বিসিএস প্রশাসন, ব্যাংকের এডি ও জজের চাকরি পাওয়া বাছিতও প্রজ্ঞাপনে বাদ
চাকরিপ্রার্থী অনেকের কাছে স্বপ্নের তিন চাকরি বিসিএস প্রশাসন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক (এডি) ও বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিসের (বিজেএস) সহকারী জজ পদ। এই তিন চাকরির পরীক্ষাতেই সফলতা পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে পাস করা আবদুল বাছিত মোল্লা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক (এডি) ও জুডিশিয়াল সার্ভিসের সহকারী জজ পদের ভেরিফিকেশনে ইতিবাচক প্রতিবেদন পেয়ে নিয়োগপত্র পেলেও ৪৩তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের দ্বিতীয় প্রজ্ঞাপন থেকে বাদ পড়েছেন আবদুল বাছিত মোল্লা। ১৫ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনেও নাম ছিল তাঁর।
গত সোমবার ৪৩তম বিসিএসে নিয়োগের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ১৫ অক্টোবরের প্রজ্ঞাপন বাতিল করে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করে। এতে বিভিন্ন ক্যাডারে বাদ পড়েন ১৬৮ জন চাকরিপ্রার্থী। এর মধ্যে আবদুল বাছিত মোল্লা একজন।
আবদুল বাছিত মোল্লা প্রথম আলোকে বলেন, ‘১৫ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় যে প্রজ্ঞাপন দিয়েছিল, সেখানে আমার নাম ছিল। গত পরশুর গেজেটে আমার নাম না দেখে বিশ্বাসই হচ্ছিল না। আমি সহকারী জজ হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর ৪৩তম বিসিএসের ভাইভা দিয়েছি। এই বিসিএসের কার্যক্রম যখন চলে, তখন আমি সহকারী জজ। সরকারি চাকরিরত অবস্থায় আমি জেনেবুঝে এমন কিছু করি নাই যে আমি ভেরিফিকেশন থেকে বাদ পড়ব। আমি নিশ্চিত ছিলাম যে ভেরিফিকেশনে নাম আসবে। তাই গেজেটে নিজের নাম না দেখে বিশ্বাস হচ্ছিল না। একটা বিসিএসে সফলতা পেতে একজন প্রার্থীকে যে কতটা পরিশ্রম করতে হয়, যাঁরা বিসিএস দেন, তাঁরাই শুধু জানেন।’
আবদুল বাছিত মোল্লা বলেন, ‘আমি ২০২০ সালের মার্চে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল ছাড়ি। ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত। দুই বছর ধরে বিচারক। আমার অপরাধটা কী? একবার গেজেটে নাম আসার পরও আমাকে কেন বাদ দেওয়া হলো? আমার প্রশাসন ক্যাডারে যোগদান করতে হবে না, আমি শুধু কারণ জানতে চাই।’
৪৩তম বিসিএসে সরকারি কর্ম কমিশনের চূড়ান্ত ফলে প্রশাসন ক্যাডারে পঞ্চম আবদুল বাছিত মোল্লা। সহকারী জজ নিয়োগ পরীক্ষায় মেধাতালিকায় ৯ম স্থান অর্জন করেন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকে সহকারী পরিচালক (সাধারণ) পদে চাকরির পরীক্ষায় ১৬তম হন। বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফিন্যান্স করপোরেশনে আইন কর্মকর্তা হিসেবে চাকরিরত অবস্থায় ২০২২ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের এডি পদের চাকরির ফলাফল প্রকাশিত হয়। আইন কর্মকর্তার চাকরি ছেড়ে তিনি এডি পদে যোগ দিয়েছিলেন।
এরপর ১৪তম বিজেএসে সহকারী জজ হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের এডির চাকরি ছেড়ে সেখানে যোগ দেন ২০২৩ সালের মার্চে। আবদুল বাছিত বর্তমানে জেলা ও দায়রা জজ আদালত, ভোলায় সহকারী জজ হিসেবে কর্মরত।
আবদুল বাছিত মোল্লার বাড়ি বরগুনায়। পটুয়াখালীর গলাচিপা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০১২ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ–৫.০০ পেয়ে এসএসসি পাস করেন। এইচএসসি পাস করেন বরগুনার আমতলী সরকারি কলেজ থেকে ২০১৪ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে। এরপর ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে।