স্নাতকে ২.৭৯ সিজিপিএ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের এডির চাকরি পেলেন মামুন
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর পারিবারিক নানা সমস্যার কারণে ঠিকমতো পড়াশোনা করতে পারেননি মো. মামুন। এ কারণে প্রথম বর্ষের পরীক্ষায় কম সিজিপিএ পান তিনি। এক বছরের মধ্যে সিজিপিএ না বাড়াতে পারলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাড়পত্র পাওয়ারও শঙ্কা ছিল। শেষমেষ ২ দশমিক ৭৯ সিজিপিএ পেয়ে স্নাতক শেষ করেন। এরপর শুরু করেন চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি। পেয়েও যান দুটি। এর মধ্যে একটি বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক (এডি) পদের চাকরি।
গণিতের প্রশ্ন যেহেতু নবম ও দশম শ্রেণির সিলেবাস থেকে আসে, তাই জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) ওয়েবসাইট থেকে ইংরেজি ভার্সনের গণিত বই ডাউনলোড করে অনুশীলন করতে হবে। সাধারণ জ্ঞানের জন্য বিসিএসে আসা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সাধারণ জ্ঞান ও সাম্প্রতিক ইস্যুগুলো পড়তে হবে। এ জন্য পত্রিকাও পড়তে হবে।মো. মামুন
মো. মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আত্মবিশ্বাস ছিল সঠিকভাবে চাকরির প্রস্তুতি নিয়ে ভালো পরীক্ষা দিতে পারলে আমি চাকরি পাব। সিজিপিএ কোনো বিষয় নয়। যাঁরা বলেন সিজিপিএ-৩–এর নিচে থাকলে চাকরি পেতে সমস্যা হয়, তাঁদের কথা পাত্তা না দিয়ে আমি নিজের মতো করে পড়েছি। এ জন্য হয়তো চাকরি পাচ্ছি।’
লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে ২২৫ প্রার্থীকে সহকারী পরিচালক (সাধারণ) পদে নিয়োগের জন্য প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত করে গত মঙ্গলবার ফলাফল প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। মেধাতালিকায় ১৬৪তম হয়েছেন মো. মামুন।
মৌখিক পরীক্ষার বোর্ডে সিজিপিএ নিয়ে কিছু জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে মো. মামুন বলেন, ‘তেমন কিছু জানতে চায়নি। শুধু জিজ্ঞেস করেছিল সিজিপিএ কম কেন? আমি বলেছিলাম, পারিবারিক সমস্যার কারণে প্রথম বর্ষে ঠিকমতো পড়তে পারিনি, তাই প্রথম বর্ষে সিজিপিএ কম আসে। প্রথম বর্ষে সিজিপিএ অনেক কম থাকায় আর বেশি বাড়াতে পারিনি। আর কিছু জিজ্ঞাসা করেনি।’
নতুন যাঁরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক পদে চাকরির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তাঁদের ভালো প্রস্তুতির জন্য নিয়মিত ইংরেজি পত্রিকা পড়ার পরামর্শ দেন মো. মামুন। তিনি বলেন, প্রতিদিন দৈনিক পত্রিকার বাণিজ্য পাতা, সম্পাদকীয় ও প্রথম পাতা ভালো করে পড়তে হবে। প্রয়োজনে নোট করে রাখতে হবে। পাশাপাশি একটি বাংলা পত্রিকাও নিয়মিত পড়তে হবে।
ভাইভা বোর্ডে সিজিপিএর বিষয় ছাড়াও দু–তিনটি প্রশ্ন করা হয়েছিল মো. মামুনকে। সব কটির উত্তর দিতে পেরেছিলেন তিনি। এ ছাড়া লিখিত পরীক্ষাও অনেক ভালো দিয়েছিলেন বলে জানান মামুন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০২০ সালে ডিভিএম (ডক্টর অব ভেটেরিনারি মেডিসিন) বিষয়ে স্নাতক পাস করেন মো. মামুন। স্নাতকের চতুর্থ বর্ষ থেকে চাকরির প্রস্তুতি শুরু করেন তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক পদে এটাই প্রথম পরীক্ষা মামুনের। মো. মামুন বলেন, ‘একাডেমিক পরীক্ষায় তেমন ভালো করতে না পারলেও যখন চাকরির জন্য পড়া শুরু করলাম, তখন নতুন নতুন বিষয় জানতে পারলাম। এসব বিষয় আমার পড়তে ভালো লাগত। বিশেষ করে সাধারণ জ্ঞান, ইংরেজি ও সাম্প্রতিক বিষয়গুলো। আর টিউশনি করার কারণে আগে থেকে গণিতে দক্ষতা ছিল।’
সহকারী পরিচালক পদে প্রস্তুতি প্রসঙ্গে মো. মামুন বলেন, ‘এ চাকরির জন্য নিয়মিত বাংলা ও ইংরেজি পত্রিকা পড়তাম। নিয়মিত পত্রিকা পড়ার অভ্যাস আমাকে পরীক্ষায় খুবই সাহায্য করেছে। বিশেষ করে ডেইলি স্টার ও প্রথম আলোর বিজনেস নিউজগুলো আমার প্রস্তুতিতে খুব সহায়ক ছিল। ডেইলি স্টারের বিজনেস নিউজগুলো ইংরেজিতে পড়ার কারণে এডি পদের ফোকাস রাইটিংয়ে ভালো দক্ষতা এসেছিল।’
নতুন যাঁরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক পদে চাকরির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তাঁদের ভালো প্রস্তুতির জন্য নিয়মিত ইংরেজি পত্রিকা পড়ার পরামর্শ দেন মো. মামুন। তিনি বলেন, প্রতিদিন দৈনিক পত্রিকার বাণিজ্য পাতা, সম্পাদকীয় ও প্রথম পাতা ভালো করে পড়তে হবে। প্রয়োজনে নোট করে রাখতে হবে। পাশাপাশি একটি বাংলা পত্রিকাও নিয়মিত পড়তে হবে।
মো. মামুন বলেন, গণিতের প্রশ্ন যেহেতু নবম ও দশম শ্রেণির সিলেবাস থেকে আসে, তাই জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) ওয়েবসাইট থেকে ইংরেজি ভার্সনের গণিত বই ডাউনলোড করে ইংরেজিতে অনুশীলন করতে হবে। সাধারণ জ্ঞানের জন্য বিসিএসে আসা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সাধারণ জ্ঞান ও সাম্প্রতিক ইস্যুগুলো পড়তে হবে। আরগুমেন্ট লেখার জন্য ইংরেজিতে ফ্রি হ্যান্ড রাইটিং ভালো থাকা জরুরি। এ জন্য পত্রিকাও পড়তে হবে।