তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, ‘উৎপাদন অংশীদারি চুক্তি (পিএসসি) ২০১৯’ অনুমোদন দিয়েছে সরকার বিদেশি কোম্পানির স্বার্থ রক্ষা করার জন্য। এ পিএসসিতে দেশের স্বার্থ নেই। সাগরে তেল-গ্যাস পাওয়া গেলে এ পিএসসি অনুযায়ী তা বিদেশি রপ্তানি করা হবে। অবিলম্বে এ পিএসসি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন আনু মুহাম্মদ।
আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘পিএসসি ২০১৯’ বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ দাবি করেন।
সমাবেশে আনু মুহাম্মদ বলেন, দেশে গ্যাস নেই এমন অজুহাতে সুন্দরবন ধ্বংসের কয়লাভিত্তিক রামপাল ও পাবনায় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র করা হচ্ছে। বিদেশ থেকে এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) আমদানি করা হচ্ছে। অথচ সাগরের তেল গ্যাস উত্তোলনে যে পিএসসি অনুমোদন দিয়েছে সরকার সেখানে গ্যাস রপ্তানির বিধান রাখা হয়েছে। এটি দেশের জনগণের সঙ্গে তামাশা বলে তিনি মন্তব্য করেন।
আনু মুহাম্মদ বলেন, এবারের পিএসসিতে বলা হয়েছে বিদেশি কোম্পানি যদি বেশি দামে গ্যাস বিক্রির সুযোগ পায় তাহলে রপ্তানি বাঁধা দিতে পারবে না সরকার। এর আগে বিএনপি–জামাত সরকারের আমলে জাতীয় কমিটি আন্দোলন করে ভারতে গ্যাস রপ্তানি প্রতিহত করেছিল। তখন যদি গ্যাস রপ্তানি করতে পারত সরকার তার পরিণতি ভয়াবহ হতো বলে মন্তব্য করেন আনু মুহাম্মদ।
আনু মুহাম্মদ বলেন, সরকার আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের কথা বলে সহায়তা চাচ্ছে। অথচ দেশের জলবায়ু রক্ষা করে যে সুন্দরবন তা ধ্বংস করার জন্য রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে। উপকূল অঞ্চলজুড়ে জাপানা, চীন ও ভারতকে বিদ্যুৎকেন্দ্র দেওয়া হয়েছে। দেশের গ্যাস দেশে থাকলে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কোনো প্রয়োজন নেই। তিনি অবিলম্বে পিএসসি ২০১৯ বাতিলের দাবি জানান।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স। তিনি বলেন, সরকার দেশের গ্যাস না তুলে গ্যাসের কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছে। এরপর কথিত সংকট সামাল দিতে বিদেশ থেকে এলএনজি আমদানি করছে। এখন সেই সরকার আবার গ্যাস রপ্তানির বিধান রেখে পিএসসির অনুমোদন দিয়েছে। এই দ্বৈত নীতির অবসানের আহ্বান জানান।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল রাজধানীর তোপখানা রোড হয়ে পল্টনে গিয়ে শেষ হয়।