৪৩তম বিসিএস

প্রশাসনে প্রথম টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের শানিরুল

৪৩তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে প্রথম হয়েছেন বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের শানিরুল ইসলাম শাওন। এটা ছিল তাঁর দ্বিতীয় বিসিএস। এর আগে ৪১তম বিসিএসে প্রথমবারে পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ পেয়েছেন। তাঁর সফলতার গল্প শুনেছেন আব্দুর রাজ্জাক সরকার

চাকরি-বাকরি প্রতিবেদক:

চাকরি-বাকরি: প্রশাসন ক্যাডারে প্রথম হওয়ায় অভিনন্দন আপনাকে। কখন থেকে বিসিএসের প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেন? 

শানিরুল ইসলাম: ধন্যবাদ। স্নাতক পাসের পরপরই ২০১৯ সালে বিসিএসের প্রস্তুতি শুরু করি। তখন ঢাকায় ছিলাম; এর কিছুদিন পরই মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে গ্রামের বাড়ি হবিগঞ্জে চলে যাই। এরপর বাসায় নিজে নিজেই সব বিষয়ের প্রস্তুতি নিতে থাকি।

চাকরি-বাকরি প্রতিবেদক:

বিসিএসের জন্য কীভাবে প্রস্তুতি নিয়েছেন? কোনো বিশেষ কৌশল ছিল কি? 

শানিরুল ইসলাম: বাজারে প্রচলিত বইগুলো থেকে নিজের পছন্দ অনুযায়ী বই কিনে প্রস্তুতি নিয়েছি। এক বই বারবার পড়ার কৌশল খুব কাজে দিয়েছে। এতে অনেক বিষয় সম্পর্কে নিজের মধ্যে পরিষ্কার ধারণা গড়ে ওঠে। এ ছাড়া আগের বিসিএসগুলোর প্রশ্ন ও অন্যান্য চাকরির প্রশ্ন জব সল্যুশন থেকে একাধিকবার পড়েছি। নিয়মিত ভোকাবুলারি অনুশীলন করেছি। কারণ, এগুলো সহজে মনে থাকতে চায় না।

আরও পড়ুন
চাকরি-বাকরি প্রতিবেদক:

বিসিএসে আসার পেছনে কোনো নির্দিষ্ট কারণ আছে কি? 

শানিরুল ইসলাম: বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের চাকরি আমার পছন্দের। পরিবারের অনুপ্রেরণায় স্নাতক পাসের পর বিসিএসকে আমার ধ্যানজ্ঞান বানিয়ে চাকরির যুদ্ধে নেমে পড়ি। এ ছাড়া প্রতিটি বিসিএসের বিজ্ঞপ্তিতে লেখা থাকে, ‘যথাযথ প্রস্তুতি ও নির্দেশনার আলোকে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করুন এবং নির্বাচিত হয়ে দেশসেবার পবিত্র দায়িত্ব পালনের সুযোগ লাভ করুন।’ দেশসেবার পবিত্র সুযোগ লাভের কথাটি আমাকে বিসিএসের প্রতি বেশি অনুপ্রাণিত করে।

চাকরি-বাকরি প্রতিবেদক:

৪৩তম বিসিএসে আপনার ক্যাডার পছন্দক্রম (ক্যাডার চয়েস লিস্ট) কেমন ছিল? 

শানিরুল ইসলাম: ৪৩তম বিসিএসে আমার প্রথম পছন্দ ছিল প্রশাসন ক্যাডার। দ্বিতীয় পুলিশ ক্যাডার এবং তৃতীয় ছিল শুল্ক ও আবগারি ক্যাডার। 

চাকরি-বাকরি প্রতিবেদক:

স্নাতকে কোথায় পড়েছেন? ফল কেমন ছিল?

শানিরুল ইসলাম: হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও বৃন্দাবন সরকারি কলেজ, হবিগঞ্জ থেকে এইচএসসি পাস করি। উভয় পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ–৫ পেয়েছি। এরপর বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় (বুটেক্স) থেকে অ্যাপারেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে ৩.৭৯ পেয়ে স্নাতক পাস করি। 

চাকরি-বাকরি প্রতিবেদক:

বিসিএসের প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা—এ তিন ধাপের মধ্যে কোনটি বেশি কঠিন মনে হয়?

শানিরুল ইসলাম: এ তিন ধাপের মধ্যে লিখিত ধাপ আমার কাছে বেশি কঠিন মনে হয়। কারণ, টানা ৬ থেকে ৮ দিনে ৯০০ থেকে ১১০০ নম্বরের পরীক্ষা দেওয়ার জন্য নিজের মেধা দরকার; আর মানসিক শক্তির পাশাপাশি শারীরিকভাবে সুস্থ থাকাও জরুরি। মূলত লিখিত পরীক্ষার নম্বর পছন্দের ক্যাডার পেতে বেশি সাহায্য করে।

চাকরি-বাকরি প্রতিবেদক:

নতুন যাঁরা বিসিএসের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তাঁদের জন্য কোনো পরামর্শ আছে কি? 

শানিরুল ইসলাম: বিসিএসের বিশাল সিলেবাস দেখে ঘাবড়ে যাওয়া যাবে না। ছোট ছোট ধাপে প্রস্তুতি শুরু করুন; প্রাথমিক সাফল্যগুলো নিজের আত্মবিশ্বাস কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেবে। মন দিয়ে চেষ্টা করুন, পরীক্ষার হলে সবকিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী না হলে ঘাবড়ে যাওয়া যাবে না। নিজের প্রতি বিশ্বাস রেখে এগিয়ে যেতে হবে।