রেলওয়ের ৫১৬ পদে প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রমাণ পেলেই পরীক্ষা বাতিল: পিএসসি চেয়ারম্যান
সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) অধীনে গত শুক্রবার অনুষ্ঠিত রেলওয়ের দশম গ্রেডের ১১ ক্যাটাগরির ৫১৬টি উপসহকারী প্রকৌশলী পদের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রমাণ পাওয়া গেলে এ পরীক্ষা বাতিল করা হবে। আজ মঙ্গলবার সরকারি কর্ম কমিশন সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন পিএসসি চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন। তিনি বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগের বিষয়ে ইতিমধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে। কমিটির সুপারিশ পেলে পরীক্ষা বাতিল করা হবে।
এদিকে পিএসসির অধীনে গত শুক্রবার অনুষ্ঠিত রেলওয়ের দশম গ্রেডের ১১ ক্যাটাগরির ৫১৬টি উপসহকারী প্রকৌশলী পদের নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল চেয়ে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করছেন চাকরিপ্রার্থীরা। মঙ্গলবার সকাল থেকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পিএসসির সামনে এ প্রতিবাদ সমাবেশ করছেন চাকরিপ্রার্থীরা।
গতকাল বাংলাদেশ রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী পদসহ বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) দুজন উপপরিচালক, একজন সহকারী পরিচালকসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
বাংলাদেশ রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী পদসহ বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) দুজন উপপরিচালক, একজন সহকারী পরিচালকসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সিআইডি জানিয়েছে, পিএসসির উপপরিচালক মো. আবু জাফর ও জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর কবির, কর্মচারী (ডেসপাস রাইডার) মো. খলিলুর রহমান ও অফিস সহায়ক সাজেদুল ইসলাম এবং সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী ও তাঁর ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান, সাবেক সেনাসদস্য নোমান সিদ্দিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও মিরপুরের ব্যবসায়ী আবু সোলায়মান মো. সোহেল, অডিটর প্রিয়নাথ রায়, ঢাকার ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিসে কর্মরত মো. মামুনুর রশিদ, নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী মো. শাহাদত হোসেন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের টেকনিশিয়ান নিয়ামুন হাসান, ব্যবসায়ী সহোদর মো. সাখাওয়াত হোসেন ও সাইম হোসেন, ব্যবসায়ী মো. জাহিদুল ইসলাম এবং যুবক লিটন সরকার গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন।
সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের (সিপিসি) বিশেষ পুলিশ সুপার মো. তৌহিদুল ইসলাম সোমবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, গত দুই দিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই ১৭ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ৫ জুলাই অনুষ্ঠিত রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত ছিলেন। তাঁরা একাধিক নন-ক্যাডার পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসেও জড়িত বলে জানা গেছে। তাঁদের সিআইডি কার্যালয়ে এখন জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
চ্যানেল টোয়েন্টিফোর গত রোববার পিএসসির অধীনে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে পিএসসির কর্মকর্তারা প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত বলে অভিযোগ করা হয়।
তদন্তসংশ্লিষ্ট সিআইডি কর্মকর্তাদের ভাষ্যমতে, পিএসসির কোনো নিয়োগ পরীক্ষা এলেই এই চক্রের সদস্যরা প্রশ্নপত্র ফাঁস করে অর্থ নিতেন। ৫ জুলাই (শুক্রবার) অনুষ্ঠিত রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেন তাঁরা। চক্রের সদস্যরা ওই পরীক্ষার আগের রাতে তাঁদের চুক্তি করা শিক্ষার্থীদের অজ্ঞাতনামা স্থানে রেখে ওই প্রশ্নপত্র ও এর উত্তর দিয়ে দেন।