৪৩তম বিসিএস, তৃতীয় পরীক্ষকদের খাতা দেখতে ১৫ দিনের সময় দিচ্ছে পিএসসি

বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)
ফাইল ছবি

৪৩তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষার বেশ কিছু খাতা তৃতীয় পরীক্ষকদের দিচ্ছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। পিএসসি বলছে, আরও তৃতীয় পরীক্ষকদের খাতা দিতে আরও কয়েক দিন সময় লাগবে। তবে খাতা দেখা শেষ করতে ১৫ দিনের সময় বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যেই এসব খাতা দেখা শেষ করে পিএসসিতে জমা দিতে হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শাখার একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, অনেকগুলো বিসিএসের কাজ চলমান। এর মধ্যেই ৪৩তম বিসিএসের খাতা তৃতীয় পরীক্ষকদের দেওয়া হচ্ছে। আরও কয়েক দিন সময়ের মধ্যে সব খাতা দেওয়া শেষ হবে। যাঁদের খাতা দেওয়া হচ্ছে, তাঁদের ১৫ দিনের সময় বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। এ সময়ের মধ্যেই খাতা দেখতে সবাইকে অনুরোধ করা হচ্ছে। সব খাতা পেলে দ্রুতই লিখিত পরীক্ষার ফল দিয়ে ভাইভার দিন দেওয়া হবে। এটিতে বেশি সময় নেওয়া হবে না।

পিএসসি সূত্র জানায়, ৪৩তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার খাতায় দুই পরীক্ষকের দেওয়া নম্বরে ২০ শতাংশ বা তার অধিক পার্থক্য থাকায় তৃতীয় পরীক্ষক খাতা দেখছেন। লিখিত পরীক্ষার খাতা দেখা শেষ হওয়ার পরে ফল দেওয়া হবে। এ ছাড়া মৌখিক পরীক্ষাও দ্রুত সময়ে শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে পিএসসির।

পিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সূত্রে জানা গেছে, ৪৩তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল মার্চে প্রকাশ করার কথা ছিল। এ সময় লিখিত পরীক্ষার খাতায় কিছু ত্রুটি দেখা দেয়। পরে আবার চূড়ান্ত যাচাই–বাছাই করার সময় ভুল ধরা পড়ে। এতে দেখা যায়, প্রথম পরীক্ষক ও দ্বিতীয় পরীক্ষক যে নম্বর দিয়েছেন, তার পার্থক্য ২০ শতাংশ বা তার অধিক। পরে খাতা তৃতীয় পরীক্ষক দেখেন। বিশ্ববিদ্যালয় বা বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও এই নিয়ম আছে।

পিএসসির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র প্রথম আলোকে জানায়, ২০ শতাংশ বা এর অধিক নম্বরের পার্থক্য হওয়া খাতার সংখ্যা ১০ হাজারের মতো। এটিও ৪১তম বিসিএসের পুনরাবৃত্তি বলে জানা গেছে। ৪১তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষায় পরীক্ষকদের গাফিলতিতে প্রায় ১৫ হাজার খাতায় নম্বরের পার্থক্য ছিল। সে সময় পিএসসি এই ঘটনায় তদন্ত কমিটি করেছিল। সেখানে ৩১৮ পরীক্ষকের গাফিলতির প্রমাণ পেয়েছিল।

আরও পড়ুন

৪৩তম বিসিএসের নম্বরের পার্থক্য থাকায় ফল প্রকাশের দেরির কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে পিএসসির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ৪১তম বিসিএসে ১৫ হাজারের বেশি খাতায় নম্বরের পার্থক্য ছিল। এবারে ৪৩তম বিসিএসে ১০ হাজার। বিষয়টি খেয়াল করলে দেখা যাবে ভুলের পরিমাণ কমছে। মূলত, পিএসসি লিখিতের খাতা দেখার আগে পরীক্ষকদের সেমিনারে সচেতনতামূলক দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকে। সেটির ফলাফল পাওয়া গেছে। ভুলের পরিমাণ কমেছে। তবে এই ভুল যাতে আরও অনেক বেশি কমানো যায়, সে জন্য পিএসসি কাজ করছে।

ফলের বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসির একজন সদস্য প্রথম আলোকে বলেন, দ্রুত ভুল সংশোধনের কাজ করা হচ্ছে। পরীক্ষকেরা নির্ভুলভাবে ফল দেওয়ার কাজ করে যাচ্ছেন। দ্রুতই ফল প্রকাশিত হবে। এ ছাড়া ফল প্রকাশের পর মৌখিক পরীক্ষা শুরুতে বেশি সময় নষ্ট করা হবে না। সে জন্য শিগগিরই মৌখিক পরীক্ষার তারিখও জানিয়ে দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন

গত বছরের জুলাইয়ে লিখিত পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু করে পিএসসি। ২০২১ সালের ২৯ অক্টোবর ৪৩তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। গত বছরের ২০ জানুয়ারি ৪৩তম বিসিএসের প্রিলিমিনারির ফল প্রকাশ করা হয়। এতে উত্তীর্ণ হয়েছেন ১৫ হাজার ২২৯ প্রার্থী।

৪৩তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এ বিসিএসে বিভিন্ন ক্যাডারে ১ হাজার ৮১৪ কর্মকর্তা নেওয়া হবে। এর মধ্যে প্রশাসন ক্যাডারে ৩০০ জন, পুলিশ ক্যাডারে ১০০, পররাষ্ট্র ক্যাডারে ২৫, শিক্ষা ক্যাডারে ৮৪৩, অডিটে ৩৫, তথ্যে ২২, ট্যাক্সে ১৯, কাস্টমসে ১৪ ও সমবায়ে ১৯ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন