বিজিএমইএ ভবন থেকে মালপত্র সরানোর সুযোগ দিল রাজউক
হাতিরঝিল প্রকল্প এলাকায় অবৈধভাবে নির্মিত বিজিএমইএ ভবন থেকে নিজেদের মালপত্র সরিয়ে নিচ্ছে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত তারা মালপত্র সরাতে পারবে। তারপর আবারও ভবনের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেবে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।
বিজিএমইএ ভবন থেকে মালপত্র সরিয়ে নিতে গতকাল বুধবার বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান রাজউকে আবেদন করে। তার ভিত্তিতে আজ বৃহস্পতিবার সকাল নয়টা থেকে মালপত্র সরাতে ভবনের ফটকের তালা খুলে দেয় রাজউক কর্তৃপক্ষ। তারপর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ করা শ্রমিকেরা বিভিন্ন ফ্লোর থেকে মালপত্র নামাতে শুরু করে।
জানতে চাইলে রাজউকের পরিচালক (প্রশাসন খন্দকার) অলিউর রহমান বেলা দুইটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত আমরা মালপত্র সরানোর সুযোগ দেব। পরে আবার তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হবে। পরে প্রয়োজন হলে আবারও মালপত্র সরানোর সুযোগ দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।’
বিজিএমইএ ভবনের চারটি তলা ব্যবহার করত ডিবিএল গ্রুপ। নিজেদের মালপত্র সরিয়ে নিতে প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ৬০০ শ্রমিক নিয়োগ করেছে। মালপত্র সরানোর কাজ তদারক করছেন গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াহেদ।
জানতে চাইলে আবদুল ওয়াহেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘মালপত্র সরিয়ে নিতে আমরা রাজউকের কাছে সাত দিন সময় চেয়েছি। আজ দুপুর পর্যন্ত ৬৫-৭০ শতাংশ মালপত্র সরাতে পেরেছি। আরও ২-৩ দিন লাগতে পারে। আশা করছি, রাজউক আমাদের সেই সময় দেবে।’
জমির স্বত্ব না থাকা ও জলাধার আইন লঙ্ঘন করায় হাতিরঝিল প্রকল্প এলাকায় বিজিএমইএর বর্তমান ভবনটি উচ্চ আদালতের নির্দেশে ভেঙে ফেলতে হবে। সে জন্য ভবনটি ছাড়তে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষকে সময় দিয়েছিলেন আদালত। বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ তাদের দপ্তর উত্তরায় নির্মাণাধীন নতুন ভবনে স্থানান্তর করে। সোমবার থেকে সেখানে দাপ্তরিক কাজ শুরু হয়। মঙ্গলবার সারা দিন মালপত্র সরিয়ে নেওয়ার সময় দিয়ে সন্ধ্যায় ভবনের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। গতকাল বুধবার সারা দিন তালা ঝোলানোই ছিল।
২০১১ সালের ৩ এপ্রিল হাইকোর্ট এক রায়ে ওই ভবনকে ‘হাতিরঝিল প্রকল্পে একটি ক্যানসারের মতো’ উল্লেখ করে রায় প্রকাশের ৯০ দিনের মধ্যে ভেঙে ফেলতে নির্দেশ দেন। এর বিরুদ্ধে বিজিএমইএ লিভ টু আপিল করে, যা ২০১৬ সালের ২ জুন আপিল বিভাগে খারিজ হয়। রায়ে বলা হয়, ভবনটি নিজ খরচে অবিলম্বে ভাঙতে আবেদনকারীকে (বিজিএমইএ) নির্দেশ দেওয়া যাচ্ছে। এতে ব্যর্থ হলে রায়ের কপি হাতে পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে রাজউককে ভবনটি ভেঙে ফেলতে নির্দেশ দেওয়া হলো। পরে ভবন ছাড়তে উচ্চ আদালতের কাছে সময় চায় বিজিএমইএ। প্রথমে ছয় মাস ও পরে সাত মাস সময়ও পায় তারা। সর্বশেষ গত বছরের এপ্রিলে নতুন করে এক বছর সময় পায় সংগঠনটি। সে সময় তারা মুচলেকা দেয়, ভবিষ্যতে আর সময় চাওয়া হবে না।