৪৩তম বিসিএসের গেজেটে বাদ পড়াদের নিয়ে আলোচনা বৃহস্পতিবার
৪৩তম বিসিএসের গেজেটে যাঁরা বাদ পড়েছেন, তাঁদের আবেদন নিয়ে আলোচনা হবে আগামী বৃহস্পতিবার। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জনপ্রশাসনের ওই কর্মকর্তা বলেন, এমন কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি যে তাঁদের আবেদন বৃহস্পতিবারই বিবেচনা করা হবে বা সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে। তবে যে আবেদন জমা পড়েছে, সেগুলোর বিষয়ে আলোচনা হবে ওই দিন। করণীয় ঠিক করা হবে। সঙ্গে অন্য বিষয়ে আলোচনাও হবে। সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনো সভা হবে না। অনেক গণমাধ্যমে এসেছে বৃহস্পতিবারই সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে, বিষয়টি আসলে ঠিক নয়।
৪৩তম বিসিএসে নিয়োগের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ১৫ অক্টোবরের প্রজ্ঞাপন বাতিল করে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করে গত ৩০ ডিসেম্বর। এতে বিভিন্ন ক্যাডারে বাদ পড়েন ১৬৮ প্রার্থী। এর আগে ১৫ অক্টোবরের প্রজ্ঞাপনে বিভিন্ন ক্যাডারে বাদ পড়েছিলেন ৯৯ জন। সব মিলিয়ে ৪৩তম বিসিএস থেকে বাদ পড়েন মোট ২৬৭ জন। এসব প্রার্থীর বাদ পড়ার বিষয়ে সম্প্রতি ব্যাখ্যা দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগের জন্য সরকারি কর্ম কমিশন কর্তৃক সাময়িকভাবে ২ হাজার ১৬৩ প্রার্থীকে মনোনীত করে সুপারিশ করা হয়। বিসিএস নিয়োগপ্রক্রিয়ার বিধি অনুসারে, পুলিশের বিশেষ গোয়েন্দা শাখা এবং সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে প্রার্থীদের প্রাক্-চরিত্র যাচাই-বাছাই করে সুপারিশ করা ২ হাজার ১৬৩ প্রার্থীর মধ্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অনুপস্থিত ৪০ জন এবং এজেন্সি রিপোর্ট বিবেচনায় সাময়িকভাবে ৫৯ জনসহ মোট ৯৯ জনকে বাদ দিয়ে অবশিষ্ট ২ হাজার ৬৪ প্রার্থীর অনুকূলে গত বছরের ১৫ অক্টোবর প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
ব্যাখ্যায় আরও বলা হয়, প্রজ্ঞাপন জারির পর বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে এ নিয়োগের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করা হয়। সব সমালোচনার ঊর্ধ্বে থেকে ক্লিন ইমেজের প্রার্থী নির্ধারণ, সরকারি নিয়োগপ্রক্রিয়ায় আস্থা ও বিশ্বাস পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য ৪৩তম বিসিএসের সুপারিশ করা ২ হাজার ১৬৩ প্রার্থীর বিষয়ে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদপ্তর (এনএসআই) এবং প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) মাধ্যমে প্রাক্-চরিত্র পুনরায় অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
এনএসআই ও ডিজিএফআই থেকে ২ হাজার ১৬৩ প্রার্থীর উপযুক্ততা/অনুপযুক্ততা বিষয়ে প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২২৭ প্রার্থীর প্রাক্-চরিত্র বিষয়ে বিরূপ মন্তব্য (আপত্তি/অসুপারিশকৃত) পাওয়া যায়। ২২৭ প্রার্থীর বিষয়ে বিরূপ মন্তব্যের কারণে সাময়িকভাবে নিয়োগের জন্য অনুপযুক্ত বিবেচনা করা হয় এবং তাঁদের বিষয়ে অধিকতর যাচাই-বাছাই ও খোঁজখবর নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অনুপস্থিত ৪০ জনকে নিয়োগের জন্য অনুপযুক্ত বিবেচনা করা হয়। এ অবস্থায় সুপারিশ করা ২ হাজার ১৬৩ প্রার্থীর মধ্য থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অনুপস্থিত ৪০ জন, গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন বিবেচনায় সাময়িকভাবে অনুপযুক্ত ২২৭ জনসহ মোট ২৬৭ জনকে বাদ দিয়ে অবশিষ্ট ১ হাজার ৮৯৬ প্রার্থীর অনুকূলে ৩০ ডিসেম্বর পুনরায় নিয়োগ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
ইতিমধ্যে সাময়িকভাবে নিয়োগের জন্য অনুপযুক্ত ২২৭ জনের মধ্যে যে কেউ পুনর্বিবেচনার আবেদন করলে তা গ্রহণ করা হচ্ছে। পুনর্বিবেচনার আবেদন করার সুযোগ সবার জন্য উন্মুক্ত আছে বলে জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।