প্রিলিমিনারিতে ইংরেজির প্রস্তুতি নেবেন যেভাবে

৪৬তম বিসিএসে চাকরি পেতে আবেদন করেছেন ৩ লাখ ২৫ হাজার ৬০৮ জন। প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য পরামর্শ দিয়েছেন ৪১তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত মো. রিয়াজ উদ্দিন। আজ দ্বিতীয় পর্বে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যের প্রস্তুতির পরামর্শ প্রকাশ করা হলো।

বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রস্তুতির এখনই সময়ফাইল ছবি

বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় মোট ২০০ নম্বরের মধ্যে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য থেকে ৩৫টি প্রশ্ন থাকে। ইংরেজি ভাষা থেকে ২০টি এবং ইংরেজি সাহিত্য থেকে ১৫টি। প্রিলিমিনারিতে পাস করতে হলে ইংরেজিতে ভালো করার বিকল্প নেই।

ইংরেজি ভাষা

প্রথমেই এই অংশের জন্য পিএসসির সিলেবাস আগে দেখতে হবে। এরপর ৩৫ থেকে ৪৫তম বিসিএস প্রিলিমিনারির আগের সব প্রশ্ন ব্যাখ্যাসহ পড়ুন। সিলেবাসের বিষয়গুলো ভালোভাবে পড়তে হবে। ইংরেজি ব্যাকরণের নিয়মগুলো পর্যাপ্ত উদাহরণের সাহায্যে বোঝার চেষ্টা করতে হবে। না বুঝে মুখস্থ করার মানসিকতা পরিহার করা উচিত। ইংরেজি ব্যাকরণের সিলেবাস অনেক বড়। আগের বিসিএসগুলোতে যেসব বিষয়ে প্রশ্ন এসেছে, সেগুলো এখানে আলোচনা করা হলো।

পদ প্রকরণ

এ বিষয়ের সঙ্গে আমরা সবাই পরিচিত হওয়ায় এটি অনেক সহজ। তবে বিসিএস প্রিলিমিনারিতে এই বিষয় থেকেই সবচেয়ে বেশি প্রশ্ন এসেছে। এগুলোর মধ্যে প্রিপজিশন, ভার্ব, নাউন, ডিটারমাইনার, জেন্ডার ও নাম্বার থেকে বেশি প্রশ্ন আসে। পার্টস অব স্পিচের প্রকার শনাক্তকরণ এবং অন্যান্য প্রকারগুলো সম্পর্কেও প্রশ্ন আসতে পারে। তাই এগুলো ভালোভাবে শিখতে হবে। ইংরেজি ব্যাকরণের প্রতিটি অধ্যায় পড়ার পর আগের বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় আসা সংশ্লিষ্ট প্রশ্নগুলো ব্যাখ্যাসহ পড়তে হবে।

বাক্যশুদ্ধি ও বাক্য রূপান্তর

সেনটেন্স কারেকশন্স বা বাক্যশুদ্ধি থেকে প্রতি বিসিএসেই একাধিক প্রশ্ন আসতে দেখা যায়। তাই বিষয়টি খুব গুরুত্বসহকারে পড়তে হবে। বাক্যশুদ্ধিতে পারদর্শী হতে হলে অবশ্যই সাবজেক্ট ভার্ব অ্যাগ্রিমেন্ট, টেন্স, প্রিপজিশন, কন্ডিশনাল সেনটেন্স, রাইট ফর্মস অব ভার্বসসহ আরও কিছু বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে।

সেনটেন্স ট্রান্সফরমেশন বা বাক্য রূপান্তর থেকেও প্রচুর প্রশ্ন আসে। প্রতি বিসিএস প্রিলিমিনারিতেই এ-সংক্রান্ত ২ বা ৩টি প্রশ্ন থাকে। ইংরেজি বাক্য রূপান্তরের মধ্যে রয়েছে—সিম্পল, কমপ্লেক্স, কম্পাউন্ডসহ সেনটেন্সের অন্যান্য প্রকারভেদ, অ্যাকটিভ ও প্যাসিভ ভয়েস, পজিটিভ, কম্পারেটিভ ও সুপারলেটিভ ডিগ্রি এবং ন্যারেশন। তাই এগুলো খুব ভালোভাবে রপ্ত করলে বাক্য রূপান্তরের দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে।

