প্রতিবন্ধীরা অন্যদের চেয়ে বেশি দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কর্মক্ষেত্রে সেবা দিচ্ছে: প্রতিমন্ত্রী পলক
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক বলেছেন, ‘সুস্থ ও স্বাভাবিক তরুণ-তরুণীদের চেয়ে প্রতিবন্ধীরা বেশি মনোযোগ দিয়ে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কর্মক্ষেত্রে সেবা দিচ্ছে। প্রতিবন্ধীরা অন্যদের চেয়ে বেশি পরিশ্রমী। প্রতিবন্ধীরা আমাদের ভাইবোন। তাদের সুযোগ দিতে হবে। প্রতিবন্ধীরা তাদের শ্রম, মেধা ও দায়িত্বশীলতা দিয়ে অন্যদের চেয়ে বেশি এগিয়ে থাকবে।’
আজ শনিবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনজিও-বিষয়ক ব্যুরোর অফিস ভবনে বিশেষভাবে সক্ষম বা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য চাকরি মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক বলেন, ‘শারীরিক প্রতিবন্ধকতা, বিশেষভাবে সক্ষমদের মধ্যে বৈষম্য দূর করতে প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে হবে। শারীরিক বা মানসিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা যেন অন্যের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে প্রযুক্তির ব্যবহার করে আত্মনির্ভরশীল হতে পারে, সেই লক্ষ্যে আমাদের কাজ করতে হবে। আমাদের দেশের কোনো প্রতিবন্ধী ছেলে-মেয়ে ঘরে বসে থাকবে না। তারা পরিবার বা দেশের বোঝা হবে না। প্রতিবন্ধীদের একটু সহযোগিতা ও সুযোগ দিলে তারা দেশের সম্পদ হয়ে বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার নেতৃত্ব দেবে।’
প্রতিবন্ধীদের জন্য শুধু চাকরি মেলা নয়, উদ্যোক্তা মেলারও আয়োজন করা হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রতিবন্ধীরা উদ্যোক্তা হয়ে আরও হাজার হাজার তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবেন। একজন প্রতিবন্ধী তরুণ বা তরুণী চাকরি যদি করেন, তাহলে তাঁর একটা পরিবারের চাওয়া পূরণ করতে পারলেন, কিন্তু যদি একজন উদ্যোক্তা হন, তাহলে তিনি ২০ জন তরুণ-তরুণীর জন্য চাকরির ব্যবস্থা করতে পারবেন।
বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক রণজিৎ কুমারের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের সচিব জনাব মো. সামসুল আরেফিন, এনজিও-বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. সাইদুর রহমান এবং সিএসআইডির নির্বাহী পরিচালক খন্দকার জহুরুল আলম, বিসিসির প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক মো. গোলাম সারওয়ার।
কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষতাসম্পন্ন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের নেতৃত্বে এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের উদ্যোগে এ মেলার আয়োজন করা হয়।
দিনব্যাপী এ চাকরি মেলায় ৪৮টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) ও বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) সদস্যভুক্ত প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান, ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কন্টাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো), ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি), বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ), বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) ও ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)।
বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) থেকে বলা হয়েছে, ২০১১ সাল থেকে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য বিনা মূল্যে আইসিটি প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালু করে বিসিসি। এরই ধারাবাহিকতায় প্রশিক্ষণ নেওয়া প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কর্মসংস্থানের জন্য চাকরিপ্রার্থী ও চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে ২০১৫ সাল থেকে চাকরি মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত চাকরি মেলার মাধ্যমে আইসিটিতে প্রায় ১ হাজার ৬০০ জন দক্ষ প্রতিবন্ধী ব্যক্তির কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কম্পিউটারে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও দক্ষ চাকরিপ্রত্যাশীরা এ মেলায় অংশগ্রহণ করেছেন।