বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার হলে করণীয়
৪৪তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে কাল শুক্রবার। তাই পরীক্ষার্থীদের শেষ সময়ে ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। পরীক্ষার হল হলো আসল যুদ্ধক্ষেত্র। এখানেও একটা চমৎকার ব্যবস্থাপনা করতে হবে। হলে মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে। পরীক্ষার হলে কী করণীয়—অভিজ্ঞতা থেকে সেসব পরামর্শ দিয়েছেন ৩৪তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে দ্বিতীয় স্থান অধিকারী শাহ মো. সজীব।
পরীক্ষার হলে করণীয়
পরীক্ষার হলে মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে। তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি থেকে যেন ১৩০ ডিগ্রি না হয়ে যায়। ভয় না পেলে হলে মাথা ঠান্ডা থাকবে।
পিএসসি অনুমোদন করে না এমন জিনিসপত্র কোনো অবস্থাতেই হলে নেওয়া যাবে না। আর প্রবেশপত্রসহ আনুষঙ্গিক অনুমোদিত জিনিস সঙ্গে নিয়ে যাবেন।
আন্দাজে কোনো উত্তর দেওয়া যাবে না। বৃত্ত ভরাটের সময় প্রশ্নের ক্রমিক নম্বর ভালো করে খেয়াল করবেন। ১৭ নম্বর যেন ২৭-এ গিয়ে না পড়ে। অপশনের ক, খ, গ, ঘ কোন ফরম্যাটে আছে, তা-ও খেয়াল রাখুন।
কতটি প্রশ্নের উত্তর দিয়ে আসবেন, তার কোনো টার্গেট থাকা যাবে না। এটি নির্ভর করবে আপনার জানার ওপর। মনোযোগ দিয়ে প্রশ্ন পড়বেন। ‘হয়’ চেয়েছে নাকি ‘নয়’ চেয়েছে। যেমন নিচের কোনটি আগ্নেয় শিলা নয়? অনেকে এটি পড়ে নিচের কোনটি আগ্নেয় শিলা হয়!
আশপাশের কোনো পরীক্ষার্থীর ওপর কোনো অবস্থাতেই নির্ভর করবেন না। যদিও সে সুযোগ হল পরিদর্শক দেবেন না। মনে রাখবেন, এটা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা।
প্রশ্নের সেট ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর ভালো করে খেয়াল করবেন এবং উত্তরপত্রে ভরাট করবেন মনে করে। হাজিরা খাতায় নিজের নাম ও ছবি দেখে স্বাক্ষর করবেন। প্রবেশপত্রে যে স্বাক্ষর দিয়েছেন, হুবহু সেই স্বাক্ষর করবেন।
প্রশ্ন দ্রুত পড়তে হবে। সঙ্গে সঙ্গেই বৃত্তও ভরাট করে ফেলতে হবে। প্রশ্নের সিরিয়াল অনুসারে ভরাট করে যাবেন। তবে গণিত ও মানসিক দক্ষতা অংশ পরে ভরাট করা ভালো।
যে প্রশ্ন আপনার সম্পূর্ণ অজানা, তা পুরোটা পড়ারই দরকার নেই। সময় বেঁচে যাবে। সময়জ্ঞান খুবই জরুরি বিষয়।
মেয়েদের কান অনাবৃত রাখবেন। এ বিষয় নিয়ে অযথা সময় যেন নষ্ট না হয়।
কক্ষ পরিদর্শক, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বা পিএসসির কোনো কর্মকর্তার সঙ্গে অযথা বিতর্কে যাবেন না। এতে আপনারই ক্ষতি হবে।
সুশাসন ও নৈতিকতা এবং মানসিক দক্ষতার উত্তর করার সময় বেশি সতর্ক থাকবেন।
একাধিক উত্তর সঠিক হলে অপশনের প্রথমে যেটা, সেটা দিয়ে আসবেন। কোনো সঠিক উত্তর না থাকলে ওই প্রশ্ন রেখেই আসবেন। ঝুঁকি নেওয়া যাবে না।
পুরাতন (ব্যবহৃত) মোটা কালো কালির বলপয়েন্ট কলম হলে তাড়াতাড়ি বৃত্ত ভরাট করা যায়।
কোনো অবস্থায়ই দেরি করে পরীক্ষার কেন্দ্রে উপস্থিত হবেন না। হাতে সময় নিয়ে রাস্তা এবং ওই দিনের বাস্তবতা মাথায় রেখে রওনা দেবেন।
এমসিকিউ দাগানোর সময় প্রসেস অব এলিমিনেশন পদ্ধতি প্রয়োগ করবেন। অর্থাৎ, কোন অপশনটা বা অপশনগুলো উত্তর হবে না, সেভাবে এগোবেন চারটি অপশনের মধ্যে। এতে সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হবে।
নিজের নাম বড় হাতের অক্ষরে ইংরেজিতে লিখবেন। নিজ জেলার নামও ইংরেজিতে লিখবেন ওএমআর শিটে।
বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (বিপিএসসি) তথ্যমতে, এবার প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন ৩ লাখ ৫০ হাজার ৭১৬ জন। যাঁরা এতে অংশগ্রহণ করবেন, তাঁদের প্রস্তুতিও মোটামুটি শেষ পর্যায়ে। বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা যথেষ্ট গুরুত্ব বহন করে। এটি বুঝতে পারলে প্রস্তুতি নিতে উৎসাহ বাড়বে।
প্রতিটি বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় প্রায় তিন লাখ পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। আবেদন করেন আরও বেশি প্রার্থী। কিন্তু প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ হন মাত্র ২০ হাজার জন। শুধু তা-ই নয়, বর্তমানে ক্যাডার পদে কর্মরত থেকেও অনেকে কাঙ্ক্ষিত ক্যাডার পাওয়ার জন্য পরীক্ষা দিয়ে থাকেন। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় নির্দিষ্ট কোনো কাটমার্ক বা পাস নম্বর নেই। এটি ক্যাডার নিয়োগের সংখ্যা ও পিএসসির সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে। তাই আপনি কত পেলে টিকবেন, তা বলা মুশকিল।