ভর্তিতে বয়স ও সময়ের বাধ্যবাধকতা তুলে দিতে চান শিক্ষামন্ত্রী
বর্তমানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে একবারই ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ আছে। কোথাও কোথাও দুবারের সুযোগ রাখা হয়েছে। আবার শিক্ষার বিভিন্ন স্তরের কোথাও কোথাও ভর্তিতে বয়সেরও বাধ্যবাধকতা আছে। শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি চান ভর্তিতে বয়স ও সময়ের এই বাধ্যবাধকতা উঠিয়ে দেওয়া হোক।
আজ বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ভর্তিতে বয়স ও সময়ের বাধ্যবাধকতা উঠিয়ে দেওয়ার পক্ষে নানা যুক্তি তুলে ধরে বক্তব্য দেন। দেশের উচ্চশিক্ষায় অ্যাক্রেডিটেশনবিষয়ক সম্মেলন এবং অ্যাক্রেডিটেশন প্রক্রিয়ার উদ্বোধন উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে অনেক কিছু করার আছে। সারা বিশ্ব যখন সুযোগ অবারিত করার কথা বলছে সবকিছুতে, যখন জীবনব্যাপী শিক্ষার কথা বলা হচ্ছে, তখন সব জায়গায় দেয়াল তোলা হচ্ছে কেন? কেন বলা হচ্ছে, এই বয়সের পর আর ভর্তি হতে পারবে না? কেন বলা হচ্ছে, একবারের পর আর ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারবে না? কেন বলা হচ্ছে, এ ধরনের পড়ার পর আর ওই ধরনের পড়ায় যেতে পারবে না? এটি বোধগম্য নয়। আজকে কেউ আইন নিয়ে পড়ছেন, তিনি কেন কাল ইঞ্জিনিয়ার বা ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার হতে পারবেন না? যেকোনো শিক্ষায় যাওয়ার সুযোগটি অবারিত হতে হবে।’
উচ্চশিক্ষায় অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তির সমালোচনা করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে একাডেমিক মাস্টারপ্ল্যান করার জন্য তাগিদ দেন দীপু মনি। তিনি বলেন, যে বিশ্ববিদ্যালয়টির বয়স ১০০ বছর হয়ে গেছে, সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০০ বছর আগে যে বিষয়গুলো চালু করেছিল, সেগুলো আজকের জন্য প্রতিটি বিষয় একইভাবে প্রাসঙ্গিক কি না, সেটাও দেখার বিষয়।
শিক্ষার মান বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, গুণগত মান অর্জন করতেই হবে। এর বিকল্প নেই। আবার এটিকে আন্তর্জাতিক মানে খাপ খাওয়ানোর প্রয়োজন আছে।
বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক মেসবাহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীক, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) রুটিন দায়িত্বে থাকা চেয়ারম্যান অধ্যাপক দিল আফরোজা বেগম, নিউজিল্যান্ডের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক টিম জে পার্ককিংসন, অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক মো. গোলাম শাহি আলম।
বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল আইন ২০১৭–এর অধীনে অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল প্রতিষ্ঠিত হয়। এই কাউন্সিলের মূল দায়িত্ব হলো দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করা, শিক্ষা কার্যক্রম যাচাই করে স্বীকৃতি দেওয়া। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিটি বিভাগ, কোর্স বা প্রোগ্রামের (ডিসিপ্লিন) জন্য পৃথক কমিটি গঠন করে এ সম্পর্কে যাচাই করবে কাউন্সিল। এরপর ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ‘অ্যাক্রেডিটেশন ও কনফিডেন্স’ সনদ দেওয়া হবে। এই কাউন্সিল যৌক্তিক কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা এর অধীন কোনো ডিগ্রি প্রোগ্রামের ‘অ্যাক্রেডিটেশন ও কনফিডেন্স’ সনদ বাতিলও করবে।