প্রাথমিক ও ব্যাংকের চাকরির পরীক্ষা একই দিনে, বিপাকে হাজারো পরীক্ষার্থী

প্রতীকী ছবি: প্রথম আলো

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদের প্রথম পর্বের লিখিত পরীক্ষা ও ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি সচিবালয়ের সদস্যভুক্ত ১০টি ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র অফিসার (সাধারণ) পদের লিখিত পরীক্ষা একই দিনে পড়েছে। আগামী ৮ ডিসেম্বর বড় দুটি চাকরির পরীক্ষার সূচি একই দিনে একই সময়ে হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন হাজারো চাকরিপ্রার্থী।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদের প্রথম পর্বের (রংপুর, বরিশাল ও সিলেট বিভাগ) নিয়োগ পরীক্ষা ৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। ২১ নভেম্বর সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনে সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সভায় জানানো হয়, ৮ ডিসেম্বর প্রথম পর্বে রংপুর, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের ১৮টি জেলার ৫৩৫টি কেন্দ্রে সকাল ১০টা থেকে ১ ঘণ্টার এই লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এ পর্বের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩ লাখ ৬০ হাজার ৬৯৭।

প্রাথমিক পরীক্ষার তারিখ ঘোষণার পর গত মঙ্গলবার ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি সমন্বিত ১০টি ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র অফিসার (সাধারণ) পদের লিখিত পরীক্ষার জন্য ৮ ডিসেম্বর তারিখ ঘোষণা করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়োগসংক্রান্ত ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ১০টি ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র অফিসার (সাধারণ)–এর ৯২২টি শূন্য পদে লিখিত পরীক্ষা ৮ ডিসেম্বর (শুক্রবার) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ৬টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে। এতে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১০ হাজার ৫৭৪।

আরও পড়ুন

প্রাথমিকের ৩ লাখ ৬০ হাজার ৬৯৭ জন প্রার্থীর মধ্যে অনেকের ব্যাংকের পরীক্ষা একই দিনে পড়েছে। একই সময়ে পরীক্ষা হওয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন তাঁরা। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রার্থীরা।

আরাফাত হোসেন নামের একজন চাকরিপ্রার্থী বলেন, ‘কোনো প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয় নেই। চাকরির পরীক্ষা নিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলো চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে প্রহসন করে। এই হরতাল-অবরোধে ঢাকায় গিয়ে পরীক্ষা দেওয়াটাই যেখানে কঠিন, সেখানে একই দিনে দুটি গুরুত্বপূর্ণ চাকরির পরীক্ষা কীভাবে হয়। ব্যাংক ও প্রাথমিকের চাকরিতে প্রায় সব চাকরিপ্রার্থীই আবেদন করেন। তাহলে জেনেশুনে আমাদের সঙ্গে অন্যায় করা হচ্ছে।’

মাছুম আহমেদ নামের আরেকজন চাকরিপ্রার্থী বলেন, ‘প্রাথমিকের প্রথম পর্বের লিখিত পরীক্ষার তারিখ আগে থেকেই ৮ ডিসেম্বর নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও হঠাৎই গত মঙ্গলবার সমন্বিত ১০টি ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র অফিসার (সাধারণ) পদের লিখিত পরীক্ষার জন্য ৮ ডিসেম্বর সূচি প্রকাশ করা হয়। এই সূচি পরিবর্তনের দাবি জানাচ্ছি। কারণ, আমাদের অনেকের চাকরির বয়স এ বছর বা কয়েক দিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে।’

আরও পড়ুন

ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি সচিবালয়ের (বিএসসিএস) পরিচালক মো. সাঈদুর রহমান খান প্রথম আলোকে বলেন, সিনিয়র অফিসার পদের লিখিত পরীক্ষার জন্য ইতিমধ্যে কেন্দ্র ঠিক করা হয়েছে এবং আসনবিন্যাসও প্রকাশ করা হয়েছে। তাই এ পরীক্ষা আর পেছানোর সুযোগ নেই।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদের প্রথম পর্বের পরীক্ষা ইতিমধ্যে দুবার পেছানো হয়েছে। ৮ ডিসেম্বর পরীক্ষার জন্য আমাদের সব প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। আমাদের পক্ষে এ পরীক্ষা পেছানো সম্ভব নয়।’

এই সূচি পরিবর্তনের দাবি জানাচ্ছি। কারণ, আমাদের অনেকের চাকরির বয়স এ বছর বা কয়েক দিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে।
মাছুম আহমেদ, চাকরিপ্রার্থী

সিনিয়র অফিসার পদের পরীক্ষার তারিখ পুনর্নির্ধারণের জন্য ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি সচিবালয়ের পরিচালক ও সচিব বরাবর আজ বৃহস্পতিবার আবেদন করেছেন সহকারী শিক্ষক ও সিনিয়র অফিসার পদের পরীক্ষার্থীরা। আবেদনপত্রে বলা হয়েছে, ‘আমরা সমন্বিত ১০টি ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার ও প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক পদের পরীক্ষার্থী। দুটি চাকরিই আমাদের কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু দুটির পরীক্ষা একই দিনে নির্ধারিত হওয়ায় আমরা বিপাকে পড়েছি। আমাদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে সিনিয়র অফিসার পদের লিখিত পরীক্ষার তারিখ পুনর্বিবেচনার জন্য অনুরোধ করছি।’