বাগ্‌ধারা

ক্লোজ, ফ্রেজের প্রকারভেদ এবং এগুলোর বিভিন্ন প্রকার শনাক্তকরণ সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। ফ্রেজ অ্যান্ড ইডিয়মস থেকে প্রতি বিসিএসেই ২ থেকে ৪টি প্রশ্ন থাকে। ফ্রেজ অ্যান্ড ইডিয়মস, গ্রুপ ভার্বস, প্রবাদ-প্রবচন, ওয়ান ওয়ার্ড সাবস্টিটিউশন এবং অ্যাপ্রোপ্রিয়েট প্রিপজিশন প্রতিদিন কিছু কিছু করে মুখস্থ করতে হবে।

ভোকাবুলারি

ইংরেজি শব্দভাণ্ডার-সম্পর্কিত একাধিক প্রশ্ন প্রতিটি প্রিলিমিনারিতেই থাকে। ইংরেজি শব্দের সঠিক অর্থ নির্ণয়, সমার্থক বা বিপরীতার্থক শব্দ, বানান, অ্যানালজি কিংবা সাফিক্স বা প্রিফিক্স যুক্ত করে শব্দগঠন সম্পর্কে প্রশ্ন আসতে পারে। তাই ইংরেজি শব্দভাণ্ডার সমৃদ্ধ করার জন্য প্রতিদিন ১০টি করে ইংরেজি শব্দ শিখুন। নিয়মিত ইংরেজি পত্রিকা পড়ার মাধ্যমেও ভোকাবুলারি বাড়াতে পারেন।

ইংরেজি সাহিত্য

ইংরেজি সাহিত্যের ইতিহাস অনেক দীর্ঘ। এই বিষয়গুলো আমাদের সবার কাছেই মোটামুটি নতুন। ইংরেজি সাহিত্যের খুঁটিনাটি পড়তে গিয়ে অনেকেই সময় নষ্ট করেন। এ ক্ষেত্রে কিছুটা কৌশলী হয়ে গুরুত্বপূর্ণ কয়েক সাহিত্যিকের সাহিত্যকর্ম এবং কিছু কোটেশন শিখলে ১৫-তে অন্তত ১০-১২ নম্বর সহজেই পেতে পারেন। শুরুতেই আগের বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় আসা ইংরেজি সাহিত্যের প্রশ্নগুলো খুব ভালোভাবে পড়তে হবে। এরপর বিখ্যাত সাহিত্যিকদের সাহিত্যকর্মগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে।

ইংরেজি সাহিত্যের যুগ বিভাজন সম্পর্কে জানা আবশ্যক। এলিজাবেথীয় যুগ, রোমান্টিক যুগ, ভিক্টোরিয়ান যুগ ও আধুনিক যুগ থেকে বেশি প্রশ্ন আসে। তাই এই যুগগুলোর সাহিত্যিকদের সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিতে হবে। ইংরেজি সাহিত্যের কিংবদন্তি উইলিয়াম শেক্‌সপিয়ারের সব সাহিত্যকর্ম বিস্তারিত পড়তে হবে। তাঁর বিখ্যাত সব ট্র্যাজেডি ও কমেডির চরিত্র ও কোটেশন ভালোমতো শিখতে হবে। তাঁর সাহিত্যকর্ম থেকে প্রতি বিসিএসেই একাধিক প্রশ্ন কমন পাওয়া যায়।

ইংরেজি সাহিত্যে কিছু পরিভাষা ব্যবহৃত হয়, যেগুলোকে ‘লিটারেরি টার্মস’ বলা হয়। এই পরিভাষাগুলো থেকে প্রতিনিয়তই প্রশ্ন আসে। এ ছাড়া বিখ্যাত লেখকদের উপাধি, ছদ্মনাম ও একই নামের একাধিক সাহিত্যকর্ম গুরুত্ব দিয়ে পড়তে হবে। ইংরেজি সাহিত্যের বিভিন্ন পদক-পুরস্কার, বিভিন্ন দেশের জাতীয় কবি, প্রসিদ্ধ লেখকদের দেশ-পরিচয় সম্পর্কেও জেনে রাখতে পারেন।