শিক্ষক নিয়োগ আবেদনের শেষ মঙ্গলবার, আবেদন ১২ লাখ পেরিয়েছে
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগে এখন পর্যন্ত ১২ লাখের বেশি আবেদন জমা পড়েছে। আজ মঙ্গলবার রাত (২৪ নভেম্বর) পর্যন্ত চাকরি প্রত্যাশীরা আবেদন করতে পারবেন।
১৯ অক্টোবর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। গত ২৫ অক্টোবর থেকে অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলা বাদে দেশের বাকি সব জেলার প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) সহকারী পরিচালক নিয়োগ হিসেবে কর্মরত সিনিয়র সহকারী সচিব আতিক এস বি সাত্তার প্রথম আলোকে মঙ্গলবার সকালে জানান, ২৫ অক্টোবর সকাল থেকে থেকে অনলাইনে আবেদন গ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ সকাল পর্যন্ত ১২ লাখ ১৮ হাজার ৬১৮ আবেদনের পেমেন্ট জমা পড়েছে।
মার্চ বয়স ৩০ হলে আবেদন
প্রাথমিকের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ৩০ বছর পূর্ণ হওয়া প্রার্থীরাও আবেদনের সুযোগ পাচ্ছেন। করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কারণে এ বছর ২৫ মার্চ যাঁদের ৩০ বছর পূর্ণ হয়েছে, সরকারি চাকরিতে তাঁদের আবেদনের সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এ নিয়ে প্রজ্ঞাপনও জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ওই প্রজ্ঞাপনের আলোকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এ বছরের ২০ অক্টোবরে বয়স সর্বনিম্ন ২১ বৎসর এবং ২৫ মার্চ ২০২০ তারিখে প্রার্থীর বয়স সর্বোচ্চ ৩০ বছর হতে হবে। তবে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও শারীরিক প্রতিবন্ধী আবেদনকারীর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ২৫ মার্চে ৩২ বছর হতে হবে।
আবেদন ফি ১১০ টাকা
সম্প্রতি প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক পদে অনির্দিষ্টসংখ্যক জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) অধীন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের আবেদন ফি ১১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগ্রহী প্রার্থীদের অনলাইনে আবেদন করতে হবে। বিজ্ঞপ্তিতে পদের সংখ্যা উল্লেখ না থাকলেও বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩২ হাজার ৫৭৭ জন সহকারী শিক্ষক নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এর মধ্যে প্রাক্–প্রাথমিকে ২৫ হাজার ৬৩০ জন এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শূন্য পদে ৬ হাজার ৯৪৭ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে।
গ্রেড ১৩ অনুযায়ী বেতন ১১০০০-২৬৫৯০ টাকা
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের আবেদন শেষ হবে ২৪ নভেম্বর রাত ১১টা ৫৯ মিনিটে। বেতন হবে জাতীয় বেতন স্কেল, ২০১৫ এর গ্রেড ১৩ অনুযায়ী ১১,০০০-২৬, ৫৯০ টাকা। শিক্ষাগত যোগ্যতার ক্ষেত্রে যেকোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএসহ স্নাতক বা সম্মান বা সমমানের ডিগ্রি থাকতে হবে। আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১১০ টাকা।
২০০৯–২০১৯ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১ লাখ ৯৭ হাজার ৮৬৪ জন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। মুজিব বর্ষে সব শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে সম্ভব হয়নি। তবে সেপ্টেম্বরে নিয়োগের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করার উদ্যোগ নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। অক্টোবরে এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলো।
মন্ত্রণালয়ের এই উদ্যোগের পর সেপ্টেম্বরে কোটামুক্ত রেখে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের প্রস্তাব করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। প্রাথমিকের শিক্ষক পদটি ১৩ তম গ্রেড হয়েছে।
সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এতে মোট উত্তীর্ণ হন ৫৫ হাজার ২৯৫ জন, নিয়োগ দেওয়া হয় ১৮ হাজার ১৪৭ জনকে। এর আগে একই বছর ২০১৪ সালের স্থগিত পরীক্ষাটিও নেওয়া হয়। ওই পরীক্ষায় মোট উত্তীর্ণ হন ২৯ হাজার ৫৫৫ প্রার্থী। এর মধ্যে নিয়োগ দেওয়া হয় ৯ হাজার ৭৬৭ জনকে। এ দুই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও চূড়ান্ত নির্বাচিত হননি ৫৬ হাজার ৯৩৬ প্রার্থী। উত্তীর্ণ এসব প্রার্থী ২০১০-২০১১ সালের মতো প্যানেল নিয়োগ চান। তবে মন্ত্রণালয় জানিয়ে দিয়েছে, প্যানেলে নিয়োগ দেওয়া হবে না। নতুন করে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হলো।