বাংলাদেশে ৭৩% জাপানি কোম্পানি ব্যবসা বাড়াবে

বাংলাদেশে ব্যবসা করছে এম ৬২ শতাংশ জাপানি কোম্পানি বলেছে, ২০১৯ সালে তাদের পরিচালন মুনাফা বাড়বে। এ হার এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় ২০ দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। বাংলাদেশের ওপরে আছে কেবল লাওস। প্রতিবেশী মিয়ানমার, ভারত ও পাকিস্তান বাংলাদেশের পরে রয়েছে।

এ ছাড়া বাংলাদেশে ব্যবসা করছে এমন ৭৩ শতাংশ জাপানি কোম্পানি বলেছে, তারা আগামী দু-এক বছরে এ দেশে ব্যবসা বাড়াবে। বাংলাদেশে জাপানি কোম্পানির সংখ্যাও বাড়ছে। ২০০৮ সালে এ দেশে জাপানি কোম্পানি ছিল মাত্র ৭০টি, যা ২০১৮ সালে ২৭৮টিতে উন্নীত হয়েছে।

জাপানি বাণিজ্য উন্নয়ন সংস্থা জাপান ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অর্গানাইজেশনের (জেট্রো) এক জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে। জাপান-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (জেবিসিসিআই) আজ রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে জরিপের ফলাফল তুলে ধরে। জরিপটি করা হয়েছে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোতে ব্যবসারত জাপানি কোম্পানিগুলোর ওপর। জরিপের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে গত ৯ অক্টোবর থেকে ৯ নভেম্বর পর্যন্ত।

ঢাকার গুলশানে জেট্রোর কার্যালয়ে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে জেট্রোর কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ (প্রতিনিধি) দাইসুকি আরাই, জেবিসিসিআইয়ের সহসভাপতি মো. শরিফুল আলম, মহাসচিব তারেক রাফি ভূঁইয়া, পরিচালক কবির আহমেদ, এ কে মিজানুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জেট্রোর প্রতিনিধি দাইসুকি আরাই জেবিসিসিআইয়েরও সভাপতি। তিনি যে জরিপটি তুলে ধরেন সেটি করা হয়েছে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোর ওপর। জরিপের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে গত ৯ অক্টোবর থেকে ৯ নভেম্বর পর্যন্ত।
দাইসুকি বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজার বড় হওয়া এবং উৎপাদন খরচ কম হওয়াই বিনিয়োগ আগ্রহের কারণ। অবশ্য এ দেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অনেক বাধাও রয়েছে। বাংলাদেশে পণ্যের মান ঠিক রাখা কঠিন, শ্রমিকের দক্ষতা কম, কর প্রদান জটিল, পণ্য খালাসে দীর্ঘ সময় লাগে। তিনি বলেন, বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ খুবই সম্ভাবনাময়। তবে এ আত্মতৃপ্তি নিয়ে বসে থাকলে হবে না। অনেক বাধা আছে, সেগুলো দূর করতে হবে।

জেট্রোর জরিপ অনুযায়ী, ২০টি দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে মধ্যে সমুদ্রবন্দরে সময় বেশি লাগে পাকিস্তানে। আমদানি পণ্য খালাসের প্রক্রিয়া শেষ করতে পাকিস্তানে ১৬ দশমিক ৬, বাংলাদেশে ১৫ দশমিক ৮, মিয়ানমারে ১৩ দশমিক ৩ ও ভারতে ১২ দিন লাগে। একইভাবে বিমানবন্দরে সবচেয়ে বেশি সময় লাগে বাংলাদেশে। উড়োজাহাজে আসা পণ্য খালাসে বিমানবন্দরে ৭ দশমিক ৯ দিন লাগে।
জাপানিরা পণ্যের মান ঠিক রাখা ও কর্মীদের দক্ষতা নিয়েও সমস্যায় ভোগেন বলে উল্লেখ করেন দাইসুকি আরাই। তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রচুর শ্রমিক পাওয়া যায়। এটা শ্রম শিল্পের জন্য ভালো। তবে উচ্চ প্রযুক্তির কারখানার জন্য দক্ষ লোক দরকার।

শ্রমিকের দক্ষতা, বন্দরে সময় বেশি লাগা, কর প্রদানে জটিলতা, করপোরেট সুশাসনের অভাব ইত্যাদি সমস্যার ক্ষেত্রে উন্নতি না হলে জাপানি বিনিয়োগ পাওয়ার ক্ষেত্রে মিয়ানমার, লাওস ও কম্বোডিয়ার মতো দেশগুলোর চেয়ে বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকবে বলে উল্লেখ করের দাইসুকি আরাই। তিনি বলেন, এসব দেশ আসিয়ানের সদস্য। বাংলাদেশ সার্ক ছাড়া আঞ্চলিক কোনো জোটেও নেই।