করোনা ঠেকাতে ব্যাংকের জন্য ১৩ নির্দেশনা
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ব্যাংকগুলোকে ১৩টি নির্দেশনা পালন করতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিশেষ করে ঈদের আগে ব্যাংকে ভিড়ের কারণে যাতে ভাইরাস ছড়িয়ে না পড়ে, সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রেও বিভিন্ন নির্দেশনা মানতে বলা হয়।
নির্দেশনায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
১৩ মে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে লেখা এক চিঠিতে কঠিন এই পরিস্থিতিতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে এই ১৩টি নির্দেশনা মেনে চলে, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেছিল। তারই পরিপ্রেক্ষিতে গত রোববার এ বিষয়ে এক নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ব্যাংক খোলার আগে মহামারিপ্রতিরোধী সামগ্রী যেমন মাস্ক, জীবাণুমুক্তকরণ সামগ্রী ইত্যাদি সংগ্রহ করতে হবে। আপৎকালীন পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। আপৎকালীন সংক্রমিত বস্তুর ডিসপোজাল এলাকা স্থাপন, সব ইউনিটের জবাবদিহি নিশ্চিত, কর্মীদের প্রশিক্ষণ জোরদার ও স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিদিন কর্মীদের স্বাস্থ্যবিষয়ক ব্যবস্থা নথিভুক্ত করার পাশাপাশি যাঁরা অসুস্থ অনুভব করবেন, তাঁদের সঠিক সময়ে চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। ব্যাংকের প্রবেশমুখে তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণকারী যন্ত্র স্থাপন বা তাপমাত্রা পরিমাপের ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং শুধু স্বাভাবিক তাপমাত্রার ব্যক্তিদের ঢুকতে দিতে হবে।
এ ছাড়া নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ব্যাংকের ভেতরে বায়ু চলাচল বৃদ্ধি, কেন্দ্রীয়ভাবে শীতাতপ যন্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে যন্ত্রের স্বাভাবিক ক্রিয়া নিশ্চিত করতে হবে। বিশুদ্ধ বাতাস বৃদ্ধি এবং এয়ারসিস্টেমের ফিরে আসা বাতাসকে বন্ধ রাখতে হবে। সবার ব্যবহার্য সুবিধাগুলো নিয়মিত পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করতে (যেমন কিউইং মেশিন, কাউন্টার, চিফার মেশিন, রোলার পেন, ক্যাশ কাউন্টার, এটিএম, জনসাধারণের বসার জায়গা ইত্যাদি) হবে। জনসাধারণের চলাচলের এলাকা যেমন ব্যাংকিং লবি, এলিভেটর এবং তথ্যকেন্দ্র পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং ময়লা সময়মতো পরিষ্কার করতে হবে।
এটিএমে প্রবেশ করার লাইনে দাঁড়ানোর বা ব্যবহারের সময় নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার কথা মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য লাইনে এক মিটার দূরত্ব বজায় রাখার ব্যবস্থা স্থাপন করতে হবে।
ব্যবসায়িক কাজে ব্যাংকে আসা মানুষের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণের কথা বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, প্রতিদিনের ব্যবসায়িক কাজের জন্য ই-ব্যাংকিং অথবা এটিএম ব্যবহারের পরামর্শ দিতে হবে।
ব্যাংকের স্টাফদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা জোরদারের পাশাপাশি সবার মাস্ক পরা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকে আগত সবাই যাতে মাস্ক পরেন, সেটিও নিশ্চিত করতে হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরও বলেছে, যদি নিশ্চিত কোভিড–১৯ রোগী পাওয়া যায়, তবে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুসারে ব্যাংকে জীবাণুমুক্তকরণ কার্যক্রম চালাতে হবে এবং একই সঙ্গে এয়ার কন্ডিশনিং ও ভেন্টিলেশন সিস্টেমকে পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
মাঝারি ও উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার ব্যাংকগুলোকে তাদের সেবার সময় সংক্ষিপ্ত করতে ও আগত লোকের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করার কথাও বলা হয়েছে নির্দেশনায়।