আগ্রহ ৬০-৮০ লাখের ফ্ল্যাটে
চাকরিজীবী বা নিম্নমধ্যম আয়ের মানুষজন সাধারণত ৬০ থেকে ৮০ লাখ টাকার মধ্যে তিন শয়নকক্ষের ফ্ল্যাট খোঁজেন। সঙ্গে চান ড্রয়িং, ডাইনিং, বারান্দা ও দুটি বা তিনটি বাথরুম। আর ফ্ল্যাটের আকার হবে এক হাজার থেকে দেড় হাজার বর্গফুট।
রিহ্যাবের পাঁচ দিনব্যাপী শীতকালীন আবাসন মেলায় এমন ছোট আকারের ফ্ল্যাটের চাহিদা বেশি। মেলায় অংশ নেওয়া কয়েকটি আবাসন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে গতকাল বৃহস্পতিবার কথা বলে এমনটাই জানা গেল।
মেলা মোটামুটি জমে উঠেছে। প্রথম দুই দিনে পাঁচ হাজারের বেশি ক্রেতা-দর্শনার্থী মেলায় এসেছেন। অনেক প্রতিষ্ঠানের দু-একটি ফ্ল্যাট ইতিমধ্যে বিক্রি হয়েছে—মেলার তৃতীয় দিনে গতকাল এমনটাই জানালেন রিহ্যাবের সহসভাপতি সোহেল রানা।
মেলায় ক্রিডেন্স হোল্ডিংস ঢাকার লালমাটিয়া, ধানমন্ডি, কলাবাগান, গ্রিন রোড, উত্তরা ও মোহাম্মদপুরের ২২টি ফ্ল্যাট প্রকল্প নিয়ে এসেছে।
এসব প্রকল্পে তাদের ফ্ল্যাট আছে ১৮০টির বেশি। প্রকল্পভেদে ১৩০০ থেকে ২৩০০ বর্গফুট আয়তনের ফ্ল্যাটের বর্গফুটপ্রতি দাম সাড়ে ৯ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা।
জানতে চাইলে ক্রিডেন্সের কর্মকর্তা শিকদার নাসের আহমেদ বলেন, নিম্নমধ্যম আয়ের মানুষের মধ্যে এক হাজার থেকে দেড় হাজার বর্গফুট আয়তনের ফ্ল্যাটের চাহিদা বেশি। তাঁরা নিজেদের সঞ্চয় ও ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে গৃহঋণ নিয়ে ফ্ল্যাট কিনতে চান। ঋণসুবিধা পাওয়ায় সরকারি কর্মচারীরাও আসছেন। তবে ঋণের শর্তানুযায়ী রেডি ফ্ল্যাট চাচ্ছেন। তিনি জানান, মেলায় গতকাল পর্যন্ত তাঁদের তিনটি ফ্ল্যাট বিক্রির চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার প্রায় ২৫টি আবাসিক ও বাণিজ্যিক প্রকল্পের দেড় হাজার ফ্ল্যাট নিয়ে এসেছে ট্রপিক্যাল হোমস। এসব ফ্ল্যাটের আকার ৯৭৩ থেকে ৩৮৫০ বর্গফুট। প্রতি বর্গফুটের দাম ৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা। এর মধ্যে সরকারের সঙ্গে মিরপুরের কালশীতে ইন্টিগ্রেটেড টাউনশিপ ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প রয়েছে, যেখানে ১২টি আবাসিক ও ১টি বাণিজ্যিক ভবন হচ্ছে। তাতে ৯০০টি ফ্ল্যাট থাকবে। ১২০০ থেকে ২৪০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাটের দাম ছয় হাজার থেকে সাড়ে ছয় হাজার টাকা। গুলশানের প্রকল্পে ফ্ল্যাট বুকিং দিলে ২৫-৩০ লাখ টাকার নতুন গাড়ি উপহার দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। সেখানে ৩৭৫০ থেকে ৩৮৫০ বর্গফুটের ফ্ল্যাটের প্রতি বর্গফুটের দাম ৩০ হাজার টাকা। ইতিমধ্যে ২টি ফ্ল্যাটের বুকিং পেয়েছে তারা।
>
- রিহ্যাবের আবাসন মেলা
- প্রথম দুই দিনে পাঁচ হাজারের বেশি ক্রেতা-দর্শনার্থী মেলায় এসেছেন
- কাল শেষ হচ্ছে পাঁচ দিনের এই মেলা
এসব তথ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির বিপণন ব্যবস্থাপক সৈয়দ রাব্বি ইবনে ইসলাম বলেন, ‘মেলায় ১১০০ থেকে ১৩০০ বর্গফুট আয়তনের ফ্ল্যাটের ক্রেতাই বেশি। আমরা সব ধরনের ক্রেতার জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণ করায় চাহিদা বেশ ভালোভাবেই মেটাতে পারছি।’
রিহ্যাবের মেলায় আনোয়ার ল্যান্ডমার্ক ধানমন্ডি, জিগাতলা, গুলশান, বনানী, বারিধারা, বসুন্ধরা, উত্তরা, মিরপুর ও শ্যামলীর ২০টি প্রকল্প এনেছে। ৯৫৫ থেকে ৬০০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট আছে তাদের। প্রতি বর্গফুটের দাম ৬ হাজার থেকে ২৬ হাজার টাকা।
প্রতিষ্ঠানটির জ্যেষ্ঠ সহকারী ব্যবস্থাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, চাকরিজীবীরা ৬০-৮০ লাখ টাকার মধ্যে ফ্ল্যাট চান। তবে তাঁদের একটা বড় অংশের গৃহঋণ নিতে হয়। সেই ঋণের কিস্তি পরিশোধের পাশাপাশি যাতে বাসাভাড়া গুনতে না হয়, সে জন্য তাঁরা চান রেডি ফ্ল্যাট।
রাকীন ডেভেলপমেন্ট মেলায় মিরপুরের বিজয় রাকীন সিটি ও কাঁচপুরের রাকীন ট্র্যাঙ্কুয়েল টাউন—এ দুটি প্রকল্প নিয়ে এসেছে। মিরপুরে ৫০ বিঘা জমির ওপর কনডোমিনিয়াম প্রকল্পটিতে ১৫৫৩ থেকে ১৮৭২ বর্গফুটের ১ হাজার ৯৫০টি ফ্ল্যাট আছে। তার মধ্যে বিক্রির বাকি আছে ৮০টি ফ্ল্যাট। প্রতি বর্গফুটের দাম ৬৪০০ থেকে ৭৮০০ টাকা। অন্যদিকে ১২০ বিঘা জমির ওপর কাঁচপুরের প্রকল্পটিতে প্রথম ধাপে ৭৭৪টি ফ্ল্যাট নির্মাণাধীন। ৯০০ থেকে ১৬৫০ বর্গফুট আয়তনের এসব ফ্ল্যাটের দাম ৩৮০০ থেকে ৫৩০০ টাকা। তাদের প্রকল্পে স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, শপিং সেন্টারসহ নানা রকম সুযোগ-সুবিধা মিলবে।
রাকীনের বিক্রয় ব্যবস্থাপক ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‘কাঁচপুরের প্রকল্পে আমরা ৩৫ লাখ টাকায় ৯০০ বর্গফুট আয়তনের ফ্ল্যাট দিচ্ছি। সাশ্রয়ী দাম ও নানা রকম সুযোগ-সুবিধা থাকায় ব্যাপক সাড়া মিলছে। ইতিমধ্যে প্রকল্পের ২৫০টি ফ্ল্যাট বিক্রি শেষ।’