বেসরকারি ব্যাংকে চাকরির পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি নিতে করণীয়
আকর্ষণীয় বেতন ও অন্যান্য সুবিধার কারণে ব্যাংকের চাকরি তরুণ–তরুণীদের কাছে পছন্দের শীর্ষে। শুধু সরকারি ব্যাংক নয়, বেসরকারি ব্যাংকেও সুযোগ–সুবিধা বেশি থাকায় অনেকে ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিচ্ছেন বেসরকারি ব্যাংকের চাকরি। তাই বেসরকারি খাতেও চাকরির প্রতিযোগিতা বেড়েছে। পর্যাপ্ত প্রস্তুতি না নিলে চাকরি পাওয়া কঠিন।
ব্যাংকভেদে একটু ভিন্ন হলেও বেসরকারি ব্যাংকের চাকরির নিয়োগপ্রক্রিয়া তিন ভাগে বিভক্ত। প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা। সাধারণত প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষা একই দিনে নেওয়া হয়। ১০০ নম্বরের পরীক্ষায় ৬০-৮০ নম্বর প্রিলি এবং ২০-৪০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা হয়।
প্রিলিতে প্রশ্ন হয় ইংরেজি, গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা, কম্পিউটার ও আইসিটি, সাধারণ জ্ঞান ইত্যাদি বিষয়ে। তবে কোনো কোনো ব্যাংক বাংলা ভাষা ও সাহিত্য থেকেও প্রশ্ন করে থাকে। লিখিত অংশে আসে গণিত, অনুবাদ ও ফোকাস রাইটিং।
ব্যাংকভেদে একটু ভিন্ন হলেও বেসরকারি ব্যাংকের চাকরির নিয়োগপ্রক্রিয়া তিন ভাগে বিভক্ত। প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা। সাধারণত প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষা একই দিনে নেওয়া হয়। ১০০ নম্বরের পরীক্ষায় ৬০-৮০ নম্বর প্রিলি এবং ২০-৪০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা হয়।
প্রিলিমিনারির জন্য প্রস্তুতি
প্রিলিতে ভালো করতে হলে ইংরেজি ব্যাকরণ ও ভোকাবুলারির বিষয়গুলোতে জোর দিতে হবে। ইংরেজির বেসিক ও গ্রামার বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা রাখতে হবে। গণিত ও মানসিক দক্ষতা মুখ্য ভূমিকা পালন করে। গণিতে ভালো করতে হলে অনুশীলনের বিকল্প নেই। সংখ্যা, শতকরা, লাভ-ক্ষতি, সুদকষা, মিশ্রণ, অনুপাত, ঐকিক, গড়, গতি, জ্যামিতি ইত্যাদি বিষয়ে ভালো দখল থাকতে হবে। সাধারণ জ্ঞানে বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলির সাম্প্রতিক ও ট্র্যাডিশনাল টপিক থেকে কিছু প্রশ্ন আসে। অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান, জাতিসংঘ, খেলাধুলা, সমীক্ষা ইত্যাদি থেকে প্রশ্ন করা হয়। কম্পিউটার ও আইসিটিতে আলোচিত প্রযুক্তি, মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, পাওয়ার পয়েন্ট, এক্সেল, কম্পিউটারের বিভিন্ন অংশ ও ইন্টারনেট নিয়ে প্রশ্ন হয়।
লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি
লিখিত অংশে আসে গণিত, অনুবাদ ও ফোকাস রাইটিং। এই অংশে নম্বর কম হলেও গুরুত্বপূর্ণ। এখানে গণিত ও অনুবাদে পূর্ণ নম্বর পাওয়া সম্ভব। গণিতের জন্য বিগত বছরের প্রশ্নগুলোর সমাধান ও বিষয়ভিত্তিক নিয়মিত চর্চা করতে হবে। ইংরেজির জন্য অনুবাদ ও ফ্রি হ্যান্ড রাইটিং গুরুত্বপূর্ণ। যেকোনো বিষয়ে বাংলা থেকে ইংরেজি ও ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ করার দক্ষতা থাকতে হবে। সেই সঙ্গে যেকোনো বিষয়ের ওপর বাংলা ও ইংরেজিতে প্রাসঙ্গিক কিছু অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে লিখিত অংশে ভালো করা সম্ভব।
মৌখিক পরীক্ষার প্রস্তুতি
প্রার্থীদের বুদ্ধিমত্তা, পঠিত বিষয়ে জ্ঞান, নিজ জেলা, বিশ্ববিদ্যালয়, অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান, আর্থিক কার্যাবলি ইত্যাদি বিষয়ে মৌখিক পরীক্ষায় জানতে চাওয়া হয়। ব্যাংকিং পেশায় কেন আসতে চান, পঠিত বিষয়ের সঙ্গে ব্যাংকিং পেশার সাদৃশ্য–বৈসাদৃশ্য ইত্যাদি বিষয়ে নিজের যুক্তি ও বুদ্ধি দিয়ে উত্তর দেওয়া ভালো। ভাইবা বোর্ড যে ভাষায় প্রশ্ন করবে (বাংলা বা ইংরেজি), সে ভাষাতেই উত্তর দেওয়া উচিত। যে বোর্ড মেম্বার প্রশ্ন করবেন, তাঁর দিকে তাকিয়ে (আই কন্ট্যাক্ট) উত্তর দেওয়া বাঞ্ছনীয়। আঞ্চলিক ভাষা পরিহার করে সুন্দর, গোছাল ও প্রাসঙ্গিক উত্তর দিতে হবে।
প্রশ্নকর্তা পুরুষ বা নারী যে–ই হোক, উভয়ের ক্ষেত্রেই ‘স্যার’ বলতে হবে। নারী হলে ম্যাডাম বা ম্যাম বলা যাবে না। কোনো উত্তর জানা না থাকলে দুঃখিত বলাই ভালো। বোর্ড মেম্বারদের সঙ্গে তর্কে যাবেন না, তবে যথার্থ যুক্তি থাকলে তা অনুমতি নিয়ে বিনয়ের সঙ্গে বলতে পারেন। আপনার উপস্থিত বুদ্ধি, বাচনভঙ্গি, দৃষ্টিভঙ্গি, রুচিবোধ ইত্যাদি জানার জন্যই মূলত মৌখিক পরীক্ষা।
মো. মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরী
ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট, ইউনাইটেড
কমার্শিয়াল ব্যাংক