মতো থাকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে নতুন নামকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। ইতিমধ্যে এ ধরনের প্রায় ২০০ বিদ্যালয় চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলোর নাম পরিবর্তন করে আগামী ছয় মাসের মধ্যে গেজেটে প্রকাশ করা হবে।
আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন এবং সচিব ফরিদ আহাম্মদ। মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অনেকগুলোর নাম শ্রুতিকটু ও নেতিবাচক ভাবার্থসংবলিত, যা শিশুর রুচি, মনন, বোধ ও পরিশীলিতভাবে বেড়ে ওঠার জন্য অন্তরায়। এ জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এসব বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে সুন্দর, রুচিশীল, শ্রুতিমধুর ও স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তি, বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ স্থানীয় ইতিহাস, সংস্কৃতির সঙ্গে মানানসই নামকরণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। গত ২৩ জানুয়ারি এ বিষয়ে একটি নীতিমালা জারি করা হয়েছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে পরিবর্তিত নামগুলোর গেজেটে প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এ সময় সচিব ফরিদ আহাম্মদ এ রকম কিছু নামের কথা বলতে গিয়ে বলেন, যেমন বরিশালের একটি বিদ্যালয়ের নাম চরকাউয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ময়মনসিংহের একটি বিদ্যালয়ের নাম চোরের ভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। তাঁরা এ রকম নামে থাকা প্রায় ২০০ বিদ্যালয় চিহ্নিত করেছেন। এসব নাম পরিবর্তন করা হবে।
সারা দেশে বর্তমানে মোট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৬৫ হাজার ৫৬৬টি।
নাম পরিবর্তনের বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা নীতিমালায় কোন কোন ক্ষেত্রে নাম পরিবর্তন করা হবে, তার কিছু কারণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রথমত, নাম শ্রুটিকটু ও নেতিবাচক এবং শিশুমনে ও জনমনে বিরূপ প্রভাব ফেলছে—এমন বিবেচিত হলে নাম পরিবর্তন হবে। দ্বিতীয়ত, বিদ্যালয়ের নাম দেশের যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ও সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির নামে থাকলে। তৃতীয়ত, নাম পরিবর্তনের বিষয়ে আদালতের বিশেষ কোনো নির্দেশনা থাকলে এবং চতুর্থত ভূমিকম্প, নদীভাঙনসহ নানাবিধ কারণে বিদ্যালয়ের নামের দ্বৈততা বা জটিলতা হলে তা পরিহারের জন্য বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করা যাবে।
কয়েক ধাপের কমিটির মাধ্যমে যাচাই-বাছাই শেষে নাম পরিবর্তনের আবেদন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। এরপর সচিবের সভাপতিত্বে গঠিত কমিটির সভায় নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব চূড়ান্ত হবে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ওই কমিটির উপদেষ্টা হিসেবে থাকবেন।