দাম অনেক বাড়বে, স্বপ্নই থেকে যাবে স্মার্টফোন
>
বাজেটে স্মার্টফোন আমদানিতে শুল্ক ১৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। এতে মোট করভার দাঁড়িয়েছে ৫৭ শতাংশের বেশি। ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা, এতে স্মার্টফোনের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যাবে। এ নিয়ে কথা বলেছেন বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ব্যবসায়ী সমিতির (বিএমবিএ) সভাপতি মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রাজীব আহমেদ
প্রথম আলো: স্মার্টফোনের নতুন শুল্ক বাজারে কী প্রভাব ফেলবে?
নিজাম উদ্দিন: এতে সাধারণ মানুষের গুণগত মানসম্পন্ন স্মার্টফোনের স্বপ্ন আর পূরণ হবে না। অন্যদিকে অবৈধ আমদানি বাড়বে। এখন অনেক মানুষ কেনাকাটা করতে ভারতে যান। কেউ যদি ভালো একটি স্মার্টফোন কিনতে চান, তাহলে বাংলাদেশে যেটার দাম পড়বে ৫০ হাজার টাকা, ভারতে পড়বে ৩০ হাজার টাকা। ফলে ৫০ হাজার টাকার ফোন ভারত থেকে ৩০ হাজার টাকায় কিনতে পারবেন, আবার বাকি ২০ হাজার টাকায় ঘুরেও আসতে পারবেন।
প্রথম আলো: দাম কতটুকু বাড়তে পারে?
নিজাম উদ্দিন: বিদেশে যে ফোনটির দাম ১০ হাজার টাকা, সেটি দেশে ২০ হাজার টাকা ছাড়িয়ে যাবে। একদিকে করের কারণে দাম অনেক বেড়ে যাবে। পাশাপাশি বিক্রি কমে যাবে। এতে দোকানমালিকেরা ইউনিটপ্রতি মার্জিন (লাভ) বাড়িয়ে বিক্রি করতে বাধ্য হবেন। সব মিলিয়ে দাম দ্বিগুণ হবে।
প্রথম আলো: সরকার তো বলছে, দেশীয় শিল্পকে সুরক্ষা দিতে কর বাড়ানো হয়েছে।
নিজাম উদ্দিন: দেশে মুঠোফোন কারখানা করার পক্ষে আমরাই প্রথম কথা বলা শুরু করেছিলাম। আমরা চাই দেশে কারখানা হোক। কিন্তু কথা হলো, এখনো এত বেশি শুল্ক আরোপের সময় হয়নি। অনেক ব্র্যান্ডই এখানে কারখানা করতে চায়। কিন্তু হুট করে সেটা হয় না। এখন যে শুল্ক কাঠামো, তাতে বেশ কিছু বড় ব্র্যান্ড বিনিয়োগ পরিকল্পনা বাদ দিয়ে বাংলাদেশ ছাড়বে।
প্রথম আলো: তাহলে আপনারা কী চান?
নিজাম উদ্দিন: করনীতির ক্ষেত্রে দেশীয় শিল্পের কথা যেমন বিবেচনা করতে হবে, তেমনি ভোক্তার কথাও মাথায় রাখা উচিত। আবার দেশীয় ব্যবসায়ীদের কথাও বিবেচনা করতে হবে। এ কারণে শুল্কহার হতে হবে ভারসাম্যপূর্ণ। দেশে যে কয়টা কারখানা হয়েছে, তারা সামান্য কয়েকটি মডেল নিয়ে কাজ করে। দেশে কিন্তু শত শত মডেলের ফোন আমদানি হয়। মুঠোফোন ব্যবসার সঙ্গে প্রচুর মানুষ জড়িত। তাঁদের জীবন-জীবিকার কথাও তো মাথায় রাখতে হবে।
প্রথম আলো: দেশীয় কারখানা কি কোনো সুবিধা পায়?
নিজাম উদ্দিন: একসময় কাঁচামাল আমদানিতে ৫০ শতাংশ কর ছিল। এখন সেটা নগণ্য পর্যায়ে নামিয়ে এনেছে সরকার। আমরা স্বাগত জানাই। দেশের কারখানাগুলো এখন মাত্র বাজারের চাহিদার ১০ শতাংশ স্মার্টফোন সরবরাহ করতে পারে। তাদের জন্য ৩২ শতাংশের মতো সুরক্ষা ছিল। তারা কর অবকাশ সুবিধাও পায়। মনে রাখতে হবে, বেশি সুরক্ষা কোনো শিল্পকে প্রতিযোগিতা সক্ষম হিসেবে গড়ে তোলে না।