এ বছর জেএসসি পরীক্ষার সম্ভাবনা নেই
চলতি বছর জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা হওয়ার সম্ভাবনা নেই। জেএসসি পরীক্ষা নেওয়ার জন্য শিক্ষা বোর্ডগুলো এখনো কোনো নির্দেশনা পায়নি। তাই পরীক্ষা নেওয়ার জন্য যেসব প্রস্তুতির দরকার, তা–ও শুরু হয়নি।
আজ সোমবার এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার সময়সূচি ঘোষণা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা বোর্ডগুলো। সময়সূচি অনুযায়ী, এসএসসি পরীক্ষা ১৪ নভেম্বর শুরু হয়ে ২৩ নভেম্বর শেষ হবে। আর এইচএসসি পরীক্ষা ২ ডিসেম্বর শেষ হয়ে ৩০ ডিসেম্বর শেষ হবে।
প্রতিবছর নভেম্বর মাসে জেএসসি ও জেডিসি এবং পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে গত বছরও এই পরীক্ষা হয়নি। তখন পরীক্ষা ছাড়াই শিক্ষার্থীদের ওপরের শ্রেণিতে ওঠার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।
আজ ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ বছরও জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ১৪ নভেম্বর থেকে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়ে শেষ হবে ২৩ নভেম্বরে। আবার এইচএসসি পরীক্ষা ডিসেম্বর মাসজুড়ে হবে। সুতরাং নভেম্বর ও ডিসেম্বরে জেএসসসি ও জেডিসি পরীক্ষা নেওয়ার সম্ভাবনা নেই।
এ ছাড়া জেএসসি পরীক্ষা নেওয়ার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও ছাপা থেকে শুরু করে যেসব প্রস্তুতি নেওয়া দরকার, তা–ও নেওয়া হয়নি।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান নেহাল আহমেদ আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, জেএসসি পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে এখনো শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে কোনো নির্দেশনা পাননি। আরেকজন কর্মকর্তা জানান, জেএসসি পরীক্ষার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি জানাবেন।
প্রাথমিক সমাপনী নিয়েও আছে অনিশ্চয়তা
অন্যদিকে চলতি বছরের প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা পুনর্বিন্যাস করা (সংক্ষিপ্ত) পাঠ্যসূচিতে আগামী নভেম্বরের শেষে অথবা ডিসেম্বরের শুরুতে নেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এখন পঞ্চম শ্রেণির ক্লাসও প্রতিদিন নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এই পরীক্ষা নেওয়ার জন্য যেসব প্রস্তুতি দরকার, সে রকম প্রস্তুতি নেই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে। ফলে এ পরীক্ষা নিয়েও আছে এক ধরনের অনিশ্চয়তা। পরীক্ষারও তারিখও এখনো ঘোষণা হয়নি।
জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, এই পরীক্ষার বিষয়ে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
এসএসসিতে সোয়া ২২ লাখ পরীক্ষার্থী, এইচএসসিতে ১৪ লাখ
স্বাভাবিক সময়ে এসএসসি ফেব্রুয়ারি মাসে এবং এইচএসসি পরীক্ষা এপ্রিলে শুরু হতো। কিন্তু করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে ওই সময়ে এসব পরীক্ষা নেওয়া যায়নি। একপর্যায়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘোষণা দেয় চলতি বছর এসএসসি ও সমমান এবং এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুধু গ্রুপভিত্তিক (বিজ্ঞান, মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা ইত্যাদি) তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ে সময় ও নম্বর কমিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হবে। আবশ্যিক বিষয় ও চতুর্থ বিষয়ের কোনো পরীক্ষা হবে না। এগুলো জেএসসি ও সমমান এবং এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার নম্বরের ভিত্তিতে ‘বিষয় ম্যাপিং’ করে নম্বর দেওয়া হবে।
আগে থেকেই বলা হয়েছিল, নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে এসএসসি এবং ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। সেই সিদ্ধান্তের আলোকে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ২৩ সেপ্টেম্বর সময়সূচি প্রকাশ করে জানায় দাখিল পরীক্ষা শুরু হবে ১৪ নভেম্বর। তারই ধারাবাহিকতায় আজ এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার সময়সূচি ঘোষণা করা হয়েছে। সময়সূচি অনুযায়ী নভেম্বরে এসএসসি এবং ডিসেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষা হবে। এবার এসএসসি ও সমমানে মোট পরীক্ষার্থী ২২ লাখ ২৭ হাজারের কিছু বেশি। আর এইচএসসি ও সমমানে মোট পরীক্ষার্থী ১৪ লাখের বেশি।