২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এল ঢাবি, টিকা নিশ্চিত হলেই খুলবে হল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ফাইল ছবি

করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ১৭ মে আবাসিক হল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শিক্ষার্থীদের করোনার টিকা নিশ্চিত হওয়ার আগপর্যন্ত হল বন্ধই থাকছে। টিকা নিশ্চিত হওয়ার অন্তত চার সপ্তাহ পর হলে তোলা হবে শিক্ষার্থীদের।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটি গতকাল বৃহস্পতিবার এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়। বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য (শিক্ষা) এ এস এম মাকসুদ কামাল। করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছরের ২০ মার্চ হলগুলো খালি করে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়টির স্বাভাবিক শিক্ষাকার্যক্রম বন্ধ আছে গত বছরের ১৮ মার্চ থেকে। এর মধ্যে অনলাইনে ক্লাস ও দুটি সেমিস্টারের মিডটার্ম পরীক্ষা হলেও আটকে আছে সব বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা।


গত ২২ ফেব্রুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে বন্ধ থাকা দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শ্রেণিকক্ষে সরাসরি ক্লাস শুরু হবে আগামী ২৪ মে থেকে। তার এক সপ্তাহ আগে ১৭ মে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আবাসিক হল খুলে দেওয়া হবে। ২৪ মের আগে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় কোনো পরীক্ষা হবে না। ২৩ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা পরিষদের (একাডেমিক কাউন্সিল) সভা ডেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্যও সরকারের এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান তখন বলেছিলেন, বিশেষজ্ঞ মত অনুযায়ী, করোনা টিকার প্রথম ডোজের চার সপ্তাহ পর ইমিউনিটি হয়। তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল সরকারের প্রতি অনুরোধ ও বিনম্র আহ্বান জানিয়েছে, ১৭ এপ্রিলের মধ্যে যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীকে টিকার প্রথম ডোজের আওতায় আনা হয়। সেটি হলে ১৭ মে থেকে তাঁরা শিক্ষার্থীদের হলে উঠাতে পারেন।


এরপর করোনাভাইরাসের টিকা পেতে ২৪ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত নির্ধারিত ওয়েব লিংকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিবন্ধন করার নির্দেশনা দেয় কর্তৃপক্ষ। সেখানে ৩০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী নিবন্ধন করেন। কিন্তু ১৭ এপ্রিলের পর দুই সপ্তাহ পেরোতে চললেও এখন পর্যন্ত করোনা টিকা নিশ্চিত করা যায়নি, এ ব্যাপারে কোনো হালনাগাদ তথ্যও পাওয়া যাচ্ছে না।


জানতে চাইলে সহ–উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামাল আজ শুক্রবার প্রথম আলোকে বলেন, বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটিতে হওয়া সিদ্ধান্ত হলো পূর্বঘোষিত তারিখে (১৭ মে) হল খোলা হচ্ছে না। করোনা টিকার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব লিংকে ৩০ হাজার শিক্ষার্থী নিবন্ধন করেছেন। কিন্তু টিকা এখনো নিশ্চিত হয়নি। করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির পরিস্থিতি ও শিক্ষার্থীদের করোনা টিকা নিশ্চিত না হওয়ার প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটি নতুন সিদ্ধান্তটি নিয়েছে। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা ও টিকা নিশ্চিতের পরই শিক্ষার্থীদের হলে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

জরুরি ক্ষেত্রে যোগাযোগ করে সেবা পাওয়া যাবে


করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আগামী ৫ মে পর্যন্ত সরকারের আরোপিত বিধিনিষেধের কারণে গণপরিবহন ও সব ধরনের অফিস বন্ধ রয়েছে। বন্ধ আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু রেজিস্ট্রার ভবনও। তাই জরুরি প্রয়োজনে সমস্যায়ও পড়ছেন কেউ কেউ।


যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডির অফার পেয়েছেন শামীম হাসান (ছদ্মনাম)। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘লকডাউনের মধ্যে অফারটা পেয়েছি। আগামী সেপ্টেম্বরে সেখানে যেতে হবে। এখন আমার একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট মূল্যায়ন করার জন্য আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের কাছে পাঠানো হবে। ওই ট্রান্সক্রিপ্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবনের মাধ্যমে পাঠাতে হয়। এই মূল্যায়ন হতে প্রায় তিন মাস সময় লাগে। রেজিস্ট্রার ভবন এখন বন্ধ থাকায় এটা পাঠাতেই পারছি না।’
জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. এনামউজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘রেজিস্ট্রার ভবন বন্ধ থাকলেও অতি জরুরি প্রয়োজনের ক্ষেত্রে যোগাযোগ করলে আমরা সহযোগিতা করছি।’


সহ-উপাচার্য মাকসুদ কামালও বললেন, ‘জরুরি প্রয়োজনের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু অফিস সীমিত পরিসরে খোলা রয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট শাখায় যোগাযোগ করতে হবে। এ ছাড়া উপাচার্য কার্যালয়ের কিংবা আমার ই-মেইলে যোগাযোগ করা যেতে পারে। একাডেমিক বিষয়ে যোগাযোগ করলে আমরা সহযোগিতা করব।’