সশরীর পরীক্ষা চায় না ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীরা
করোনাভাইরাসের সংক্রমণে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সশরীর পরীক্ষা না নেওয়ার দাবি জানিয়েছে ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীরা। তারা ও এবং এ লেভেলের পরীক্ষা সশরীর নেওয়ার পরিবর্তে পোর্টফোলিও অব এভিডেন্স (পিওএ) ব্যবস্থায় দিতে চায়।
রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আজ শনিবার দুপুরে এক মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানায় দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ুয়া ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা জানায়, পোর্টফোলিও অব এভিডেন্স (পিওএ) হচ্ছে ক্লাসে উপস্থিতি, ক্লাস মূল্যায়ন পরীক্ষা, অ্যাসাইনমেন্ট, মক টেস্টসহ শ্রেণিকক্ষের সামগ্রিক অবস্থান বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের পদ্ধতি। করোনা সংক্রমণের বিষয়টি বিবেচনায় এ পদ্ধতিতে বিভিন্ন দেশে ইংরেজি মাধ্যমের পরীক্ষা হচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা বলছে, করোনার সংক্রমণের কারণে দুই বছর সশরীর ক্লাস বন্ধ ছিল। এতে তারা অনেক পিছিয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় সশরীর পরীক্ষা হলে ফলাফল খারাপ হবে এবং শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
মানববন্ধনে আমেরিকান স্ট্যান্ডার্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের এ লেভেলের পরীক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল আমিন জানায়, ‘সশরীর পরীক্ষা না নিয়ে প্রমাণভিত্তিক পরীক্ষা নেওয়া হোক—এটাই আমাদের দাবি। করোনার কারণে বাংলা মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের সিলেবাস কমিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে, যা ন্যায্য। আমরা চাই, সশরীর পরীক্ষা না নিয়ে মডেল টেস্ট, অ্যাসাইনমেন্ট ও উপস্থিতির ওপর ভিত্তি করে প্রমাণভিত্তিক পরীক্ষা নেওয়া হোক।’
আল আমিনের ভাষ্য, ‘গত দুই বছর করোনার কারণে ক্লাস হয়নি। অনলাইন ক্লাস হয়েছে। এ কারণে আমাদের প্রস্তুতিও ভালো নয়।’
শিক্ষার্থীরা আরও জানিয়েছে, দাবি আদায়ে প্রায় ছয় হাজার শিক্ষার্থীর স্বাক্ষর করা একটি চিঠি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে এখন ও এবং এ লেভেলের পরীক্ষা পরিচালনাকারী কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে চিঠি দেওয়া হলে এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
এ লেভেলের পরীক্ষার্থী জাইমা তৌহিদ মানববন্ধনে জানিয়েছে, কেমব্রিজ ও এডেক্সেল সংগঠন ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের জন্য একটাই বিকল্প দিয়েছে। সেটি হচ্ছে, পিওই পদ্ধতি অথবা শিক্ষকদের মূল্যায়ন (টিচার্স অ্যাসেসড গ্রেডস) পদ্ধতি দিয়ে সশরীরের পরিবর্তে পরীক্ষা নেওয়া। এ জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমতি প্রয়োজন।
জাইমা জানায়, ‘আমরা আবেদন করেছিলাম। শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, এ অনুমতি দেবেন। তবে শেষ মুহূর্তে সে অনুমতি মেলেনি। এটা আমাদের জন্য বৈষম্য। বাংলা মাধ্যমের শিক্ষার্থীরা কম সিলেবাসে পরীক্ষার সুযোগ পেয়েছে। তাই আমরাও প্রমাণভিত্তিক পরীক্ষা দিতে চাই।’
আরেক এ লেভেল শিক্ষার্থী লামিয়া আজম বলেছে, ‘কাল ১৭ এপ্রিলের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পিওএর অনুমোদন প্রয়োজন এবং সেটি কেমব্রিজ ও এডেক্সেল কর্তৃপক্ষকে পাঠানো প্রয়োজন। এরপর অনুমতি এলেও আমাদের জন্য সে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা কঠিন হয়ে যাবে।’
শিক্ষার্থীরা বলছে, পুরো সিলেবাসে পরীক্ষা দিতে গেলে তাদের পরীক্ষা খারাপ হবে, উচ্চশিক্ষা ব্যাহত হবে। এসব দাবি নিয়ে এ পর্যন্ত তারা চারবার সড়কে নেমেছে। কিন্তু তাদের কথা কেউ শুনছে না।