২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

স্যামসাং নির্বাহীদের ৬ দিনের অফিস কেন বাধ্যতামূলক করেছে

গত বছর স্যামসাং এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে দুর্বল আর্থিক বছর পার করেছে
ফাইল ছবি: রয়টার্স

সারা বিশ্বের প্রতিষ্ঠানগুলো যখন অফিসে চার দিনের কর্মসপ্তাহ চালু করছে, তখন ঠিক এর উল্টো পথে হাঁটছে স্যামসাং। ৩৭৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের টেক জায়ান্ট স্যামসাং তার সব নির্বাহীদের ছয় দিনের কর্মসপ্তাহ বাধ্যতামূলক করেছে। গত এক দশকের মধ্যে ২০২৩ সাল আর্থিকভাবে সবচেয়ে খারাপ বছর হওয়ায় নির্বাহীদের মধ্যে ‘সংকটের অনুভূতি দেওয়ার জন্য’ কোম্পানিটি এই ঘোষণা দিয়েছে।

কোরিয়া ইকোনমিক ডেইলির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ার এই কোম্পানি নির্বাহীদের সপ্তাহের শনিবার বা রোববার ওভারটাইম করার বিকল্প দেবে। চলতি সপ্তাহ থেকেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।

স্যামসাংয়ের একজন গ্রুপ এক্সিকিউটিভ বলেছেন, ‘স্যামসাং ইলেকট্রনিকস কোম্পানিসহ আমাদের প্রধান ইউনিটগুলোর পারফরম্যান্স ২০২৩ সালে প্রত্যাশার চেয়ে অনেক কম ছিল। এসব বিষয় বিবেচনা করে আমরা এক্সিকিউটিভদের জন্য ছয় দিনের কর্মসপ্তাহ চালু করছি। এতে তাঁরাও সংকটটা অনুভব করতে পারবেন। এভাবেই এই সংকট কাটিয়ে উঠতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হবে।’

আরও পড়ুন

জানা গেছে, উচ্চঋণের ব্যয়, চলমান ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং ক্রমবর্ধমান তেলের দামের মতো অন্যান্য অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার সঙ্গে নিম্ন কর্মক্ষমতা এই কোম্পানিকে ‘জরুরি মোডে’ ঠেলে দিয়েছে।

গত বছর স্যামসাং এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে দুর্বল আর্থিক বছর পার করেছে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই বছর শেষ প্রান্তিকে কোম্পানিটির নেট মুনাফা ৭৩ শতাংশ কমে গেছে।

এদিকে স্যামসাংয়ের আয়ের প্রায় ৮০ শতাংশই আসে সেমিকন্ডাক্টর ব্যবসা থেকে। গত বছর এই ব্যবসায় প্রায় ১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতির রেকর্ড হয়েছে। এ কারণে চলতি বছরের শুরু থেকে কিছু নির্বাহী কর্মকর্তা স্বেচ্ছায় সপ্তাহে ছয় দিন কাজ করছেন।

তবে এখন থেকে স্যামসাং ডিসপ্লে, স্যামসাং ইলেকট্রোমেকানিকস কোম্পানি ও স্যামসাং এসডিএসর সব নির্বাহীদের বাধ্যতামূলকভাবে সপ্তাহে অতিরিক্ত এক দিন কাজ করতে হবে। এতে ব্যবসার আর্থিক ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন

বিশ্বের বড় বড় সব প্রতিষ্ঠান সপ্তাহে চার দিনের কর্মসপ্তাহ চালু করছে। ইতিমধ্যে আইসল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, জাপানের মতো ব্রিটেনও চার দিনের কর্ম সপ্তাহ নিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ট্রায়াল গত বছর শেষ করেছে। এতে দেখা গেছে, কর্মীদের অসুস্থতাজনিত ছুটি নেওয়ার হার ৬৫ শতাংশ কমে গেছে ও উৎপাদনশীলতা বেড়েছে। কর্মীদের চাকরি ছেড়ে দেওয়ার হারও ৫৭ শতাংশ কমে গেছে। চার দিনের কর্মসপ্তাহ চালুর ফলাফলে দেখা গেছে, কোনো কোনো কোম্পানির আয় ২০২১ সালের একই ছয় মাসের সময়ের তুলনায় প্রায় ৩৫ শতাংশ বেড়ে গেছে।

চলতি মাসের শুরুর দিকে তুরস্কের এক্রিলিক ফাইবার উৎপাদনকারী বড় একটি প্রতিষ্ঠান প্রথমবারের মতো চারদিনের কর্মসপ্তাহ স্থায়ী করে নিয়েছে। তাদের প্রত্যাশা, এতে কর্মজীবনের ভারসাম্য ও কর্মীদের বাজের প্রতি মনোনিবেশ ৮৫ শতাংশ বেড়ে যাবে।

আরও পড়ুন

এ ছাড়া চলতি সপ্তাহেই সিঙ্গাপুর নিয়োগকর্তাদের তিন দিনের সাপ্তাহিক ছুটির জন্য কর্মীদের অনুরোধ বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছে। তবে দক্ষিণ কোরিয়া সরকার এখনো কর্মসপ্তাহ বড় করার জন্য চাপ দিচ্ছে।

আরও পড়ুন