প্রশ্নপত্র ফাঁসে নিয়োগ প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা: জনপ্রশাসনমন্ত্রী
জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (বিপিএসসি) থেকে ফাঁস হওয়া প্রশ্নে কোনো কোনো কর্মকর্তার নিয়োগ পাওয়ার বিষয়টি যদি প্রমাণিত হয়, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে আগে বিষয়টি প্রমাণিত হতে হবে, আদৌ এটি সঠিক কি না। আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসনমন্ত্রী এ কথা বলেন।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে পিএসসির সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলীসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ফাঁস করা প্রশ্নে নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ প্রসঙ্গে একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেছিলেন। জবাবে জনপ্রশাসনমন্ত্রী বলেন, পিএসসি কিন্তু সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। তারা তাদের নিজস্ব চিন্তাভাবনা থেকে কাজ করবে। যদিও সংসদে তাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রণালয় হচ্ছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। কিন্তু পিএসসি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, যেমন নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন। তারা ব্যবস্থা নেবে বলে এরই মধ্যে চেয়ারম্যান বলেছেন। বিষয়গুলো প্রমাণ হতে হবে এবং সেটির জন্য ব্যাপক প্রচেষ্টা চলছে। এটি (প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ও অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার) খুবই শক্তভাবে সরকার দেখছে। সিআইডি এ বিষয়ের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে।
ব্যবস্থা নেওয়ার প্রসঙ্গে আরেক প্রশ্নের জবাবে ফরহাদ হোসেন বলেন, অবশ্যই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চাকরিবিধি যেটি আছে, যদি সেটি কেউ ভঙ্গ করে, শঠতা বা প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে থাকে, অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই কিন্তু চাকরিতে আসতে হবে। পিএসসিরও কিছু নিয়মকানুন রয়েছে। সেখানেও কোনো ব্যত্যয় হয়েছে কি না, তার একটা ব্যাপার আছে। অপেক্ষা করতে হবে। গভীর মনোযোগের সঙ্গে বিষয়টি দেখা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জনপ্রশাসনমন্ত্রী আরও বলেন, আগে বিষয়টি প্রমাণিত হতে হবে, আদৌ এটি সঠিক কি না। প্রথম কথা হলো, এটি সঠিক কি না। যিনি এ কথা বলছেন, একজন চালক, তাঁকে দেখা গেল অন্য একটি দলের স্লোগান দিচ্ছেন। আসলে এখানে কী হয়েছে? যতক্ষণ পর্যন্ত না প্রমাণিত হবে যে সে সত্য বলছে নাকি মিথ্যা বলছে। বিষয়টি প্রমাণিত হতে হবে। তিনি (পিএসসির সাবেক গাড়িচালক) একটি দলের ষড়যন্ত্রের হাতিয়ার হিসেবে কাজ করছে কি না। অনেকগুলো বিষয় কিন্তু এখানে আছে। অনেক দিন আগে কিন্তু তিনি চাকরিচ্যুত হয়েছেন।
বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টিফোর গত রোববার পিএসসির অধীনে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে পিএসসির কর্মকর্তারা প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত বলে অভিযোগ করা হয়। তদন্তসংশ্লিষ্ট সিআইডি কর্মকর্তাদের ভাষ্যমতে, পিএসসির কোনো নিয়োগ পরীক্ষা এলেই এই চক্রের সদস্যরা প্রশ্নপত্র ফাঁস করে অর্থ নিতেন। ৫ জুলাই (শুক্রবার) অনুষ্ঠিত রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেন তাঁরা। চক্রের সদস্যরা ওই পরীক্ষার আগের রাতে তাঁদের চুক্তি করা শিক্ষার্থীদের অজ্ঞাতনামা স্থানে রেখে ওই প্রশ্নপত্র ও তাঁর উত্তর দিয়ে দেন।
এদিকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তার পিএসসির কয়েকজন কর্মকর্তা–কর্মচারীসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।